এপ্রিলে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার ৪৭ সাংবাদিক

:: নাগরিক প্রতিবেদন ::

এপ্রিল মাসে সারাদেশে ৪৭ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। এছাড়া এক মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৩ জন। একই সময়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৪৮ জন নারী ও কন্যা শিশু।

মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি  (এইচআরএসএস) গত এপ্রিল মাসে মানবাধিকার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য প্রকাশ করেছে।

সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলামের পাঠানো এ প্রতিবেদনে বলা হয়, এপ্রিল মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখা যায়,  মাসজুড়ে রাজনৈতিক সহিংসতা এবং গ্রেফতার, নির্বাচনী সহিংসতা, সাংবাদিকদের উপর হামলা, গণপিটুনিতে নিরীহ শ্রমিক হত্যা, সাইবার নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের আইনবহির্ভূত আচরণ, মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ এবং সীমান্তে নিরীহ বাংলাদেশী নির্যাতন ও হত্যার  মত বিভিন্ন বিষয় মানবাধিকার পরিস্থিতির বিষয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

এপ্রিল মাসে অন্তত ২৭ টি হামলার ঘটনায় ৪৭ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্ততপক্ষে ৩৩ জন, হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন ৬ জন, লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন ৮ জন এবং ১১  জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। প্রতিবেদনে এফডিসিতে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের উপর হামলায় ২০ জনেরও বেশি সাংবাদিক আহত হওয়ার ঘটনাটি উল্লেখ করা হয়।

এপ্রিল মাসে ১৪৮ জন নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৭২ জন, যাদের মধ্যে আশঙ্কাজনকভাবে ৪৪ জন (৬১%) ১৮ বছরের কম বয়সী শিশু। এর মধ্যে ১৭ জন নারী ও কন্যা শিশু গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন, ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ২ জন শিশুকে এবং আত্মহত্যা করেছেন ১ জন। ২৮ জন নারী ও কন্যা শিশু যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন এর মধ্যে ১৪ জন শিশু। আর যৌতুকের জন্য নির্যাতনের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫ জন। 

একই সময়ে ১২২ জন শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। যাদের মধ্যে ৪০ জন প্রাণ হারিয়েছে এবং ৮২ জন শিশু শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। 

এপ্রিলে ৫৪ টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৩ জন, আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৯৯ জন। অধিকাংশই আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্রিক ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের অন্তর্কোন্দলকেন্দ্রীক সংঘর্ষ এবং নির্বাচনী সহিংসতায় এ হতাহতের ঘটনাগুলো ঘটেছে। আর নিহত ১৩ জনের মধ্যে ১১ জনই সরকারি দলের নেতা ও কর্মী। এই সময় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দ্বারা কমপক্ষে ১৬২ জন রাজনৈতিক নেতা-কর্মী গ্রেফতারের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে এর মধ্যে বিএনপি-জামায়াতের ১০৩ জন নেতাকর্মী। 

এপ্রিলে ৩৭ টি শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনায় ১১ জন মারা গেছেন বলে তথ্য দিয়েছে এইচআরএসএস। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৮৫ জন। এছাড়া অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং শ্রমিকদের সুরক্ষামূলক সরঞ্জামের অভাবে দুর্ঘটনায় ১৭ জন শ্রমিক  তাদের কর্মক্ষেত্রে মারা গেছেন। এ মাসে গণপিটুনির ৮ টি ঘটনায় ৮ জন নিহত এবং ৭ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়াও ‘ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)’ কর্তৃক ৯ টি হামলার ঘটনায় ৫ জন বাংলাদেশী নিহত, ৩ জন আহত ও ১ জন গ্রেফতার হয়েছেন।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *