:: ফজলে রাব্বী ::
দেশে পণ্য আমদানি রপ্তানিতে অসামান্য অবদান রাখছে সিএন্ডএফ এজেন্টরা। আমদানি-রপ্তানি ব্যবস্থাপনায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজটি পালন করছেন তারা। করোনা মহামারীতেও দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে চালু রাখা হয় দেশের প্রায় সবগুলো বন্দর। বর্তমানের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ফজলে রাব্বীর সাথে একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কাস্টমস এজেন্টস এসোসিয়েশনের কাস্টমস সম্পাদক ও মরিয়ম এন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারী মো: বেলায়েত হোসেন ।
প্রশ্ন : কঠোর লকডাউনে বন্দরগুলোর কি অবস্থা?
বেলায়েত হোসেন : ১ জুলাই থেকে আবারও দেশে চলছে কঠোর লকডাউন। কিন্তু পণ্য আমদানি রপ্তানি থেমে নেই । দেশের বন্দরগুলো যথারিতি তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। সিএন্ডএফ এজেন্টদের এরই মধ্যে কার্যক্রম চালানোর জন্য গুরুত্বর্পূর্ণ দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। বাজেটের লক্ষমাত্রা পূরণে সবসময়ই আমরা কাজ করে যাচ্ছি ।
প্রশ্ন : করোনার প্রথম ধাক্কায় সিএন্ডএফ এজেন্টগুলো কাজ করেছে?
বেলায়েত হোসেন : বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারি কোভিড-১৯ যখন ভয়াবহ রুপ ধারন করে গত বছরের মার্চে তখন ফ্রন্ট লাইনারের মতোই সিএন্ডএফ এজেন্টরা করোনার ভয় উপেক্ষা করে কাজ করেছে। টেষ্ট কিট, ফেস মাস্কা, স্যানিটাইজার, জীবন রক্ষাকারী ঔষধ, খাদ্য দ্রব্য, গার্মেন্টস এর কাচামালসহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী বিভিন্ন বন্দর দিয়ে আমদানি হয়েছে, সেমসয় এসব পণ্য খালাস করে দেশের সুরক্ষার পাশাপাশি অর্থনীতির চাকা সচল রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছি আমরা।
প্রশ্ন : অর্থনীতির ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আপনারা কিভাবে অবদান রাখছেন।
বেলায়েত হোসেন : প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনার ভিশন ২১-২০৪১ এর লক্ষমাত্রা বাস্তবায়নে দেশের রাজস্ব বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সিএন্ডএফ এজেন্টরা নিরলস কাজ করছে। পাশাপাশি কাস্টমসের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবেও সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধিতে কাজ করছি। কোনো পণ্য আমদানি এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে আমদানি এবং রপ্তানিকারকরা সরাসরি কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেননা, সিএন্ডএফ এজেন্ট এবং ফ্রেইট ফরওয়াডিং এজেন্টের সহযোগীতায় তারা আমদানি এবং রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন।
প্রশ্ন : লাইসেন্সিং বিধিমালা নিয়ে আপনার বক্তব্য জানতে চাই।
বেলায়েত হোসেন : লাইসেন্সিং বিধিমালায় কিছু কালাকানুন করা হয়েছে, এতে কিছু ক্লজ সংযুক্ত করা হয়েছে যা এ পেশার সাথে সংশ্লিষ্টদের জন্য অত্যন্ত ভীতিকর। কাস্টমস কর্মকর্তাদের সাথে অসদাচারনের জন্য লাইসেন্সিং বিধিমালা-২০২০ এ লাইসেন্স বাতিলের কথা বলা হলেও বিধিমালায় অসদাচরনের সংজ্ঞা দেয়া হয়নি। অনেক সময় এসব ইস্যুতে হয়রানির স্বীকার হন এজেন্ট মালিকরা। অন্যায়ভাবে যেনো কেউ হয়রানির স্বীকার না হন সেবিষয়ে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
প্রশ্ন : মিস ডিক্লারেশনে পণ্য আসলে সে দায় কি সিএন্ডএফের?
বেলায়েত হোসেন : আমদানিকারকরা এলসি করে বিদেশ থেকে পণ্য নিয়ে আসলে সেটি খোলার এখতিয়ার নেই সিএন্ডএফের। কিন্তু কখনো যদি অবৈধ/ মিস ডিক্লারেশনে কোনো পণ্য পাওয়া যায় তখন কাস্টমস থেকে প্রতিবেদনে লিখা হয় সিএন্ডএফ এজেন্ট ও আমদানিকারকের যোগসাজোসে কাজটি করা হয়েছে। আমদানিকারক, ফ্রেইট ফরওয়াডিং এজেন্ট ব্যাংক বীমা এবং সিএন্ডএফ এজেন্ট এই চারটি সংস্থার মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালিত হলেও কোনো ধরনের অসংগতি হলে সিএন্ডএফ এজেন্টের এ আইন লকা করে দেয়া হয়। ন্যায় বিচারের স্বার্থে বিধিমালাটি সংশোধন করে সহজতর করলে সিএন্ডএফ এজেন্টরা নির্বিঘ্নে সরকারের রাজস্ব আহরনে সহযোগীতা করতে পারবেন।
প্রশ্ন : ঢাকা কাস্টমস এজেন্ট এসোসিয়েশন সদস্যদের জন্য কিভাবে কাজ করে?
বেলায়েত হোসেন : সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সদস্যরা সমস্যায় পড়লে আমরা আলোচনার মাধ্যমে , এইচএস কোডের বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করলে ঢাকা কাস্টমস হাউজের অতিরিক্ত কমিশনারের অধীনে একটি কমিটি গঠন করা হয়, সেখানে আমদানিকারক সিএন্ডএফ এজেন্টের যৌথ সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় পণ্যের এসএস কোড। এসোসিয়েশনের সদস্যদের জন্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ, প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করছি। পাশাপাশি ঢাকা, চট্রগ্রাম, বেনাপোল, মংলা, ভোমরা কাস্টমস এসোসিয়েশনের অনলাইন গ্রুপের মাধ্যমে সদস্যদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। আমরা স্বচ্ছতার ভিত্তিতে ব্যবসা করতে চাই। সরকারের রাজস্ব সুরক্ষা নিশ্চিতের চেষ্টা করে যাচ্ছি সবসময়।
প্রশ্ন : নাগরিক ডট নিউজকে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
বেলায়েত হোসেনঃ আপনাকেও ধন্যবাদ।