প্রাথমিকের ৬৫৫০২ জন প্রধান শিক্ষক ১০ম গ্রেড পাচ্ছেন

■ নাগরিক প্রতিবেদক ■ 

দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬৫ হাজার ৫০২ জন প্রধান শিক্ষকের বিদ্যমান ১১তম গ্রেড (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত) ও ১২তম গ্রেড (প্রশিক্ষণবিহীন) থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ করা হয়েছে।

সোমবার (২৮ জুলাই) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষক জাতি গঠনের মূল কারিগর এবং তাঁদের আর্থিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। সম্প্রতি, ১২৪/২০২২ নম্বর সিভিল রিভিউ পিটিশনে সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ অনুসারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বিদ্যমান ১১তম থেকে ১০ম গ্রেড বেতন স্কেলে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ যৌক্তিক বিবেচিত হওয়ায় সরকার সারা দেশে ৬৫ হাজার ৫০২ (পঁয়ষট্টি হাজার পাঁচ শ দুই) জন প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল বিদ্যমান ১১তম গ্রেড (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত) ও ১২তম গ্রেড (প্রশিক্ষণবিহীন) থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণে সরকার সম্মতি দিয়েছে। এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ করা হলো।

২০১৪ সালের ৯ মার্চ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করার ঘোষণা দেন। সেদিনই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করলেও পরে মন্ত্রণালয় প্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১১তম ও অপ্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১২তম গ্রেড নির্ধারণ করে।

২০২৪ সালের ৪ মার্চ ১১তম ও ১২তম গ্রেড নির্ধারণের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছিলেন বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি রিয়াজ পারভেজসহ সংক্ষুব্ধ ৪৫ শিক্ষক।

এর আগে ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডসহ গেজেটেড পদমর্যাদা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ। ওই রায়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণবিহীন উভয় প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেড পদমর্যাদায় ২০১৪ সালের ৯ মার্চ থেকে কার্যকর করতে বলা হয়।

এ বিষয়ে সরকারের করা আপিলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আপিল খারিজ করে দিয়ে ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি রায় দেয় তৎকালীন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ।

হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগের ওই রায় দীর্ঘ তিন মাসেও কার্যকর না করায় প্রধান শিক্ষকেরা আদালত অবমাননার মামলা করেন।

ওই রায় কার্যকর না করায় কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না তার কারণ দর্শাতে একই বছরের ২৭ জুন হাই কোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ বিবাদীদের এক মাসের সময় দেয়।

পরবর্তীতে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে সিভিল রিভিউ পিটিশনটি নিষ্পত্তি করে গত ১৩ মার্চ রায় দেয়।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *