:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
দেশের ৩৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ তরুণ শিক্ষা, কর্মে কিংবা প্রশিক্ষণে নেই বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। রোববার (২৪ মার্চ) আগারগাঁওয়ে বিবিএস অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিক্স ২০২৩-এর প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এই তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদন বলছে, দেশের মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু কমেছে। বেড়েছে মৃত্যু হার। ২০২৩ সালে প্রত্যাশিত গড় আয়ু দাঁড়িয়েছে ৭২ বছর ৩ মাস, যা আগের বছর ছিল ৭২ বছর ৪ মাস।
‘বাংলাদেশে স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিক্স ২০২৩’ শিরোনামের এ প্রতিবেদনের গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল আজ রোববার প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক মো. আলমগীর হোসেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থূল মৃত্যু হার বেড়েছে দেশে। প্রতি একহাজার জনে এ হার এখন ৬ দশমিক ১ জন, যা আগের বছর ছিল ৫ দশমিক ৮ জন। আগামী জুনে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।
প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, ২০২৩ সালে প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল অপরিবর্তিত রয়েছে। আগের বছর এ হার ছিল ৭২.৩ বছর, এবারও ৭২.৩ বছর আছে। জনসংখ্যার স্বাভাবিক বৃদ্ধির হার ১.৩৩ শতাংশ, যা ২০২২ সালে ছিল ১.৪০ শতাংশ। দেশে নির্ভরশীলতার অনুপাত ৫৩.৭ শতাংশ। পুরুষদের প্রথম বিবাহের গড় বয়স ২৪.২ বছর এবং নারীদের ১৮.৪ বছর। প্রতি হাজার জনসংখ্যায় অভ্যন্তরীণ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে পল্লিতে আগমনের হার ২০.৪ এবং শহরে আগমনের হার ৪৩.৪। আন্তর্জাতিক অভিগমন প্রতি হাজারে ৬.৬১ জন থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৮.৭৮ জন। আগমন/বহিরাগমন প্রতি হাজারে ২.৯৭ থেকে কমে হয়েছে ২.৩৭ জন।
বর্তমানে দেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে এক হাজার ১৭১ জন জনসংখ্যা বসবাস করে। প্রতি হাজার জনসংখ্যায় স্থূল জন্মহার ১৯.৪ শতাংশ, যা ২০২২ সালে ছিল ১৯.৮ শতাংশ। স্বাভাবিক পদ্ধতিতে সন্তান প্রসবের হার ২০২২ সালে ৫৮.৬ শতাংশ থেকে কমে ২০২৩ সালে হয়েছে ৪৯.৩ শতাংশ এবং অস্ত্রোপচার পদ্ধতিতে প্রসবের হার ২০২২ সালে ৪১.৪ শতাংশ থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩ সালে হয়েছে ৫০.৭ শতাংশ।
প্রতি হাজার জনসংখ্যায় স্থূল মৃত্যুহার ৬.১ শতাংশ, যা ২০২২ সালে ছিল ৫.৮ শতাংশ। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুহার প্রতি হাজারে ৩৩ এবং প্রতি লাখ জীবিত জন্ম শিশুর বিপরীতে মাতৃমৃত্যুর অনুপাত ১৩৬ জন, যা ২০২২ সালে ছিল ১৫৩ জন। মৃত্যুর শীর্ষ দশ কারণের প্রথম কারণ, হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুর হার ১.০২ শতাংশ এবং দ্বিতীয় কারণ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মৃত্যুর হার ০.৬৪ শতাংশ।
২০২৩ সালে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০২২ সালের (৬৩.৩%) তুলনায় কিছুটা কমে ২০২৩ সালে হয়েছে ৬২.১ শতাংশ। জন্মনিয়ন্ত্রণের অপূর্ণ চাহিদা ২০২২ সালের (১৬.৬২%) তুলনায় কমে ২০২৩ সালে ১৫.৫৭ শতাংশ হয়েছে।
খানার আকার ২০২২ সালের ন্যায় ২০২৩ সালেও অপরিবর্তিত রয়েছে, যা ৪.২ জন। তবে, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে নারী খানাপ্রধানের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালে এই হার ছিল ১৭.৪ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১৮.৯ শতাংশ। অন্যদিকে, পুরুষ খানাপ্রধান ২০২২ সালে ছিল ৮২.৬ শতাংশ, যা ২০২৩-এ কমে হয়েছে ৮১.১ শতাংশ। ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে বিদ্যুৎ সুবিধাভোগীর জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭.৫৩ শতাংশে।
শিক্ষা, কর্মে কিংবা প্রশিক্ষণে নেই এমন তরুণের সংখ্যা ২০২২ সালে ছিল ৪০.৬৭ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে ৩৯.৮৮ শতাংশ হয়েছে। ৫ বছরের বেশি বয়সী মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী জনসংখ্যার হার ২০২৩ সালে হয়েছে ৫৯.৯ শতাংশ। তবে, ১৫ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে এ হার ২০২২ সালের (৭৩.৮) তুলনায় সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭৪.২ শতাংশ। ২০২৩ সালে ১৫ বছরের বেশি বয়সীদের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর হার ৫০.১ শতাংশ।