:: ঢাবি প্রতিনিধি ::
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালসহ সাতটি হলের প্রভোস্ট পদত্যাগ করেছেন। শনিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নিজের পদত্যাগপত্র জমা দেন ঢাবি উপাচার্য।
যে সাতটি হলের প্রভোস্ট পদত্যাগ করেছেন, সেগুলো হলো— মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বিজয় একাত্তর হল, জহুরুল হক হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব হল, বেগম রোকেয়া হল, শামসুন নাহার হল এবং নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী ছাত্রীনিবাস।
১৫ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগ পাওয়ার পর ৪ নভেম্বর দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন মাকসুদ কামাল। গত বছরের ৪ নভেম্বর সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান -এর স্থানে ২৯তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
আওয়ামীপন্থী অধ্যাপক মাকসুদ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, সিন্ডিকেটসহ বিভিন্ন পর্যায়ে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। কয়েকবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের আহ্বায়কের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। মাকসুদ কামাল দায়িত্ব নেওয়ার পর চলতি বছরে আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংগুলোতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতি হচ্ছিল। সরকার পতনের প্রেক্ষাপটে তিনি পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন।
অধ্যাপক মাকসুদ কামাল ২০০০ সালের মার্চে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগে প্রভাষক পদে যোগ দেন। একই বিভাগে ২০১০ সালে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান। বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের আগে তিনি বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানে (স্পারসো) বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার পদে প্রায় ছয় বছর কাজ করেন। মাকসুদ কামাল ভূমিকম্প ও সুনামি এবং নগর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ।
অধ্যাপক মাকসুদ কামাল ১৯৮২ সালে এসএসসি ও ১৯৮৪ সালে এইচএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগ থেকে ১৯৮৮ সালে বিএসসি (সম্মান) এবং ১৯৮৯ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ২০০৪ সালে তিনি জাপানের টোকিও ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (টিআইটি) থেকে ভূমিকম্পবিষয়ক প্রকৌশলে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। দেশি-বিদেশি জার্নালে তাঁর ৬৫টি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে না দাঁড়ানোয় শুরু থেকেই শিক্ষার্থীরা তার ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালসহ উপ উপাচার্য (প্রশাসন ও শিক্ষা), প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর, কোষাধ্যক্ষ, সব প্রভোস্টসহ সব সিনেট এবং সিন্ডিকেট সদস্যদের পদত্যাগসহ দুই দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।