বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথ আউয়াল

■ ক্রীড়া প্রতিবেদক ■

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাচনে সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন তাবিথ আউয়াল। শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে দুপুর ২টা থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলে ভোট প্রদান।

১৩৩ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১২৮ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। ১২৩ ভোট পেয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন তাবিথ। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মিজানুর রহমান পেয়েছেন ৫ ভোট।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার মেজবাহ উদ্দিন আনুষ্ঠানিকভাবে সভাপতি পদে তাবিথ আউয়ালকে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।

গোলাম মোস্তফা, এস এ সুলতান ও কাজী সালাউদ্দিনের পর তাবিথ হলেন নির্বাচিত সভাপতি। এছাড়া স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আরও ১৩ জন মনোনীত প্রার্থী হয়ে সভাপতির পদে আসীন ছিলেন।

এর আগে ২০১২ ও ২০১৬ সালে তাবিথ আউয়াল সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন বাফুফের। ২০২০ সালে সহ-সভাপতি পদে টাই হয়েছিল। পুনরায় নির্বাচনে মহিউদ্দিন আহমেদ মহির কাছে চার ভোটে হেরে যান তিনি। 

এর আগে সিনিয়র সহসভাপতি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন ইমরুল হাসান। তাঁর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় এই পদে ভোটের প্রয়োজন পড়েনি। 

সদস্য পদে নির্বাচিত হলেন যারা

১৫ পদের বিপরীতে লড়েছেন ৩৭জন প্রার্থী। সদস্য পদে সর্বোচ্চসংখ্যক ভোট পেয়েছেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ইকবাল হোসেন। যেখানে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯২ ভোট পেয়ে চমক দেখিয়েছেন আমিরুল ইসলাম বাবু। সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান নারী উ্ইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তা্র কিরণ। ৮১ ভোট পেয়ে তিনি হয়েছেন অষ্টম। সর্বশেষ কমিটির সদস্য সত্যজিত দাস রুপু ৭৬ ভোট পেয়ে তালিকায় ১০ম স্থানে জায়গা পেয়েছেন তিনি।

প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন কামরুল হাসান হিল্টন। তিনি ৮০ ভোট পেয়ে হয়েছেন নবম। নতুন করে বাফুফে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন মো. গোলাম গাউছ। তিনি পেয়েছেন ৯২ ভোট; হয়েছেন তৃতীয়। এই পদে বাকি নির্বাচিতরা হলেন, মাহিউদ্দিন আহমেদ সেলিম (৮৮ ভোট), টিপু সুলতান (৮৭ ভোট), মঞ্জুরুল করিম (৮৬ ভোট), জাকির হোসেন চৌধুরী (৮২ ভোট), ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ (৭২ ভোট), মো. ছাইদ হাসান কানন (৬৭ ভোট), সাখাওয়াত হোসেন ভূইয়া শাহিন (৬৬ ভোট), বিজন বড়ুয়া (৬২ ভোট)।

এদিকে সদস্য পদে দুইজন প্রার্থী মো. এখলাস উদ্দিন ও মো. সাইদুর রহমান মনি সমানসংখ্যক ৬১টি ভোট পেয়েছেন। যে কারণে তাদের মধ্য থেকে যে কোনো একজনকে নির্বাচিত করতে পুনরায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত।

আলোচিত, বিতর্কিত ও ফিফা থেকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ আবু নাইম সোহাগের স্ত্রী তাসমিয়া রেজোয়ানা পেয়েছেন ৩৪ ভোট। তবে তিনি নির্বাচিত হতে পারেননি। 

উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সাল থেকে ক্রীড়াঙ্গনে শুরু হয় নির্বাচনী ব্যবস্থা। বাফুফের প্রথম সভাপতি ছিলেন এসএ সুলতান। তার পর দ্বিতীয় সভাপতি হন কিংবদন্তি ফুটবলার কাজী সালাউদ্দিন। টানা ৪ মেয়াদে দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থার সভাপতি ছিলেন তিনি। তাবিথ বাফুফের তৃতীয় নির্বাচিত সভাপতি। ভোটের হিসেবে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন তাবিথ।

এবারের নির্বাচনে সভাপতি, সহ-সভাপতি, সদস্য পদে ভোট হয়েছে। ২০ পদের বিপরীতে প্রার্থী সংখ্যা ৪৫ জন। ১৫ নির্বাহী সদস্যের বিপরীতে প্রার্থী ৩৭ জন, ৪ সহ-সভাপতি পদে ৬ জন ও সভাপতি পদে ২ জন রয়েছেন। আর সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে ইমরুল হাসান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

কাজী সালাউদ্দিনের বিদায়ী সভায় ২০২৫ সালের প্রস্তাবিত বিশাল অঙ্কের বাজেট উপস্থাপন করা হলেও পাস হয়নি। ফুটবল ফেডারেশন নির্বাচনের ইতিহাসে বাজেট পাস না হওয়ার নজির এবারই প্রথম। এর আগে যতবার বাজেট হয়েছিল নির্বাচনী কংগ্রেসে সেটা পাসও হয়।

এদিন কংগ্রেসে ৬১ কোটি ৫২ লাখ ৮১ হাজার ২০ টাকার বাজেট প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে। এর মধ্যে ঘাটতি দেখানো হয় ১৪ কোটি  টাকা। উপস্থিত সদস্যরা এমন বাজেট পাস করার জন্য সায় দেননি। নতুন করে সভা ডেকে তা পাস করার দিকে জোর দিয়েছেন।

কাজী সালাউদ্দিনের আমলে এর আগে স্বতন্ত্র থেকে ২০১২ এবং ২০১৬ সালের নির্বাচনে দুইবার সহসভাপতি পদে নির্বাচিত হন তাবিথ।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *