পদত্যাগ করে বিদেশে পালিয়েছেন হাসিনা

:: নাগরিক প্রতিবেদন ::

 প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। সোমবার বেলা আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে শেখ হাসিনা উড্ডয়ন করেন।

শেখ হাসিনার সঙ্গে গেছেন তার ছোট বোন শেখ রেহানাও। এক মাস পাঁচদিন স্থায়ী কোটা বিরোধী আন্দোলনে শুধু সরকারের পতনই হয়নি, দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে সরকার প্রধানকে। দুপুরের পর হঠাৎ দৃশ্যপট পাল্টে যেতে থাকে। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন এই খবর প্রকাশের পর ছাত্র-জনতা রাজপথে নেমে আসতে থাকেন।। রাতে জানা যায় নয়া দিল্লির সামরিক ঘাঁটিতে তিনি নামেন। বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল।

ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত অসমর্থিত খবরে প্রকাশ, আজ সোমবার সন্ধ্যায় শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি পরিবহন বিমান দিল্লি-উত্তর প্রদেশ সীমান্তে গাজিয়াবাদের কাছে হিন্দন বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। সেখানে দোভাল তাঁর সঙ্গে দেখা করেন।

 এখন অন্তবর্তী সরকার গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমরা বড় বড় রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। আমরা একটি ইন্টারিম গভর্নমেন্ট গঠন করে এদের সব কার্যকলাপ চালিয়ে যাব। মাহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে ইন্টারিম গভর্নমেন্টের বিষয়ে আজকেই কথা বলব। এই ইন্টারিম গভর্নমেন্টই দেশ পরিচালনা করবে।’

তিনি বলেন, ‘কথা দিচ্ছি সমস্ত হত্যা, সমস্ত অন্যায়ের বিচার হবে। সেনাবাহিনীর প্রতি আস্থা রাখুন, সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি আস্থা রাখুন। কথা দিচ্ছি আপনাদের সমস্ত দাবি পূরণ করব। দেশে শান্তি শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে আমাদের সহযোগিতা করুন।’

ভাঙচুর, হত্যা, মারামারি, সংঘাত থেকে মানুষকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করি তবে একটা সুন্দর পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। সংঘাতের মাধ্যমে আর কিছু পাবো না। সমস্ত ধ্বংসযজ্ঞ ও অরাজকতা থেকে বিরত হন।’

এ সময় তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘একটু ধৈর্য্য ধরেন, সময় দেন, সবাই মিলে সমস্যা সমাধান করব। আন্দোলনরত ছাত্ররা যারা আছেন, দয়া করে ঘরে ফিরে যান।’

জনগণের উদ্দেশে সেনাপ্রধান বলেন, ‘দেশে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখেন। আপনারা আমার ওপর আস্থা রাখেন, একসাথে কাজ করি। দয় করে সাহায্য করেন। মারামারি সংঘাত করে আর কিছু পাব না। সংঘাত থেকে বিরত হোন। সবাই মিলে সুন্দর দেশ গড়েছি।’

কোন কোন রাজনৈতিক দল সঙ্গে বৈঠক করেছেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের ইসলামীর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। শিক্ষক আসিফ নজরুল ও জোনায়েদ সাকিও বৈঠকে ছিলেন।

সেনাবাহিনীর প্রধান বলেন, আমরা এখন বঙ্গবভনে যাব। সেখানে অন্তবর্তী সরকার গঠনের ব্যাপারে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

সোমবার দুপুরের পর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়। আগের দিন থেকেই মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল। ইন্টারনেট বন্ধ থাকা সকাল থেকে ছিল নানা গুজব আর গুঞ্জন। দুপুরের পর দৃশ্যপট পরিষ্কার হতে থাকে। 

