■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
সেপ্টেম্বরে বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২৮ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকার বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যা ডলারের হিসাবে ৪৮ লাখ ডলার বা ২ দশমিক ৪০ বিলিয়ন (প্রতি ডলার ১২০ টাকা হিসাবে)।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, সদ্য বিদায়ী মাস সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। প্রতিদিন এসেছে ৮ কোটি ডলারের বেশি বা প্রায় ৯৬২ কোটি টাকা।
আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে ১৮ কোটি ডলার বেশি এসেছে। গত আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছিল ২২২ কোটি ৪১ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসের (সেপ্টেম্বর) তুলনায় ১০৭ কোটি ডলার বেশি এসেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স।
আলোচ্য সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৫৩ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার ডলার এসেছে। বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১০ কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৬৫ কোটি ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬২ লাখ ১০ হাজার ডলার।
কোনো রেমিট্যান্স আসেনি এমন ব্যাংকের সংখ্যা ৭টিতে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে- কমিউনিটি ব্যাংক, আইসিবি ব্যাংক, বিদেশি খাতের হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বিদায়ী মাস সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই রেমিট্যান্স আসার গতি ভালো ছিল। আমাদের প্রত্যাশা ছিল পুরো মাসে দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসবে। মাসের পুরো সময়ে ২ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে রেমিট্যান্সের পরিমাণ। এখন বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসার পেছনে ব্যাংকগুলোর সচেতনতা কাজ করছে। আবার বৈধ পথে ডলারের দর বৃদ্ধিতে হুন্ডি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এসব কারণে বাড়ছে রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ।
এর আগে দেশের ইতিহাসে একক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স ২৬০ কোটি ডলার এসেছিল ২০২০ সালের জুলাই মাসে। বছরওয়ারি হিসাবে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে ২০২০-২১ অর্থবছরে। ওই অর্থবছরে মোটি রেমিট্যান্স আসে ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার। আর চলতি বছরের জুন মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে মোট ২৫৪ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় দেশে এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২৯ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা। এটি এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, আগস্ট মাসের পুরো সময়ে দেশে বৈধপথে রেমিট্যান্স এসেছে ২২২ কোটি (২ দশমিক ২২ বিলিয়ন) ডলার। যা তার আগের বছরের (আগস্ট) একই সময়ের তুলনায় ৬২ কোটি ডলার বেশি। গত বছরের আগস্ট মাসে এসেছিল প্রায় ১৬০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে ১৯০ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স আসে। এছাড়া জুন মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ মার্কিন ডলার। মে মাসে আসে ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। এছাড়া এপ্রিলে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ, মার্চে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ এবং জানুয়ারিতে ২১১ কোটি ৩১ লাখ মার্কিন ডলার পাঠান প্রবাসীরা।