সরকার পতনের এক দফা দাবি ঘোষণা

:: নাগরিক প্রতিবেদন ::

সরকার পতনের এক দফা দাবি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। শনিবার (৩ আগস্ট) রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হাজার হাজার মানুষের সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম এই ঘোষণা দেন।

বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নাহিদ ইসলাম মাইকে সমবেত মানুষের উদ্দেশে বলেন, ‘মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ও সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা এক দফা দাবির সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। এক দফাটি হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ এই সরকারের পতন ও ফ্যাসিবাদের বিলোপ।’

নাহিদ আরও বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে আমরা খুব দ্রুতই ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের জন্য সর্বস্তরের নাগরিক, ছাত্রসংগঠন ও সব পেশাজীবী মানুষের সঙ্গে মিলে সম্মিলিত মোর্চা ঘোষণা করব। সবার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জাতীয় রূপরেখা আমরা সবার সামনে হাজির করব৷’

‘শুধু শেখ হাসিনা নয়, মন্ত্রিসভাসহ পুরো সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে৷ এই ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার বিলোপ করতে হবে৷ আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গঠন করতে চাই, এমন একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি করতে চাই, যেখানে আর কখনো কোনো ধরনের স্বৈরতন্ত্র-ফ্যাসিবাদ ফিরে আসতে না পারে৷’—বলেন নাহিদ।

যে স্বতঃস্ফূর্ত ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থান শুরু হয়ে গেছে, তার সঙ্গে মানুষকে যোগ দেওয়া এবং পাড়ায়-পাড়ায়, মহল্লায়-মহল্লায় সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানান নাহিদ। তিনি কাল থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণাটিও তুলে ধরেন।

বেলা সাড়ে ১১ টায় সায়েন্স ল্যাব অবরোধ করেন ঢাকা কলেজ, আইডিয়াল কলেজসহ আশপাশের শিক্ষার্থীরা। দুপুর দুইটা ৪০ মিনিটের দিকে তারা মিছিল নিয়ে শহীদ মিনার অভিমুখে জড়ো হন। বিকেল তিনটা ১০ মিনিটে তারা শহীদ মিনারে পৌঁছান।  

উত্তরায় সাড়ে ১২ টার দিকে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা মিরপুর ডিওএইচএসে অবস্থান নেন। এদিকে মিরপুর ১-ও দখলে নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। একই সময়ে উত্তরা বিএনএস সেন্টারেও জড়ো হন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা সবাই তিনটার দিকে বসুন্ধরা গেট অভিমুখে জড়ো হন। পরে তারা শহীদ মিনারের উদ্দেশে রওনা দেন।

এছাড়া রামপুরা, শান্তিনগর মোড়, শনির আখড়া অবরোধ করেছেন ছাত্র ও জনতা। তারা বর্তমানে শহীদ মিনারে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।  

সরকার পতনের এক দফা দাবি ঘোষণা

শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে গান গাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল ‘আর্টসেল, শিরোনামহীন, জলের গান, ওয়ারফেজ, মাইলস, চিরকুট, অ্যাশেজ’— সাতটি ব্যান্ড। তবে তারা আজ গান গাইবেন না সেখানে, তারা রবীন্দ্র সরোবরে জড়ো হয়ে সেখান থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসবেন বলে জানিয়েছেন।

সারা দেশে ছাত্র-নাগরিকের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে খুনের প্রতিবাদ ও ৯ দফা দাবিতে শুক্রবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তারা আজ সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও কাল রোববার থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হতাহতের ঘটনায় ৯ দফা দাবি দিয়েছিলেন। এবার এক দফা দাবি তুলে ধরা হলো। শহীদ মিনারে সামনের সারিতে অন্তত ছয়জন সমন্বয়ক উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা হলেন নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার ও আবদুল কাদের। তাঁদের মধ্যে নাহিদসহ তিনজন বক্তব্য দেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শনিবার সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করে। রোববার থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে। আজকের কর্মসূচিতে অংশ নিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহীদ মিনার এলাকায় একত্রিত হয়েছেন শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মানুষের ঢল শহীদ মিনার এলাকা ছাপিয়ে চাঁনখারপুল মোড়, দোয়েল চত্বর, জগন্নাথ হল মোড় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল টাওয়ার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। এই প্রতিবেদন লেখার সময়ও বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীরা আসছিলেন।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ১ জুলাই থেকে লাগাতার আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ১৬ জুলাই সংঘর্ষে ৬ জনের মৃত্যু হয়। এরপর আন্দোলন আরও বেগবান হয়। পরবর্তীতে সংঘর্ষ ও সংঘাতে এখন পর্যন্ত ২৭৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বহু মানুষ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হতাহতের ঘটনায় ৯ দফা দাবি দিয়েছিল। এবার এক দফা দাবি তুলে ধরা হলো। আজ শহীদ মিনারে সামনের সারিতে অন্তত ছয়জন সমন্বয়ক উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা হলেন নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার ও আবদুল কাদের। তাঁদের মধ্যে নাহিদসহ তিনজন বক্তব্য দেন।

এর আগে সকালে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান আওয়ামী লীগ ও ১৪-দলীয় জোটের নেতারা।

আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, দলের পক্ষ থেকে তিনজনকে আলোচনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা হলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম ও মাহবুব উল আলম হানিফ।

দলীয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুকেও আলোচনায় থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

জানতে চাইলে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, সমন্বয়কদের সঙ্গে তাঁদের এখনো যোগাযোগ হয়নি। যোগাযোগ করা হবে।

তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেছেন, ‘এখন আর আলোচনার সুযোগ নেই। সিদ্ধান্ত আসবে রাজপথ থেকে।

এর আগে সকালে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান আওয়ামী লীগ ও ১৪-দলীয় জোটের নেতারা।

আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, দলের পক্ষ থেকে তিনজনকে আলোচনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা হলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম ও মাহবুব উল আলম হানিফ।

দলীয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুকেও আলোচনায় থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

জানতে চাইলে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, সমন্বয়কদের সঙ্গে তাঁদের এখনো যোগাযোগ হয়নি। যোগাযোগ করা হবে।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *