:: কূটনৈতিক প্রতিবেদক ::
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হচ্ছেন ডেভিড স্লেটন মিল। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এই মনোনয়ন সিনেটে চূড়ান্ত হলে বর্তমান রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের স্থলাভিষিক্ত হবেন তিনি। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে জ্যৈষ্ঠ কূটনীতিক ডেভিড মিলের মনোনয়ন সিনেটে পাঠানো হয়েছে। সিনেটে শুনানির পর মনোনয়ন চূড়ান্ত হলে মিলকে রাষ্ট্রদূত করে ঢাকায় পাঠানো হবে।
ডেভিড স্লেটন মিল বর্তমানে চীনের বেইজিংয়ে মার্কিন দূতাবাসে ডেপুটি চিফ অব মিশন হিসেবে রয়েছেন। সেখানে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
ডেভিড মিল বর্তমানে বেইজিংয়ে মার্কিন দূতাবাসে উপ মিশন প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। এর আগে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে ২০১৪ সালে ডেপুটি মিশন প্রধান ছিলেন ডেভিড মিল।
ডেভিড মিল স্টেট ডিপার্টমেন্টের ব্যুরো অব ইকোনমিক অ্যান্ড বিজনেস অ্যাফেয়ার্সের ট্রেড পলিসি অ্যান্ড নেগোসিয়েশনের উপসহকারী সচিব ছিলেন। তিনি ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন, ইউক্রেনের কিয়েভে মার্কিন দূতাবাসে অর্থনৈতিক বিষয়ক পরামর্শদাতা ছাড়াও চীন, হংকং, তাইওয়ান, গিনি ও ওয়াশিংটনে নানা দায়িত্ব পালন করেছেন।
সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর ২০২৩ সালে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেয় বাইডেন প্রশাসন। এ নিয়ে সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের টানাপোড়েন এখনো কাটেনি। এই টানাপোড়েনের মধ্যে মার্কিনিরা নিজেদের অগ্রাধিকারে পরিবর্তন এনেছে। নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণায় সম্পর্কে স্থবিরতার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়।
এই অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ঝামেলা আপাতত একপাশে রেখে কী করে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অন্যান্য দিকগুলো এগিয়ে নেওয়া যায়, তার উপায় খুঁজতে থাকে উভয় পক্ষ। বিষয়গুলো আলোচনার জন্য আগামী ১৪ মে দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন দেশটির দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক উপমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গত জুলাইয়ে ঢাকায় এসেছিলেন লু। ভোটের পর এবার প্রথমবার তাঁর ঢাকা আসার ঠিক আগে আগে রাষ্ট্রদূত পদে পরিবর্তন আনার কথা জানাল যুক্তরাষ্ট্র।
কূটনৈতিক সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা ও লুর সফর সামনে রেখে ওয়াশিংটনে লু’সহ মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে চলতি সপ্তাহেই বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান।
তবে যুক্তরাষ্ট্র ঢাকায় বর্তমান রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে প্রত্যাহার করে নতুন রাষ্ট্রদূত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করে কয়েক মাস আগেই। মিলকে রাষ্ট্রদূত করতে দেশটি প্রস্তাব পাঠালে বাংলাদেশ সরকার তাতে সম্মতি জানায়। পেশাদার কূটনীতিক মিলি ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে উপরাষ্ট্রদূত ছিলেন। ঢাকা, বেইজিং ছাড়াও তিনি ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে মার্কিন দূতাবাসে কাজ করেছেন।
১৯৯২ সালে ডেভিড স্লেটন মিল ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন এবং মিনিস্টার-কাউন্সেলর পদে অধিষ্ঠিত হন।
তিনি ডেলাওয়্যার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ ডিগ্রি অর্জন করেছেন। ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটির আইজেনহাওয়ার স্কুল থেকে এমএস এবং তুলানে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেছেন। তিনি ম্যান্ডারিন চাইনিজ, ইউক্রেনীয় ও ফরাসি ভাষায় কথা বলতে পারেন।
উল্লেখ্য, পিটার হাস ২০২২ সালের মার্চে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।