:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
সরকারি চাকরিতে অনুমোদিত পদ ১৯ লাখ ১৫১টি। এর মধ্যে শূন্য পদ রয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার ৪৪৭টি। জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৮ মে) সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত ‘বিএসআরএফ সংলাপে’ অংশ নিয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
পদোন্নতির ক্ষেত্রে নীতিমালা মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ আসছে। এ বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যথাযথ নীতিমালা অনুসরণ করেই পদোন্নতি ও পদায়ন করা হয়। আমাদের এখানে একটা শৃঙ্খলা চলে এসেছে।
তিনি বলেন, যখন আমরা পদোন্নতি দিই একটা প্রশ্ন আসে পদের চেয়ে পদোন্নতির সংখ্যা বেশি। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন আমাদের অনেক কিছু খেয়াল করতে হয়। আমাদের খেয়াল রাখতে হয় বেশ কিছু কর্মকর্তা বিদেশে অধ্যয়নরত থাকেন। সরকারের বিভিন্ন স্কলারশিপ রয়েছে সেই স্কলারশিপের অধীনে। বিদেশে বিভিন্ন দূতাবাসে কর্মরতদের বিষয় তো রয়েছেই। তারপর একটি বিষয় রয়েছে কিছু সংখ্যক মানুষ থাকেন, যারা অসুস্থ থাকেন। সেটি বাদেই আমাদের কিন্তু হিসাব করতে হয়।
ফরহাদ হোসেন বলেন, আমরা বিভিন্ন পদে যখন পদোন্নতি দিচ্ছি তখন যে পদ আছে সেই পদের চেয়ে বেশি দিতে হয় যৌক্তিক কারণে। কিছুদিনের মধ্যেই বা ছয় মাসের মধ্যেই বেশ কিছু কর্মকর্তা পিআরএলে চলে যাচ্ছেন। তারপর বেশকিছু আমাদের রিজার্ভে রাখতে হয়। কারণ হচ্ছে যদি কেউ অসুস্থ হয়ে যায়, এই জায়গাটি পূরণ করা।
জনপ্রশাসনমন্ত্রী জানান, গত ৫ বছরে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ২৩৭ জনকে সরকার চাকরি দিয়েছে। বর্তমানে ১৯ লাখ ১৫১ জন ১৩ লাখ ৯৬ হাজার মানুষ সরকারি চাকরিতে কর্মরত আছে। আর শূন্যপদ আছে ৩ লাখ ৭০ হাজার ৪৪৭টি।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষার মাধ্যমে ৪২ হাজার ৯ শত ৩১ জন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ননক্যাডার পদে নিয়োগে দেওয়া হয়েছে ৬৯ হাজার ২৩৯ জনকে।
মন্ত্রী বলেন, বিসিএসে ১০ শতাংশ নারী কোটা বাতিলের পরেও নারীদের নিয়োগ পাওয়ার হার কমেনি। প্রতিটি বিসিএসে গড়ে ২৫ থেকে ২৯ শতাংশ পর্যন্ত নারী কর্মকর্তা রয়েছেন। তাই নারীরা সরকারি চাকরিতে কম নিয়োগ পাচ্ছে গণমাধ্যমের এমন খবর সঠিক নয়। ৫৮ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ১১ জন নারী সচিব, জেলা প্রশাসক সাতজন, ইউএনও ১৪১ জন এবং এসিল্যান্ড হিসেবে ১৮১ জন নারী কর্মরত আছেন। ৩৫তম বিসিএসে নারীর সংখ্যা ২৭ দশমিক ৯৫, ৪০তম বিসিএসে ২৬ দশমিক ০৩, ৪১তম বিসিএসে ২৬ দশমিক ৭১ জন নারী সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছে। এ ছাড়া ২৯ শতাংশ নারী সব ধরনের সরকারি চাকরিতে রয়েছে।
ফরহাদ হোসেন বলেন, মেধাবী কাজের প্রতি আগ্রহী এবং কোয়ালিটি সম্পন্ন কর্মকর্তাদেরই পদোন্নতি দেওয়া হয়। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় খুবই সতর্ক। এ ছাড়া জেমস সফটওয়্যার অনুযায়ী তাদের কাজের মূল্যায়ন করা হয়।
মন্ত্রী আরও বলেন, গত ৫ বছরে ১৭৮ জন কর্মকর্তার বিভিন্ন অনিয়মের (গ্রেড ১ থেকে গ্রেড ৯ পর্যন্ত) জন্য তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে তদন্ত করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে তাদের দোষ প্রমাণ সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এমনকি ২২ জনকে গুরুদণ্ড, ৬৯ জনকে লঘুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর অব্যাহতি পেয়েছে ৭৭ জন।
সংলাপে সভাপতিত্ব করেন বিএসআরএফ’র সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাব। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএসআরএফ’র সহ সভাপতি এম এ জলিল মুন্না (মুন্না রায়হান), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহদী আজাদ মাসুম, সাংগঠনিক সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক শফিউল্লাহ সুমন, দপ্তর সম্পাদক শাহাদাত হোসেন (রাকিব), প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক ফারুক আলম, কার্যনির্বাহী সদস্য আসাদ আল মাহমুদ, ওবায়দুল্লাহ বাদল, মিজানুর রহমান চৌধুরী, মহসীনুল করিম লেবু, আয়নাল হোসেন প্রমুখ।