■ নাগরিক প্রতিবেদক ■
৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগে ৩ হাজার ৪৬০ ক্যাডার নিয়োগ দিতে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনকে (পিএসসি) নির্দেশনা দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
পিএসসির জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এম মতিউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকালে পিএসসি থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে পিএসসি জানায়, ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাডারে প্রবেশের পদে নিয়োগের জন্য ক্যাডার নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয় বা বিভাগগুলোর চাহিদা মোতাবেক তিন হাজর ৪৬০ শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনকে আজ বুধবার চিঠি দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
৪৭তম বিসিএসের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আগামী নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রকাশ করা হতে পারে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে পিএসসি। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এ বিসিএসে কত শূন্যপদে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে, তা জানতে চেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিল পিএসসি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পিএসসির সেই চিঠির জবাবে বুধবার চাহিদাপত্র পাঠিয়েছে। এতে ৪৭তম বিসিএসে মোট তিন হাজার ৪৬০টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।
এবারের শূন্যপদের সংখ্যাটি বিগত ১০টি বিসিএসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ৪৬তম বিসিএসে তিন হাজার ১০০টি পদে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল পিএসসি, যা বিগত ১০ বিসিএসের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল। সেই রেকর্ডও এবার ছাড়িয়ে গেলো।
পিএসসির তথ্য বলছে, সবশেষ ৪৬তম বিসিএসে শূন্যপদ ছিল ৩ হাজার ১০০টি। তার আগে ৪৫তম বিসিএসে ২ হাজার ৩০৯টি, ৪৪তম বিসিএসে ১ হাজার ৭১০টি, ৪৩তম বিসিএসে ১ হাজার ৮১৪, ৪১তম বিসিএসে ২ হাজার ৫২০, ৪০তম বিসিএসে ১ হাজার ৯২৯, ৩৮তম বিসিএসে ২ হাজার ২৪, ৩৭তম বিসিএসে ১ হাজার ২২৬, ৩৬তম বিসিএসে ২ হাজার ১৮০টি, ৩৫তম বিসিএসে ১ হাজার ৮০৩টি এবং ৩৪তম বিসিএসে শূন্যপদ ছিল ২ হাজার ১৫৯টি।
তবে ৩৯তম বিশেষ বিসিএসে প্রায় ৫ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ করা হয়েছিল। তবে সাধারণ বিসিএসের সঙ্গে সেটিকে তুলনা করা হয় না।
সর্বশেষ ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয়েছিল এ বছরের এপ্রিলে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে। তাতে ১০ হাজার ৬৩৮ জনকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হলেও লিখিত পরীক্ষা আর হয়নি।
পিএসসির বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর ৪৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি বাতিলের দাবি জানান অনেকে।
একটি চক্র প্রায় এক যুগ ধরে পিএসসির অধীনে বিসিএসসহ বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত বলে গত জুলাইয়ে একটি প্রতিবেদন প্রচারিত হয় একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে। সেখান ওই চক্রের ছয়জনের ছবিও প্রকাশ করা হয়।
এদের মধ্যে পিএসসি চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবন ও তার পরিবারের বিলাসবহুল জীবনযাপনের বিভিন্ন ছবি ফেসবুকে ঘুরতে থাকে।
পরে আবেদ আলীসহ পিএসসির সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মীসহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে পল্টন থানায় একটি মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়। প্রশ্নফাঁসের অভিযোগের পর পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে মো. সোহরাব হোসাইনসহ কমিশন।
তবে গত জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ পদে পরিবর্তনের মধ্যে পিএসসির চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইনসহ কমিশনের সদস্যরা গত ৮ অক্টোবর পদত্যাগ করেন। এর পরদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম পিএসসির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান। সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান চারজন।