■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলম মাসুদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ১২৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইব্রাহীম মিয়া বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের এ আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক মো. আবু সাঈদ। আবেদনে বলা হয়, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুর, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, সাইপ্রাস ও অন্যান্য দেশে ১ বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানকালে তার ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসির বিভিন্ন শাখার ১২৫টি হিসাবে জমা করা ২২ কোটি ৬৫ লাখ ৪৯ হাজার ১৯১ টাকা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ১৪ ধারা অনুযায়ী অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন। এসব হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ থাকার বিষয়টি অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক।
আবেদনে আরও বলা হয়, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম মাসুদ ও তার পরিবারের সদস্যদের অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ গোপনের উদ্দেশ্যে ব্যাংক হিসাবসমূহে জমা রেখেছেন। যেকোনো সময় এ অর্থ উত্তোলন করে বিদেশে পাচার বা গোপন করার সম্ভাবনা রয়েছে।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মীর আহমেদ আলী সালাম জানিয়েছেন, আদালত যে আদেশ দিয়েছেন তা এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে চলমান অর্থ পাচার অনুসন্ধান প্রসঙ্গে এসেছে। দুদকের পক্ষ থেকে আদালতে বলা হয়েছে, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যরা সিঙ্গাপুর, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, সাইপ্রাস এবং অন্যান্য দেশগুলোতে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন।
এই অভিযোগের তদন্তের জন্য দুদক একটি অনুসন্ধান চালাচ্ছে, যার মধ্যে সাইফুল আলম এবং তার পরিবারের সদস্যদের নামে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ১২৫টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মোট ২২ কোটি ৬৫ লাখ ৪৯ হাজার ১৯১ টাকা পাওয়া গেছে।
এছাড়া, গত ৭ অক্টোবর আদালত এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলম মাসুদ ও তার পরিবারের ১৩ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন। আদেশের আওতায় আছেন সাইফুল আলমের স্ত্রী ফারজানা পারভীন, ছেলে আহসানুল আলম ও আশরাফুল আলম, ভাই মোহাম্মদ আবদুল্লাহ হাসান, ভাই ওসমান গনি, ওসমানের স্ত্রী ফারজানা বেগম, ভাই আবদুস সামাদ, সামাদের স্ত্রী শাহানা ফেরদৌস, ভাই রাশেদুল আলম, ভাই সহিদুল আলম, ভাই মোরশেদুল আলম এবং এস আলমের পূর্বপরিচিত মিসকাত আহমেদ।
এই নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পর, দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য তাদের পাসপোর্টও জমা রাখতে বলা হয়েছিল।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, তদন্ত চলাকালে বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচারের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত আরও তথ্য পাওয়া গেছে। এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা হলো— তারা জাল দলিল ও কাগজপত্র ব্যবহার করে ঋণ গ্রহণ এবং তার মাধ্যমে অবৈধ অর্থপাচার করেছেন।
দুদক এই অনুসন্ধানের মাধ্যমে শিগগিরই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে এবং যেসব ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে, তাদের বিস্তারিত তদন্ত চালানো হবে।