:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যা তদন্তে কলকাতা পুলিশের দুই সদস্য ঢাকায় এসেছেন। তাঁরা ডিএমপি সদর দপ্তরে অবস্থান করছেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার আব্দুল আহাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কলকাতা পুলিশের দুই সদস্য সন্ধ্যায় ডিবি কার্যালয়ে এসে গ্রেফতার তিন আসামির সঙ্গে কথা বলবেন। তদন্তকারী সূত্র বলছে, ঢাকা থেকে তিন সদস্যের পুলিশের একটি দল কলকাতায় ঘটনাস্থলে যাবেন।
চিকিৎসার জন্য ১২ মে কলকাতায় গিয়েছিলেন আনোয়ারুল আজিম আনার। চলতি মাসের শুরুর দিকে তিনি কলকাতায় গিয়ে নিখোঁজ হন। গতকাল বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানান, আনার খুন হয়েছেন। তবে এখনো তাঁর মরদেহ উদ্ধার হয়নি।
কলকাতায় আনার যে বাড়িতে উঠেছিলেন, সেটির সিসিটিভি ফুটেজের বরাত দিয়ে ব্যারাকপুর পুলিশ জানিয়েছে, ১৩ ও ১৫ মে সেই বাড়ি থেকে দুই ব্যক্তি বড় বড় ব্যাগ নিয়ে বের হয়েছেন।
গতকাল বিধাননগর পুলিশ জানায়, ১৩ মে কলকাতার নিউ টাউনের অ্যাকুইটিকা এলাকার একটি ডুপ্লেক্স বাড়িতে এমপি আনারকে হত্যা করা হয়। ওই বাড়ির মালিক রাজ্য শুল্ক বিভাগের কর্মচারী সঞ্জীব ঘোষ। তিনি মার্কিন নাগরিক আখতারুজ্জামানের কাছ বাড়িটি ভাড়া দিয়েছেন।
গতকাল সকালে বিধাননগর, ব্যারাকপুর পুলিশ ও স্পেশাল টাস্কফোর্সের সদস্যরা বাড়িটিতে যান এবং সেখানে তল্লাশি চালান। তাঁরা সেখানে রক্তের দাগ পেলেও কোনো মরদেহ দেখতে পাননি।
মরদেহ উদ্ধার না হলেও সুনির্দিষ্ট কিছু প্রমাণের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতার নিউ টাউনের অভিজাত আবাসিক এলাকার সঞ্জীভা গার্ডেনসের একটি ফ্ল্যাটে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় তাঁকে। হত্যার পর মরদেহ টুকরা টুকরা করে অজ্ঞাতনামা স্থানে গুম করে ফেলেছে খুনিরা।
এ ঘটনায় পুলিশ ঢাকার মোহাম্মদপুর ও সাভার থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। তাঁরা পাঁচ কোটি টাকার চুক্তিতে কলকাতায় ভাড়াটে খুনি হিসেবে কাজ করেছেন। পুরো কিলিং মিশনে নেতৃত্ব দেন আমানউল্লাহ নামের একজন। তাঁকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
দুই দেশের পুলিশের সন্দেহ, হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে স্বর্ণ কারবারের টাকা লেনদেন নিয়ে বিরোধ। ছোটবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার আক্তারুজ্জামান শাহীন -এর পরিকল্পনায় এই হত্যাকাণ্ড হয়। খুন করার আগে বিলাসবহুল একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে দেশ থেকে ছয়জনের একটি কিলিং স্কোয়াড নিয়ে যান তিনি। পরে ব্যবসায়িক আলোচনা করতে ফ্ল্যাটে ডেকে এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যা করা হয়। টুকরা টুকরা করে কাটা হয় লাশ। এরপর উবার ভাড়া করে ট্রলিতে ভরে সেই লাশ গুম করেন কিলিং মিশনের সদস্যরা।
হত্যায় শিলাশ্রী নামের এক তরুণীর নাম উঠে এসেছে। তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, খুনের কোন পর্যায়ে এই তরুণী সংশ্লিষ্ট, পুলিশ এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না। লাশ গুমের পর থেকে এই শিলাশ্রী লাপাত্তা।
তদন্তে নেমে ঢাকা ও কলকাতা পুলিশ জানতে পেরেছে, আনোয়ারুল আজিমের হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীর বান্ধবী এই শিলাশ্রী। তাঁকে নিয়েই কলকাতার বিধাননগরের নিউটাউনে ওই ভাড়া ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন খুনি। সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমকে ফ্ল্যাটে ডেকে নিতে টোপ হিসেবে ওই তরুণীকে ব্যবহার করা হয়।
তবে পুলিশ বলছে, এসবই প্রাথমিক তথ্য। সামনে এগোলে আসল রহস্য বের হয়ে আসবে। সূত্র বলছে, শিলাশ্রীর বাড়ি বাংলাদেশেই। এমপি খুনের পরিকল্পনাকারীর সঙ্গে প্রায়ই বিদেশ ভ্রমণ করতেন তিনি।
বুধবার সকালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে আনোয়ারুল আজিম খুন হওয়ার খবর আসে। পরে দুপুরে ঢাকার ধানমন্ডিতে নিজের বাসায় পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, যতটুকু তথ্য তাঁরা পেয়েছেন, তাতে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশের লোকজনই এমপিকে পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে। মন্ত্রী বলেন, আনোয়ারুল আজিম যে এলাকার সংসদ সদস্য ছিলেন, ঝিনাইদহ সীমান্তবর্তী ওই এলাকাটি একটি ‘সন্ত্রাসকবলিত’ এলাকা।
পশ্চিমবঙ্গের সিআইডির প্রধান অখিলেশ চতুর্বেদী জানান, পূর্ব কলকাতার নিউটাউন অঞ্চলে যে ফ্ল্যাটে আনোয়ারুল আজিম উঠেছিলেন, সেটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবগারি দপ্তরের কর্মকর্তা সন্দীপ কুমার রায়ের। সন্দীপের কাছ থেকে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন আখতারুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি। আখতারুজ্জামানই ওই ফ্ল্যাটে আনোয়ারুল আজিমের থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আনোয়ারুল আজিমের মরদেহ এখনো পায়নি পুলিশ। তবে কিছু প্রমাণের ভিত্তিতে তাঁরা মনে করছেন, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানায় মামলা করেছেন এমপি আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। পরিকল্পিতভাবে খুন করার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে মামলাটি করেছেন তিনি।
আনোয়ারুল আজীম আনার ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য। তিনি ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে টানা তিনবার আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এক সময় আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের ওয়ারেন্টভুক্ত ছিলেন আনোয়ারুল আজিম আনার। আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার সংক্রান্ত অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০০৬ সালে ইন্টারপোলের তালিকায় তার নাম ওঠে। ২০০৯ সালে ইন্টারপোলের ওয়ান্টেড তালিকা থেকে নাম প্রত্যাহার হওয়ার পর এলাকায় ফিরে আগের মতোই কর্মকাণ্ড শুরু করেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, এক সময়ের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের চরমপন্থিদের নিয়ন্ত্রণ করতেন আনার। অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য পাচারের হোতা হিসেবেও পুলিশের খাতায় নাম ছিল তার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও চরমপন্থিদের গডফাদার হিসেবে পরিচিতি পান।
আনারের বিরুদ্ধে অস্ত্র, বিস্ফোরক, মাদকদ্রব্য ও স্বর্ণ চোরাচালান, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখলবাজি এবং চরমপন্থিদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে ৯টির বেশি মামলা ছিল। ইন্টারপোলের ওয়ান্টেড আসামি হিসেবে পুলিশ একবার তাকে আটক করলেও তার ক্যাডাররা পুলিশের ওপর আক্রমণ করে তাকে ছিনিয়ে নিয়েছিল। ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে যৌথ বাহিনীর অপারেশনের সময় আত্মগোপনে ছিলেন আনার।
১৯৮৬ সালের দিকে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় থাকাকালে আনার মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়েন। ভারতের বাগদা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের বাঘাভাঙ্গা সীমান্ত পথে চোরাচালান করতেন তিনি। ওই সময় কালীগঞ্জ থানাসহ মহেশপুর, কোটচাঁদপুর ও চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থানা পুলিশের সঙ্গে মাসিক চুক্তিতে ‘টোকেন’ তৈরি করে তার বাহিনী। ওই টোকেন দেখালেই প্রশাসনের লোকজন মাদকদ্রব্য বহনকারী গাড়ি ছেড়ে দিত। এই টোকেন বাণিজ্য থেকে আনার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ‘মাদক সম্রাট’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। এই মাদক কারবারের মাধ্যমে বিপুল অর্থবিত্তের মালিকও বনে যান। ১৯৯১ সালে আনার ঝিনাইদহের আরেক চোরাকারবারি পরিতোষ ঠাকুরের সঙ্গে মিলে স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। স্বর্ণের বড় বড় চালান রাজধানী থেকে বাঘাডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে প্রতিবেশী দেশে পাচার করতেন তারা।
১৯৯৬ সালে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে যোগ দেন আনোয়ারুল আজিম আনার। মাদক ও স্বর্ণ চোরাচালানের কারবারের সঙ্গে কালীগঞ্জ পৌরসভার এক কমিশনারের হাত ধরে অস্ত্র চোরাকারবারে জড়ান তিনি। তার অবৈধ অস্ত্রের চালান চরমপন্থি ক্যাডার সামসেল ওরফে রবিনের কাছে বিক্রি হতো। কথিত আছে, সরকারের পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী প্রকাশ ভারতে আত্মগোপন করার পর তার মাধ্যমে অস্ত্র চোরাকারবার চালিয়ে যান আনার। বাগদা এলাকার মাদক সম্রাট জয়ন্ত কুমার, কার্তিক, গৌতম সাহা ও বনগাঁর দেবদাসের সঙ্গে আনারের মাদকের কারবার ছিল।
২০০৭ সালে চুয়াডাঙ্গার লোকনাথপুর এলাকা থেকে ১২ কেজি ৯৫০ গ্রাম স্বর্ণ আটক করে তৎকালীন সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআর। চোরাকারবারিরা নিশ্চিত হয় যে, দর্শনা শ্যামপুরের সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম স্বর্ণগুলো ধরিয়ে দিয়েছে। ওই ঘটনায় টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হন সাইফুল। তিনি নিজেও স্বর্ণ চোরাকারবারিদের সিন্ডিকেটে যুক্ত ছিলেন। ওই হত্যা মামলায় আনারসহ আসামি করা হয় ২৫ জনকে। কুষ্টিয়ার চরমপন্থি নেতা মুকুল, শাহীন রুমী, ঝিনাইদহের চোরাকারবারি পরিতোষ ঠাকুর, আনারসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে পরের বছর আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০১২ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে রাজনৈতিক বিবেচনায় পরিতোষ, আনারসহ বেশ কয়েকজন মামলা থেকে অব্যাহতি পান। এ মামলায় আনারকে গ্রেফতারে ২০০৯ সালে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন চুয়াডাঙ্গার বিশেষ আদালত। এর দশ দিন পর ওই বছরের ২১ জানুয়ারি তাকে গ্রেফতারের জন্য নিশ্চিন্তপুর গ্রামে তার বাড়িতে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে ধীরে ধীরে আনারের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো কমে যেতে শুরু করে। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি নির্বাচিত হলে ক্ষমতার দাপটে বেশিরভাগ মামলা থেকে নিজেকে মুক্ত করেন আনার।
কুষ্টিয়ার চরমপন্থি নেতা মুকুলের সঙ্গে দেড় যুগ ধরে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে আনারের। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে রয়েছে তার দাপট। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশে চরমপন্থি বিরোধী অভিযান শুরু হলে বিদেশে চলে যান এই মুকুল। এরপর দেশের বাইরে বসেই রাজত্ব সামলান তিনি। এলাকার অনেক রাজনৈতিক নেতা ও ঠিকাদার তার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। আবার বিদেশে গিয়ে তার সঙ্গে দেখাও করেন। গত সংসদ নির্বাচনের পর কুষ্টিয়ার একজন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য বিদেশে গিয়ে মুকুলের সঙ্গে দেখা করেছেন বলে স্থানীয়ভাবে আলোচনা রয়েছে।
মুকুল বেশিরভাগ সময় ইতালি থাকেন। মাঝেমধ্যে থাইল্যান্ড যান। নেপালে তার ব্যবসা রয়েছে। বেশভূষায় পরিবর্তন এনে তিনি এখন জুব্বা পরেন। বছরচারেক আগেও তিনি মালয়েশিয়ায় থাকতেন। কুষ্টিয়া শহরের গোশালা রোডে তার দুটি আলিশান পাঁচতলা বাড়ি রয়েছে। এ ছাড়া বটতৈল মোড় ও ভাদালিয়ায় বাড়ি রয়েছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় তার ফ্ল্যাট রয়েছে। এ ছাড়া ঢাকায় তার কমপক্ষে ১০টি ফ্ল্যাট আছে। কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন ব্যাংকে স্বজনের নামে তিনি টাকা রেখেছেন। দেশের বাইরে বিপুল টাকা পাচার করেছেন। এ ছাড়া মুকুলের নামে বিভিন্ন থানায় হত্যা, চাঁদাবাজি ও অপহরণের একাধিক মামলা রয়েছে।
সূত্র জানায়, মুকুলের উত্থান নব্বইয়ের দশকে। কুষ্টিয়ার ইসলামিয়া কলেজে পড়ার সময় শ্রমজীবী মুক্তি আন্দোলন -এর রাজনীতিতে যুক্ত হন। সে সময় গোপনে চরমপন্থি বাহিনীও গড়ে তোলেন। ’৯০ সালের দিকে মুকুল প্রথম পুলিশের হাতে আটক হন। ছাড়া পেয়ে গা-ঢাকা দেন। পরে কিছুদিন সদর উপজেলার ভাদালিয়া এলাকায় নার্সারির ব্যবসা করলেও কুষ্টিয়া ছেড়ে ঝিনাইদহ চলে যান। শ্রমজীবী মুক্তি আন্দোলনের রাজনীতি ছেড়ে গণমুক্তি ফৌজ নামে চরমপন্থি সংগঠন গঠন করেন। শাহিন ও লিপটন ছিল তার সেকেন্ড ইন কমান্ড। কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা ও ব্যবসায়ীকে হত্যা করে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে এই বাহিনী। চরমপন্থি মুকুল বাহিনীর সদস্যরা ওই সময় বিএনপি নেতা ভিসি শহীদ ও বাচ্চু, ঠিকাদার জামু ও হাবিব, কুষ্টিয়ার থানাপাড়ার বাবু, কয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা জামিল হোসেন বাচ্চু, ব্যবসায়ী বকুল সওদাগরসহ প্রায় এক ডজন হত্যাকাণ্ড ঘটায়। এমনকি টেন্ডারের নিয়ন্ত্রণ নিতে সড়ক ও জনপথ অফিসের সামনে তিনজনের বিচ্ছিন্ন মস্তক এবং জি কে অফিসের সামনে দুজনের কাটা মাথা রেখে আতঙ্ক ছড়ান মুকুল। এসব হত্যাকাণ্ডের পর দায় স্বীকার করে মিডিয়ায় বিবৃতিও দিতেন মুকুল।