রাশিয়ায় নিখোঁজ বিমানের সবাই নিহত

■ নাগরিক নিউজ ডেস্ক ■

রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যে আনটোনভ-২৪ মডেলের একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়ে সব আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। বিমানটিতে যাত্রী ও ক্রুসহ ৪৯ জন আরোহী ছিলেন।

উড়োজাহাজটিতে পাঁচ শিশুসহ ৪৩ জন যাত্রী এবং ছয়জন ক্রু ছিলেন। তবে জরুরি পরিষেবা মন্ত্রণালয় আরোহীর সংখ্যা কিছুটা কম, প্রায় ৪০ জন বলে জানিয়েছে। রুশ বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স জানিয়েছে, রাশিয়ার সুদূর পূর্বে প্রায় ৫০ জন আরোহী বহনকারী একটি রুশ যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।

এদিকে বিমান দুর্ঘটনার পর রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম আরটি আট সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রকাশ করে। ওই ভিডিওতে গভীর জঙ্গলের মাঝে ঘন ধোঁয়ায় মোড়া বিমানের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়।

বিমানটি সাইবেরিয়াভিত্তিক ‘আঙ্গারা’ এয়ারলাইন্সের পরিচালিত একটি আনটোনভ-২৪ মডেলের যাত্রীবাহী বিমান ছিল।

রাশিয়ার আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভ্যাসিলি অরলভ জানান, ব্লাগোভেশচেনস্ক শহর থেকে বিমানটি চীনের সীমান্তবর্তী টাইন্দা শহরে যাচ্ছিল। মাঝপথে এটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়। প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, বিমানটিতে ৫ শিশুসহ ৪৩ জন যাত্রী ছিলেন এবং ৬ জন ক্রু ছিলেন।

গভর্নর অরলভ নিশ্চিত করেছেন, সবারই মৃত্যু হয়েছে।

মূলত নিখোঁজ বিমানটির খোজে অনুস্ধানের সময় ধ্বংসাবশেষটি আমুর অঞ্চলের একটি দুর্গম বনাঞ্চলে পাওয়া যায় এবং সেখানে বিমানের ফিউসেলাজে আগুন জ্বলছিল।

পরে রাশিয়ার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও জরুরি বিভাগের হেলিকপ্টারসহ একাধিক উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। দুর্ঘটনার কারণ এখনো স্পষ্ট নয়, তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছে।

ইন্টারফ্যাক্স এবং শট সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাশিয়ার সুদূর পূর্বে প্রায় ৫০ জন যাত্রী বহনকারী একটি আনটোনভ-২৪ (An-24) যাত্রীবাহী বিমানের সাথে রাশিয়ার বিমান পরিবহন নিয়ন্ত্রণকারীদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। 

বাজে আবহাওয়ার কারণে এমন হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ। এরপর একটি উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার উড়োজাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে পায়। এটি সোভিয়েত আমলে বানানো উড়োজাহাজ। বয়স আনুমানিক ৫০ বছর। উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার থেকে ধারণ করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, উড়োজাহাজটি একটি বনের মধ্যে পড়ে আছে।

মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামে গভর্নর ভাসিলি লেখেন, ‘উড়োজাহাজের সন্ধানে অভিযান চলছে। প্রয়োজনীয় সব বাহিনী ও উপকরণ মোতায়েন করা হয়েছে।’ এদিকে জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় বলছে উড়োজাহাজটিতে আরোহীর সংখ্যা কিছুটা কম। তাদের তথ্যমতে, উড়োজাহাজে আরোহীর সংখ্যা ৪০ ছিল।

বৃহস্পতিবার সাইবেরিয়াভিত্তিক আঙ্গারা এয়ারলাইন্সের ওই উড়োজাহাজটি গন্তব্যে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ আগে রাডারের স্ক্রিন থেকে গায়েব হয়ে যায়। এরপরই অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানে নামে জরুরি পরিষেবা সংস্থাগুলো।

উড়োজাহাজটি ব্লাগোভেশচেনস্ক থেকে টিন্ডা যাচ্ছিল বলে আরটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

জরুরি পরিষেবা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, গন্তব্য থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছে। অনুসন্ধান অভিযানে মোতায়েন করা একটি হেলিকপ্টার থেকে উড়োজাহাজটির ধ্বংসাবশেষ ও আগুনের চিহ্ন দেখা গেছে।

১৯৫০ এর দশকে নির্মিত আন্তোনভ আন-২৪ উড়োজাহাজ সাধারণত যাত্রী ও মালামাল পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। এখন পর্যন্ত এই মডেলের হাজারের বেশি উড়োজাহাজ তৈরি হয়েছে।

রাশিয়ায় এখন সীমিত পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে এই ধরনের উড়োজাহাজ ব্যবহৃত হয়ে বলে জানিয়েছে আরটি।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *