ছাত্র আন্দোলনে কর্মকর্তাসহ ৪৪ পুলিশ সদস্য নিহত

:: নাগরিক প্রতিবেদন ::

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে সহিংসতায় কর্মকর্তাসহ পুলিশের ৪৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ২১ জন কনস্টেবল, ১১ জন উপপরিদর্শক (এসআই), ৭ জন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ও ৩ জন পরিদর্শক রয়েছেন।

নিহত ৪৪ জনের মধ্যে ঢাকায় মারা গেছেন ১৬ জন ও সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানা এলাকায় ১৫ জন। ঢাকায় নিহত ১৬ জনের মধ্যে যাত্রাবাড়ী এলাকায় মারা গেছেন ৮ জন পুলিশ সদস্য।

রোববার (১৮ আগস্ট) বিকালে পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

পুলিশের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ৪৪ জনের মধ্যে দুইদিনে (৪ ও ৫ আগস্ট) ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে নিহত হয়েছেন ৩৯ জন পুলিশ সদস্য। এছাড়া গত ২০ জুলাই যাত্রাবাড়ী মহাসড়কে নিহত হন ডিএমপির প্রটেকশন বিভাগের নায়েক মো. গিয়াস উদ্দিন ও যাত্রাবাড়ী থানাধীন রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মারা যান ট্যুরিস্ট পুলিশের এএসআই মো. মোক্তাদির। এর পরের দিন ২১ জুলাই রামপুরার বনশ্রী এলাকায় নিহত হন নারায়ণগঞ্জের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো. মাসুদ পারভেজ ভুঁইয়া। গত ২ আগস্ট খুলনার লবনচরা গল্লামারী বাজারে নিহত হন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কনস্টেবল সুমন কুমার ঘরামী। 

গত ৪ আগস্ট রোববার দুপুরে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় ১৫ পুলিশ সদস্য নিহত হন। তারা হলেন- এনায়েতপুর বাবু মিয়ার বাড়ি এলাকায় এনায়েতপুর থানার পরিদর্শক মো. আব্দুর রাজ্জাক, এসআই মো. রইস উদ্দিন খাঁন, মো. তহছেনুজ্জামান, প্রনবেশ কুমার বিশ্বাস, মো. নাজমুল হোসাইন ও আনিসুর রহমান মোল্যা। এএসআই মো. ওবায়দুর রহমান। একই থানার কনস্টেবল মো. আব্দুস সালেক, মো. হাফিজুল ইসলাম, মো. রবিউল আলম শাহ্, মো. হুমায়ুন কবির, মো. আরিফুল আযম, মো. রিয়াজুল ইসলাম, মো. শাহিন উদ্দিন ও মো. হানিফ আলী। একই দিন নিহত হন কুমিল্লা ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার কনস্টেবল মো. এরশাদ আলী। 

গত ৫ আগস্ট সোমবার উত্তরা পূর্ব থানার সামনে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত হন ডিবির পরিদর্শক মো. রাশেদুল ইসলাম, যাত্রাবাড়ী থানার সামনে এসআই শ্রী সুজন চন্দ্র দে, উত্তরা পূর্ব থানার সামনে এসআই খগেন্দ্র চন্দ্র সরকার, যাত্রাবাড়ী থানার সামনে এএসআই সঞ্জয় কুমার দাস ও ফিরোজ হোসেন, কনস্টেবল আব্দুল মজিদ ও মো. রেজাউল করিম। এছাড়া জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় কনস্টেবল মো. মাহফুজুর রহমান, উত্তরা পূর্ব থানার সামনে ট্রাফিক উত্তর বিভাগের কনস্টেবল মো. শাহিদুল আলম ও কল্যাণ ও ফোর্স বিভাগের কনস্টবল মো. আবু হাসনাত রনি, যাত্রাবাড়ী থানার সামনে কদমতলী থানার কনস্টেবল মীর মোনতাজ আলী। 

একই দিন গাজীপুরের বাসন থানার সামনে কনস্টেবল মোহাম্মদ আব্দুল মালেক, আশুলিয়া থানাধীন আফসার মন্ডলের বাড়ির সামনে নিহত হন এএসআই মো. সোহেল রানা ও রাজু আহম্মেদ, কুমিল্লার তিতাস থানা কম্পাউন্ডে নিহত হন এসআই রেজাউল করিম ও কনস্টেবল মাইনুদ্দিন লিটন। চাঁদপুর কচুয়া থানাধীন সরকারি কলেজ মাঠে নিহত হন এসআই মামুনুর রশীদ সরকার। নোয়াখালী সোনাইমুড়ী থানার চত্বরে নিহত হন এসআই মো. বাছির উদ্দিন ও কনস্টেবল মোহাম্মদ ইব্রাহীম। এছাড়া ওই দিন হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানার এসআই সন্তোষ চৌধুরী, বাইপাইল মসজিদের সামনে এসবির এএসআই মো. রফিকুল ইসলাম, কসবা থানা কম্পাউন্ডে এটিএসআই আলী হোসেন চৌধুরী ও উত্তরা পূর্ব থানার সামনে মারা যান কনস্টেবল সুজন মিয়া।

গত ১৪ আগস্ট চিকিৎসাধীন অব্স্থায় মারা যান শ্যামপুর থানার কনস্টেবল মো. খলিলুর রহমান। 

১৬ জুলাই থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ছাত্র, পুলিশসহ মোট ৬২৬ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৬ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত নিহত হন কমপক্ষে ৩৫৪ জন। আর ৫ থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত আরও অন্তত ২৭২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *