:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ানকে নিয়ে বিধ্বস্ত হওয়া হেলিকপ্টারটি যুক্তরাষ্ট্রের বানানো।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাইসি ও আব্দোল্লাহিয়ান বেল-২১২ মডেলের একটি হেলিকপ্টারে ছিলেন। এটি যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি করা একটি হেলিকপ্টার। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা-এর বরাতে এ খবর দিয়েছে রয়টার্স। হেলিকপ্টারটি ছিল মাঝারি আকারের। এতে পাইলটসহ ১৫ জন বসতে পারেন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে আরও বলা হয়েছে, মূলত বৈরী আবহাওয়ার কারণে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়েছে। আজ সোমবার ভোরের দিকে উজ্জ্বল রঙের জ্যাকেট পরে, মাথায় টর্চ জ্বালিয়ে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় পায়ে হেঁটে উদ্ধারকারীদের তল্লাশি চালানোর ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করা হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে একজন আঞ্চলিক সেনা কমান্ডার বলেছেন, ঘটনাস্থলের প্রতি ইঞ্চি ভূমিতে তল্লাশি চালানো হবে। ওই এলাকায় তীব্র শীত পড়েছে। ঘন কুয়াশায় ছেয়ে আছে চারপাশ। অনেক বৃষ্টি হচ্ছে।
বেল হেলিকপ্টার (বর্তমানে বেল টেক্সট্রন) ১৯৬০ এর দশকের শেষদিকে মূল ইউএইচ-১ইরোকোয়াই এর আপগ্রেড হিসেবে কানাডিয়ান সামরিক বাহিনীর জন্য এটি তৈরি করেছিল। নতুন ডিজাইনে একটির পরিবর্তে দুটি টার্বোশ্যাফ্ট ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে, যা এটিকে আরও বেশি (ভার) বহনের ক্ষমতা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক প্রশিক্ষণ নথি অনুসারে, হেলিকপ্টারটি ১৯৭১ সালে বাজারে এসেছিল এবং যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা উভয় দেশই দ্রুত সেটিকে গ্রহণ করেছিল।
বেল হেলিকপ্টার তার সর্বশেষ সংস্করণ, সুবারু বেল-৪১২ এর বিজ্ঞাপনে বলছে- পুলিশের জন্য, চিকিৎসার কাজে, সৈন্য পরিবহনে, জ্বালানি শিল্প এবং অগ্নিনির্বাপণের কাজে এটি ব্যবহৃত হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এভিয়েশন সেফটি এজেন্সিকে প্রদত্ত টাইপ সার্টিফিকেশন নথি অনুসারে, হেলিকপ্টারটি ক্রু সহ ১৫ জন যাত্রী বহন করতে পারে।
বেল-২১২ উড়ানো বেসামরিক সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে জাপানের কোস্ট গার্ড; যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং ফায়ার সার্ভিস; থাইল্যান্ডের ন্যাশনাল পুলিশ এবং আরও অনেকেই। ফ্লাইটগ্লোবালের ওয়ার্ল্ড এয়ার ফোর্সেস ডিরেক্টরি- ২০২৪ অনুসারে, ইরানের সরকার কতোটি এই মডেলের হেলিকপ্টার ব্যবহার করে সেটি স্পষ্ট না হলেও দেশটির বিমানবাহিনী এবং নৌবাহিনীর কাছে মোট ১০ টি এই মডেলের হেলিকপ্টার রয়েছে।
বেল-২১২ হেলিকপ্টার সবচেয়ে সাম্প্রতিক মারাত্মক দুর্ঘটনায় পড়েছিল ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে।
অলাভজনক বিমান চলাচলের নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা ফ্লাইট সেফটি ফাউন্ডেশনের মতে, সে সময় একটি ব্যক্তিগত হেলিকপ্টার সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপকূলে বিধ্বস্ত হয়েছিল। ২০১৮ সালে ইরানেও একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে চারজন নিহত হয়েছিলেন।
১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর দেশটির কাছে এ ধরনের কোনো হেলিকপ্টার সরাসরি বিক্রি করেনি যুক্তরাষ্ট্র।