বাগেরহাটে ৪টি ও গাজীপুরে ৫টি সংসদীয় আসন বহাল

■ নাগরিক প্রতিবেদক ■ 

বাগেরহাটের সংসদীয় আসন চারটি থেকে কমিয়ে তিনটি এবং গাজীপুরের পাঁচটি থেকে বাড়িয়ে ছয়টি নির্ধারণ করে জারি হওয়া নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রজ্ঞাপনকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।

সোমবার এ সংক্রান্ত রিটের রায়ে আদালত একইসঙ্গে আগের সীমানা অনুযায়ী বাগেরহাটে চারটি এবং গাজীপুরে পাঁচটি আসন বহাল রাখতে ইসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।   

সোমবার (১০ নভেম্বর) বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন বহাল করতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি আসন করে নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয় নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ ‍দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

সেদিন বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

তবে হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ সোমবার রাতে বলেছেন, ‘আমরা আজ (সোমবার) সন্ধ্যার পর হাইকোর্টের রায়ের বিষয়টি জেনেছি। এ বিষয়ে ইসির সিদ্ধান্ত কী হবে, সেটি পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।’ 

পৃথক দুটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার ও বিচারপতি ফয়সল হাসান আরিফ সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেন। 

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই বাগেরহাটে চারটি আসন ছিল, তিনটি কখনও ছিল না। চলতি বছর ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের আসন তিনটি নির্ধারণ করে অন্যায়ভাবে খসড়া প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল। এর বিরুদ্ধে আমরা আপত্তি দিয়েছিলাম। পরে ২৫ আগস্ট শুনানি শেষে ৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে। সেখানেও বাগেরহাটের একটি আসন কেটে দিয়েছিল। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করা হয়। 

এদিকে গাজীপুরে ছয়টি নয়, পাঁচটি আসন বহাল থাকবে বলেও রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই দুই রায়ের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের ২০২৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে করা আসন পুনর্নির্ধারণের গেজেট আংশিকভাবে বাতিল হলো। ওই বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাসান বলেন, রুল যথাযথ ঘোষণা করে ইসির নতুন গেজেট অবৈধ ঘোষণা করেছেন আদালত। এতে বাগেরহাটে চারটি ও গাজীপুরের পাঁচটি সংসদীয় আসন বহাল থাকছে। 

১৯৬৯ সাল থেকে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসনে নির্বাচন হয়ে আসছিল। সে অনুযায়ী বাগেরহাট-১ ছিল চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট; বাগেরহাট-২ ছিল বাগেরহাট সদর-কচুয়া; বাগেরহাট-৩ ছিল রামপাল-মোংলা এবং বাগেরহাট-৪ ছিল মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা। 

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ৩০ জুলাই তিনশ’ আসনের সীমানা নির্ধারণের খসড়া প্রকাশ করে ইসি। যেখানে ৩৯টি আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন ছাড়াও ভোটার ও জনসংখ্যার সামঞ্জস্য আনতে বাগেরহাটের একটি আসন কমিয়ে তিনটি এবং গাজীপুরে একটি বাড়িয়ে ছয়টি নির্ধারণ করা হয়। এরপর দাবি-আপত্তির শুনানি শেষে ৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত সীমানা নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করে। সেখানেও বাগেরহাটে তিনটি এবং গাজীপুরে ছয়টি আসন করার আগের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়। এছাড়া ১৪টি আসনে ৪২টি আসনে পরিবর্তন আনা হয়।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *