:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
একাদশ শ্রেণির প্রথম ধাপের ভর্তির প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রথম ধাপে ৪৭ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী কোনো কলেজ পাননি। যারা আবেদন করেও কলেজ পাননি তারা দ্বিতীয় ধাপে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন শুরু হবে ৩০ জুন।
প্রথম ধাপে কলেজ ভর্তির জন্য আবেদন করেছেন ১৩ লাখ ৩৫ হাজার ৫৮২ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে আবেদন করেছেন এবং ফি ও দিয়েছেন এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩ লাখ ২৮ হাজার ২৫০ জন। বাকিরা আবেদন করলেও ফি জমা দেননি। শিক্ষার্থীরা যেহেতু সর্বনিম্ন ৫টি থেকে সর্বোচ্চ ১০টি কলেজ পছন্দ দিতে পারেন, সে হিসাবে মোট আবেদন জমা পড়েছে ৭২ লাখ ৬৭ হাজার ৬৮৩টি। এর মধ্যে কলেজ পেয়েছেন ১২ লাখ ৮৭ হাজার ৮৫৯ জন। অর্থাৎ ৪৭ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী আবেদন করেও কলেজ পাননি।
সারা দেশে মিশনারি পরিচালিত কলেজগুলোর বাইরে ৭ হাজার ৭৯২টি কলেজে আসন রয়েছে ২৬ লাখ ৪৭ হাজার ১৩৩টি। চলতি বছর সব শিক্ষা বোর্ড (সাধারণ, মাদ্রাসা ও কারিগরি) মিলিয়ে এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট অংশগ্রহণকারী ছিল ২০ লাখ ১৩ হাজার ৫৯৭ জন। এর মধ্যে পাস করেছেন ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন। সব মিলিয়ে এবার প্রায় ১০ লাখ আসন ফাঁকা থাকবে।
প্রথম ধাপে ফল প্রকাশের পর নির্বাচিতদের নিশ্চায়ন করতে হবে। নিশ্চায়ন প্রক্রিয়া শেষ হলে শূন্য আসনে ৩০ জুন থেকে দ্বিতীয় ধাপে আবেদন শুরু হবে, যা চলবে ২ জুলাই পর্যন্ত। ৪ জুলাই রাত ৮টায় দ্বিতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হবে। এরপর টানা চার দিন চলবে দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচিতদের নিশ্চায়ন প্রক্রিয়া। ৯ ও ১০ জুলাই তৃতীয় ধাপে আবেদন নেওয়া হবে। এ ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে ১২ জুলাই রাত ৮টায়। তিন ধাপে আবেদনের পর ফল প্রকাশ, নিশ্চায়ন ও মাইগ্রেশন শেষে ১৫ জুলাই থেকে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে। চলবে ২৫ জুলাই পর্যন্ত। একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু হবে আগামী ৩০ জুলাই।
চলতি বছর এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষায় ১১টি শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ১৩ হাজার ৫৯৭ জন। এর মধ্যে পাস করেছেন ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন। সারা দেশে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিযোগ্য আসন আছে ২৫ লাখের মতো।
এবারও একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে কোনো বাছাই পরীক্ষা হয়নি। এসএসসি ও সমমানের ফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ১৫০ টাকা আবেদন ফি জমা দিয়ে সর্বনিম্ন ৫টি ও সর্বোচ্চ ১০টি কলেজ বা সমমানের প্রতিষ্ঠানের জন্য পছন্দক্রম দিয়ে আবেদন করতে পেরেছে। একজন শিক্ষার্থী যতগুলো কলেজে আবেদন করেছে, তার মধ্য থেকে শিক্ষার্থীর মেধা, কোটা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে ভর্তির জন্য একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তার অবস্থান নির্ধারণ করা হয়। অবশ্য ঢাকার নটরডেম কলেজসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তাদের নিজেদের মতো শিক্ষার্থী ভর্তি করে থাকে।
২০২৪ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ শিক্ষার্থী। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রী ৯৮ হাজার ৭৭৬ জন। ছাত্র ৮৩ হাজার ৩৫৩ জন। ২০২৩ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন পরীক্ষার্থী। এবার গত বছরের চেয়ে এবার ১ হাজার ৪৪৯ জন কম জিপিএ-৫ পেয়েছে।
১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এ বছর ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন পরীক্ষার্থী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন পরীক্ষার্থী ১৬ লাখ ৬ হাজার ৮৭৯ জন। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন দাখিল পরীক্ষার্থী ২ লাখ ৪২ হাজার ৩১৪ জন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৭৩ জন।
যশোর বোর্ডে সর্বোচ্চ পাসের হার ৯২ দশমিক ৩২ শতাংশ। আর সর্বনিম্ন সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৭৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এছাড়া ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৮৯ দশমিক ৩২ শতাংশ, রাজশাহীতে ৮৯ দশমিক ২৫ শতাংশ, কুমিল্লায় ৭৯ দশমিক ২৩ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৮২ দশমিক ৮০ শতাংশ, বরিশালে ৮৯ দশমিক ১৩ শতাংশ, দিনাজপুরে ৭৮ দশমিক ৪০ শতাংশ ও ময়মনসিংহে ৮৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ।৩ জন।
এবার পরীক্ষায় অংশ নেয়া মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৯ হাজার ৮৬১টি। এর মধ্যে শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দুই হাজার ৯৬৮টি। ৫১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীই পাস করেনি।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় গত ১২ মার্চ। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৩ থেকে ২০ মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়।