:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ৫৭ জন প্রবাসী বাংলাদেশির মধ্যে ১২ জন চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন। বাকি দুইজন ঢাকায় পৌঁছেছেন।
এ সময় স্বজনদের কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তারা। ক্ষমা পেয়ে দেশে ফিরতে পেরে কৃতজ্ঞতা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম। এসময় তারা দুই সমন্বয়কের সঙ্গে কোলাকুলি করেন, তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ঢাকায় আগতরা হচ্ছেন- সুহেল আহমেদ ও মো. জহিরুল ইসলাম নাহিদ। শনিবার রাতে এয়ার অ্যারাবিয়ার একটি ফ্লাইটে তারা শারজাহ থেকে ঢাকায় ফিরেছেন।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে পৃথক দুটি ফ্লাইটে প্রবাসীরা শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন। তাদের মধ্যে আবুধাবি থেকে আসা ফ্লাইটে পৌঁছেন ১১ জন এবং অপর একজন পৌঁছেন শারজাহ থেকে আসা ফ্লাইটে।
চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আবুধাবি থেকে আসা ফ্লাইটটি চট্টগ্রাম পৌঁছেছে রাত ৮টা ১০ মিনিটে এবং শারজাহ থেকে আসা ফ্লাইটটি পৌঁছেছে রাত ৮টা ৩৭ মিনিটে।
সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস -এর আহ্বানে কারাবন্দি ৫৭ বাংলাদেশিকে ক্ষমা করে দেয় দেশটির সরকার।
এর আগে গত মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক পরবর্তী ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছিলেন, গত ২৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের। সেখানে বড় অংশজুড়ে ছিল ৫৭ জনের শাস্তি মওকুফের বিষয়টি। প্রধান উপদেষ্টা প্রেসিডেন্টকে প্রবাসী শ্রমিকদের ক্ষমা করে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। প্রেসিডেন্ট তার কথা রেখেছেন। প্রধান উপদেষ্টা এ সুখবরটি পেয়েছেন।
তিনি বলেন, তাদের ক্ষমা করানো ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। এখন তাদের বিষয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের দূতাবাসের সঙ্গে কথা হচ্ছে। তারা জানিয়েছেন, ওই দেশে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তাদের বিষয়ে কী হবে, তা নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। সম্ভবত তারা দেশে ফিরে আসবেন।
গত ১৯ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বাংলাদেশ যখন বিক্ষোভে উত্তাল, সে সময় তাতে সংহতি জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাস্তায় বিক্ষোভে নেমেছিলেন বাংলাদেশিরা। ২০ জুলাই সন্ধ্যায় দুবাই, শারজাহ ও আজমানের বিভিন্ন এলাকার সড়কে বিক্ষোভের সময় ৫৭ বাংলাদেশিকে আটক করে আমিরাতের পুলিশ। দুদিন পর দাঙ্গা, যোগাযোগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি এবং সম্পদহানির মত অভিযোগে তাদের তিনজনকে যাবজ্জীবন, একজনকে ১১ বছর এবং বাকি ৫৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেয় স্থানীয় আদালত। পরে এ ঘটনায় অন্তবর্তী সরকারের হস্তক্ষেপে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান দেশটির আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত ৫৭ জন বাংলাদেশি প্রবাসীকে ক্ষমা করে দেন।