■ নাগরিক নিউজ ডেস্ক ■
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পাঁচ প্রার্থী আইনপ্রণেতা হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বেসরকারি ফলাফল এবং স্থানীয় কমিউনিটি এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিজয়ী বাংলাদেশিরা হলেন- নিউজার্সি প্লেইন্স বরো টাউনশিপের কাউন্সিলম্যান ড. নুরান নবী, নিউ হ্যাম্পশায়ার স্টেট রিপ্রেজেনটেটিভ আবুল খান, কানেকটিকাট স্টেট সিনেটর মাসুদুর রহমান, জর্জিয়া স্টেট সিনেটর পদে ডেমোক্রাট প্রার্থী শেখ এম. রহমান ও একই স্টেটের অপর ডিস্ট্রিক্ট থেকে সিনেটর নাবিলা ইসলাম।
এ ছাড়া পেনসিলভানিয়া, মিশিগান, নিউজার্সিসহ অন্যান্য অঙ্গরাজ্যের বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি-আমেরিকান কাউন্টি ও অন্যান্য পর্যায়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। তবে তদের ফলাফল এখনো জানা যায়নি।
নির্বাচিতদের মধ্যে পঞ্চম মেয়াদে নির্বাচিত হয়েছেন কাউন্সিলম্যান ড. নুরান নবী। তিনি নিউজার্সি প্লেইন্স বরো টাউনশিপ থেকে প্রথম নির্বাচিত ২০০৭ সালে। এরপর টানা ১৪ বছর ধরে এ পদে আছেন। এ ছাড়া ৬ বারের মতো দেশটির নিউ হ্যাম্পশায়ার অঙ্গরাজ্যের আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আবুল বি খান। এ নিয়ে ছয়বার আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হলেন তিনি।
আবুল খান বলেন, ‘আমি খুবই আপ্লুত। মানুষ আমাকে ছয়বারের মতো সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত করেছেন। আমি রিপাবলিকান থেকে পাস করলেও এখন আমি সর্বস্তরের, সব দলের মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করব। আমাদের সরকার সব সময়ই কর না বাড়ানোর পক্ষে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের উন্নতির পক্ষে। আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করব।’
এদিকে ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার খবর সামনে আসতেই তার শপথ অনুষ্ঠান নিয়ে কর্মসূচি ঠিক করতে শুরু করেছেন সমর্থকরা। নিয়মানুযায়ী আগামী ২০ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে তার শপথ অনুষ্ঠিত হবে। আমেরিকার সাংবিধানিক রীতি অনুযায়ী নভেম্বরের প্রথম সোমবারের পর দিন মঙ্গলবার দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এবং জানুয়ারির ২০ তারিখে প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
পরিকল্পনা, নির্বাচনী প্রক্রিয়া এবং আইনি ও পদ্ধতিগত সুরক্ষাসহ বেশ কয়েকটি কারণে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও শপথ গ্রহণের মধ্যে কিছুটা সময়ের ব্যবধান রাখা হয়েছে। নতুন সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের জন্য এই সময়টা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনে মোট ৫৩৮টি ইলেক্টোরাল ভোটের মধ্যে যিনি অর্ধেকের বেশি ২৭০টি পাবেন, তিনিই হন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। আর ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশ সময় বুধবার বিকাল পাঁচটায় এই ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছে যান। দেশটির নির্বাচনে ফল নির্ধারণী ব্যাটেলগ্রাউন্ড রাজ্য খ্যাত জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলিনা, ফ্লোরিডা, মেইন, পেনসিলভানিয়া, উইসকনসিনে লাল শিবিরের জয়ে হোয়াইট হাউসের মসনদ নিশ্চিত হয় ট্রাম্পের।
ট্রাম্প জয়ের পাশাপাশি তিনি ভেঙেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ১৩২ বছরের রেকর্ড।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগে মার্কিন রাজনীতির ইতিহাসে পরাজয়ের পর জয় পেয়েছেন একজনই, তিনি গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড। ১৮৮৪ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ১৮৮৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডেমোক্র্যাটদের পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশ নেন তিনি। কিন্তু সেই নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী বেঞ্জামিন হ্যারিসনের কাছে হেরে যান ক্লিভল্যান্ড। পরে ১৮৯২ সালে আবার নির্বাচনে অংশ নেন। হ্যারিসনকে হারিয়ে আবারও হোয়াইট হাউজের ক্ষমতায় বসেন ক্লিভল্যান্ড। আমেরিকার ২২তম ও ২৪তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি।
এই নজির অনুসরণ করে এবার ডোনাল্ড ট্রাম্পও দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হলেন। এর ফলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম ও ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হলেন।
এ ছাড়াও বাইডেনের পর তিনিই সবচেয়ে বয়স্ক মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন। ট্রাম্পের বয়স এখন ৭৮ বছর। এর আগে বাইডেন দায়িত্ব নিয়েছিলেন ৭৭ বছর বয়সে।