ডেঙ্গুতে একদিনে ৫ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৫৩৪ জন

■ নাগরিক প্রতিবেদন ■

সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত একদিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৫৩৪ জন।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে ১১৩ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৯০, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৭৮, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১২১, খুলনা বিভাগে ৫৯ ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১৭ জন রয়েছেন। এছাড়াও বরিশাল বিভাগে ৩৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৮ জন এবং রংপুর বিভাগে একজন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

এদিকে গত একদিনে সারা দেশে ৫০৭ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৫ হাজার ৫৩ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে সর্বোচ্চ ১২১ জন ভর্তি হয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১৩ জন ভর্তি হয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে (সিটি করপোরেশনের বাইরে)। এ ছাড়া ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৯০ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোয় ৭৮ জন, খুলনা বিভাগের হাসপাতালগুলোয় ৫৯, বরিশাল বিভাগের হাসপাতালগুলোয় ৩৭, রাজশাহী বিভাগের হাসপাতালগুলোয় ১৮, ময়মনসিংহ বিভাগের হাসপাতালগুলোয় ১৭ ও রংপুর বিভাগের হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে ১ জন ভর্তি হয়েছেন।

চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৬ হাজার ৮১৯ জন। এ সময় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যে ৫২ শতাংশ নারী ও পুরুষ ৪৮ শতাংশ।

২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা ছিল ১৭০৫ জন।

২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০০০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ২৩ বছরে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৮৬৮ জনের। এ সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৭৪৮ জন। ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ১ হাজার ৭০৫ জন। ২৩ বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে যত মানুষ মারা গিয়েছিল, শুধু ২০২৩ সালেই তার প্রায় দ্বিগুণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে এ রোগে। 

দেশের প্রথম ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয় ২০০০ সালে। ওই বছর ৫ হাজার ৫৫১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়, আর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৯৩ জনের মৃত্যু হয়।

২০০০ সালের পরে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু ধীরে ধীরে কমে এলেও ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে ভয়াবহ পরিস্থিতি অতিক্রম করে দেশ। ২০১৯ সালে ১ লাখেরও বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়, আর মৃত্যু হয় ১৭৯ জনের।

২০২০ সালে করোনার প্রকোপের মধ্যে ডেঙ্গুর সংক্রমণ কম ছিল। ২০২০ সালে ডেঙ্গুতে মারা যায় ৭ জন, ২০২১ সালে ১০৫ জন এবং ২০২২ সালে ২৮১ জনের মৃত্যু হয়।

ঢাকার তুলনায় এর বাইরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২০২৩ সালে ছিল দ্বিগুণের বেশি। সারা দেশের মৃত্যুর ৫৮ শতাংশই ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *