:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে শেয়ারবাজারের সূচক কমেছে ৯৯১ পয়েন্ট। আলোচ্য সময় শেয়ারবাজারের মূলধন কমেছে ১ লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকা।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ছিল ৬ হাজার ২৪২ পয়েন্ট। যা ৩১ জানুয়ারি কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১৫৩ পয়েন্ট। বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে সূচক কমেছে ৮৯ পয়েন্ট।
৩১ জানুয়ারি যেখানে সূচক ছিল ৬ হাজার ১৫৩ পয়েন্ট, তা ২৮ ফেব্রুয়ারি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৫৪ পয়েন্টে। ফেব্রুয়ারি মাসে সূচক বেড়েছে ১০১ পয়েন্ট।
মার্চ মাসে সূচক কমেছে ৪২৫ পয়েন্ট। ২৮ ফেব্রুয়ারি সূচক যেখানে ছিল ৬ হাজার ২৫৪ পয়েন্ট, ৩১ মার্চ তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৮২৯ পয়েন্টে।
এপ্রিল মাসে সূচক কমেছে ২৪৫ পয়েন্ট। ৩১ মার্চ সূচক যেখানে ছিল ৫ হাজার ৮২৯ পয়েন্ট, ৩০ এপ্রিল তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫৮৪ পয়েন্টে।
মে মাসে সূচক কমেছে ৩৩৩ পয়েন্ট। ৩০ এপ্রিল সূচক যেখানে ছিল ৫ হাজার ৫৮৪ পয়েন্ট, ৩০ মে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২৫১ পয়েন্টে।
এর ফলে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ডিএসইর প্রধান সূচক ছিল ৬ হাজার ২৪২ পয়েন্ট। আর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৮০ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা।
সর্বশেষ ৩০ মে তারিখে সূচক কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২৫১ পয়েন্টে। আর বাজার মূলধন কমে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৪৮ হাজার ৯২২ কোটিতে।
আর বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ৬০ পয়েন্ট এবং বিনিয়োগকারীদের মূলধন কমেছে ৪ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা।
মে মাসের ১৯ কার্যদিবসের মধ্যে ১৪ দিনই শেয়ারের দাম কমেছে
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) চলতি মে মাসের ১৯ কার্যদিবসের মধ্যে ১৪ দিনই বাজারে শেয়ারের দাম কমেছে। দাম বেড়েছে মাত্র ৫ দিন। এর আগে সর্বশেষ ২০১৮ সালের মে মাসে ২১ কার্যদিবসের মধ্যে ১৮ দিনই বাজারে দরপতন হয়েছিল, দাম বেড়েছিল মাত্র ৩ দিন।
চলতি বছরের মে মাসের ১৯ কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৩৩ পয়েন্ট বা প্রায় সাড়ে ৬ শতাংশ কমেছে। মে মাসের শুরুতে ডিএসইএক্স সূচকটি ছিল ৫ হাজার ৫৮৫ পয়েন্টের অবস্থানে। গত বৃহস্পতিবার সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইএক্স সূচকটি কমে দাঁড়ায় ৫ হাজার ২৫২ পয়েন্টে।
গত সাত বছরের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, ২০১৮ সালের পর এবারই বাজেটের আগের মাসে সবচেয়ে বেশি সংকটে ছিল শেয়ারবাজার। এরপর ২০১৯ সালের মে মাসে মোট ২১ দিন লেনদেন হয়েছিল বাজারে। তার মধ্যে সূচক কমেছে ৯ দিন আর সূচকের উত্থান ঘটে ১০ দিন। বাকি দুই দিন সূচক অপরিবর্তিত ছিল। ২০২০ সালে করোনার কারণে পুরো মে মাস শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ ছিল। ২০২১ সালের মে মাসের ১৯ কার্যদিবসের মধ্যে ১৪দিনই সূচক বেড়েছে। কমেছে মাত্র ৫দিন। এ ছাড়া ২০২২ সালের মে মাসে ১৮ কার্যদিবসের মধ্যে ১১ দিন বাজারে দরপতন হয়েছিল। ওই মাসে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল ৭ দিন। আর গত বছরের মে মাসে ২১ কার্যদিবসের মধ্যে ১০ দিনই বাজার ঊর্ধ্বমুখী ছিল। ওই মাসে দরপতন হয়েছিল ৯ দিন, বাকি ২ দিন সূচক অপরিবর্তিত ছিল।
২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের তুলনায় চলতি বছরের মে মাসই ছিল সবচেয়ে হতাশার। এমনিতেই গত ফেব্রুয়ারি থেকে বাজারে মন্দাভাব চলছে। তার মধ্যে বাজেট সামনে রেখে শুরু হয়েছে মূলধনি মুনাফার ওপর করারোপ নিয়ে একধরনের অনিশ্চয়তা। তাতে মে মাসজুড়ে বাজারে ধারাবাহিক দরপতন হয়েছে।
আগামী বাজেটে শেয়ারবাজার থেকে নির্দিষ্ট সীমার বেশি মূলধনি আয় বা ক্যাপিটাল গেইন হলে তার ওপর করারোপের পরিকল্পনা করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এনবিআরের এ পরিকল্পনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাজারে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে। শেয়ারবাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আগামী বাজেটে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মূলধনি আয়ের ওপর নতুন করে করারোপ করা হলে সেটি হবে বাজারের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। এ জন্য ডিএসই কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন করে শেয়ারবাজারে কোনো ধরনের কর আরোপ না করতে সরকার ও এনবিআরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।