■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরের মিডিয়া সমন্বয়কারী ইমতিয়াজ সেলিমকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন ডিএমপি মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার তালেবুর রহমান।
ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ইমতিয়াজ সেলিমকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা রয়েছে। এছড়া পল্লবী ও খিলগাঁও থানার আরও দুটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি তিনি।
তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তাকে আদালতে হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন।
এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম গিয়ে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরকে ‘জঙ্গি সংগঠন’ উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম।
গত বছরের ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ইমতিয়াজ সেলিমকে গ্রেফতার করেছিল সিটিটিসি।
নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরের বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা ও গত বছরের এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত অনলাইন সমাবেশে বক্তব্য রাখা শীর্ষ নেতা ইমতিয়াজ সেলিম।
দীর্ঘদিন ধরে গোপনে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসা সংগঠনটি ফের আলোচনায় আসে গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর।
সরকার পতনের আন্দোলনেও তারা অংশ নিয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন সংগঠনটির মিডিয়া সমন্বয়ক ইমতিয়াজ সেলিম।
কিছুদিন আগে বিবিসি বাংলাদেশকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, সরকার পতন আন্দোলনে শুরু থেকেই তাদের কর্মীরা অংশ নেন। তবে তারা কোনো ব্যানার ব্যবহার করেননি।
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিনই ঢাকায় মিছিল করে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এরপর আরও নানা দাবিতে মিছিলের পাশাপাশি ঢাকায় গোলটেবিল বৈঠকও করেছে সংগঠনটি। চট্টগ্রামেও পালন করেছে নানা কর্মসূচি।
গত ৫ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন করার কথাও জানিয়েছে সংগঠনটি। তবে সরকারের তরফে কোনো বক্তব্য আসেনি।
২০০১ সালে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করে হিযবুত তাহরীর। এর নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইবিএর একজন শিক্ষক।
২০০৩ সালের একটি সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে হিযবুত তাহরীর। সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের প্রকাশ্য প্রচেষ্টায় সংগঠনটি যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে হিযবুত তাহরীর প্রচলিত রাষ্ট্র ব্যবস্থায় বিশ্বাস করে না। তারা প্রচলিত আইন মানে না বলেও প্রচারণা চালিয়ে আসছে। বর্তমান রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করে খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য দাওয়াতি কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। যার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে একধরনের সাম্প্রদায়িক উসকানি তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।
২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর হিযবুত তাহরীরকে আওয়ামী লীগ সরকার প্রেসনোট জারির মাধ্যমে নিষিদ্ধ করে। এরপর থেকে আত্মগোপনে থেকে সংগঠনটির নেতারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।