থমথমে অবস্থার মধ্যে লাখ লাখ ছাত্র-জনতা রাজপথে নেমে আসতে থাকেন। অনেকটা বিজয় মিছিলের আবহে ছাত্র-জনতা শাহবাগ ও গণভবনের দিকে যেতে থাকেন। বেলা দুইটার দিকে পুরো রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো ছাত্র-জনতার দখলে চলে যায়। নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ সবাই রাজপথে নেমে এসে বিজয়ের উল্লাস প্রকাশ করতে থাকেন। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গেছেন এই খবর প্রচার হওয়ার পর পরিস্থিতি আরও বদলে যেতে থাকে। ছাত্র-জনতার স্রোত ছড়িয়ে পড়ে অলি-গলি, গ্রাম- গ্রামান্তরে। অপূর্ব এক উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো দেশ। গত কয়েকদিনের ছাত্র-জনতার রক্তস্রোতের ওপর দাঁড়িয়ে পালন করা এই বিজয় উল্লাসের মাঝেও মানুষের মধ্যে ছিল ক্ষোভের আগুন, শোকের কান্না, আর হৃদয় ছেঁড়া হাহাকার। হাতে হাতে জাতীয় পতাকা, বিজয়ের নানা চিহ্ন আর ফুল নিয়ে রাস্তায় নেমে আসা জনতার গগনবিদারী স্লোগানে ছিল কোটা সংস্কার আন্দোলনে জীবন দেয়া বীর শহীদদের নাম। গত কয়েকদিনে অধিকার আদায়ের দাবিতে আন্দোলন করা বীর শহীদদের পরিবারের কাছেও কৃতজ্ঞতা জানাতে ছুটে যান আন্দোলনে বিজয়ী ছাত্র-জনতা।  সোমবারের বিকালটি বিজয়ের এক আভায় উদ্ভাসিত হয় বাংলাদেশের মানুষের কাছে। স্বাধীন বাংলাদেশে এমন বিকাল আর আগে আসেনি এমনটা বলছিলেন আন্দোলনে বিজয়ীরা। বিরল এক গণঅভ্যুত্থানের সাক্ষী হয়েছে দেশ। দুনিয়ার গণতান্ত্রিক  ইতিহাসে জনতার এই অভ্যুত্থানও স্বর্ণের অক্ষরে লেখা থাকবে যুগ-যুগান্তরে।

বিস্ময়কর এই গণঅভ্যুত্থানের বিকালে উল্লসিত জনতার স্রোত প্রবেশ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে। সেখানকার সব নিরাপত্তা চৌকি চুরমার করে জনতার স্রোত সেখানে নানাভাবে উল্লাস প্রকাশ করে। ছিল অনাকাঙ্খিত দৃশ্যও। লুটপাট করে জিনিসপত্র নিয়ে যেতে দেখা যায় অনেককে। একই সময়ে আন্দোলনে বিজয়ী ছাত্র-জনতার স্রোত প্রবেশ করে জাতীয় সংসদ ভবনে। সেখানেও তারা নানাভাবে উল্লাস প্রকাশ করতে থাকেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রবেশ করে উল্লাস প্রকাশ করেন তারা। বিকালেই বন্ধ ঘোষণা করা হয় হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্যক্রম। সারা দেশে বিজয় উল্লাস প্রকাশ করার সময় ঘটে নানা ঘটনাও। হামলা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করার তথ্য ও পাওয়া যায়। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সবাইকে রাষ্ট্র ও জনগণের সম্পদ ধ্বংস না করার আহ্বান জানানো হয়। সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জাতীয় সরকারের একটি রূপরেখা দেয়ার তথ্যও জানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সাম্প্রদায়িক সহিংসতা রোধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানানো হয়। বিএনপি, জামায়াতসহ রাজনৈতিক দলগুলোও সব ধরনের সংঘাত সহিংসতা পরিহার করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানায়। 

রাজধানীতে ছাত্র-জনতার জয়োল্লাস চলার সময় ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের তথ্য পাওয়া যায়। ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরেও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ছাড়া কাওরান বাজারে অবস্থিত একটি গণমাধ্যমের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও হামলা করে দুর্বৃত্তরা। আক্রান্ত হয় প্রধান বিচারপতির বাসভবনও। 

আগের দিন রোববার ছাত্র-জনতার সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি শুরুর দিনে সারা দেশে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের অস্ত্রধারী ক্যাডারদের আক্রমণ, পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে এবং আন্দোলনকারীদের হামলায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। এরমধ্যে বেশির ভাগ মানুষ আওয়ামী লীগের  নেতাকর্মীদের হামলা ও গুলিতে মারা যান। এ ছাড়া হামলায় ১৪ জন পুলিশ সদস্য ও আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী নিহত হন। এদিনের নজিরবিহীন সহিংসতায় কয়েক হাজার মানুষ আহত হন। 

ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন প্রতিরোধে রোববারই সারা দেশের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে চলে আসে। আওয়ামী লীগের এমপি, মন্ত্রী, নেতাদের বাসায় হামলা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। খবর ছড়িয়ে পড়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা পালিয়ে যাচ্ছেন। এমন অবস্থায় সোমবার মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচি ঘিরে তৈরি হয় উদ্বেগ। সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করে। নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয় সড়কে। দুপুর পর্যন্ত পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও গুলি ছোড়ে আন্দোলনকারীদের দিকে। 

গত ১ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এরপর ধাপে ধাপে এই আন্দোলন রূপ নেয় একদফায়। গত ১৬ই জুলাই আন্দোলন চলাকালে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের সামনে বুক চিতিয়ে প্রতিবাদ করার সময় নিষ্ঠুরভাবে গুলি করে পুলিশ। এতে তিনি ঘটনাস্থলে মারা যান। তার প্রতিবাদের এই ছবি এবং ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ হয়। তিনি হয়ে উঠেন এই আন্দোলনের অদম্য এক প্রতীকী শক্তি। এরপর ক্রমে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। সরকারের বর্বর দমন-পীড়নের নানা ধাপে প্রায় চারশ’ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। তাদের প্রায় সবাই ছাত্র-জনতা। এতো বিপুল মানুষের প্রাণহানি স্বাধীন বাংলাদেশের জমিনে এর আগে কখনো একক আন্দোলনে  হয়নি। 

১৫ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলোর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ‘বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর’ , ‘বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি’ ও ‘শুদ্ধাচার পুরস্কার’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি আন্দোলনকারীদের ‘তুমি কে? আমি কে? রাজাকার, রাজাকার’ স্লোগান দেয়াকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলে আখ্যায়িত করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জাও লাগে না।’

একই দিন রাজধানীর ধানমমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজাকারের চেতনা লালনকারীরাও রাজাকার। আত্মস্বীকৃত রাজাকারদের জবাব ছাত্রলীগই দেবে।

১৬ জুলাই দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেছেন, ‘আপনি (প্রধানমন্ত্রী) ২ শতাংশ নিয়ে পড়ে আছেন। আর ৯৮ শতাংশকে বানিয়ে দিলেন রাজাকার। একটা দেশের ৯৮ শতাংশ শিক্ষার্থী রাজাকার হতে পারে না। আপনার বক্তব্য কল্পনাপ্রসূত। অতিদ্রুত বক্তব্য প্রত্যাহার করুন।’

এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে একই দিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি ধৃষ্টতার শামিল। স্বাধীনতার পরাজিত অপশক্তির কোনো প্রকার আস্ফালন আওয়ামী লীগ মেনে নিবে না। কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে কোন জনদুর্ভোগ মেনে নিবে না সরকার। যে কোনো অপশক্তিকে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।’

এবার ছাত্রদের নিবৃত্ত করতে আন্দোলনের উপর অভিযোগ করা হয় যে এতে বিএনপি-জামায়াতের ইন্ধন রয়েছে। ওবায়দুল কাদের মঙ্গলবার দুপুরে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এই আন্দোলনকারীদের একটা অংশ রাজাকারের পক্ষে কথা বলছে। এটা স্পষ্ট এর পেছনে রয়েছে বিএনপি-জামায়াত।’

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) ঢাকায় একটি সেমিনারে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালে কোটা বাতিল করেন। এরপর ৭ থেকে ৮ জন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হাইকোর্টে মামলা করেন। আজ যারা কোটা আন্দোলন করছেন, তারা তো হাইকোর্টে যাননি। হঠাৎ একদিন যখন হাইকোর্টের রায়ের কথা পত্রিকায় বের হয়েছে, তখন তারা আন্দোলনে নেমে পড়েছেন। পরে তারা হাইকোর্টে না গিয়ে রাস্তায় আন্দোলনে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ২২ ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

এক যৌথ বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আন্দোলনরত বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের ক্যাডাররা সশস্ত্র হামলা চালায়। ছাত্রলীগ নামক হায়েনাদের বর্বর হামলায় নারীসহ অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত এবং আনুমানিক ছয়জন নিহত হয়! আওয়ামী লীগ নেতাদের হুকুমে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম ও সাধারণ সম্পাদক ইনানের নেতৃত্বে এ নৃশংস হামলা চালানো হয়। নিরীহ শিক্ষার্থীদের ওপর ন্যক্কারজনক এ হামলার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। এমন ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডে দেশবাসী চরমভাবে সংক্ষুব্ধ।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দেড় শ’র বেশি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় গ্রেফতারের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ এবং র‍্যাব।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *