■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. মইনুল ইসলামকে বিমানবন্দরে আটক করেছে পুলিশ। স্ত্রীসহ কানাডার উদ্দেশে যাওয়ার সময় বিমানবন্দরে তাকে আটক করা হয়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন থেকে তাকে আটক করে ইমিগ্রেশন পুলিশ। আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) পক্ষ থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
ইমিগ্রেশন থেকে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় তার সঙ্গে তার স্ত্রী ও কন্যা ছিলেন।
এমিরেটস এয়ারলাইনসের (ইকে-৫৮৭) ফ্লাইটে ৬টা ২৫ মিনিটে দুবাই হয়ে কানাডার টরন্টো যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু ৫টা ৩০ মিনিটে ইমিগ্রেশন পুলিশের একটি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে ক্লিয়ারেন্স চাইতে গেলে দেওয়া হয়নি। পরে তাকে আটকে দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মইনুল ইসলাম বিমানবন্দরে গিয়ে ইমিগ্রেশন পার হওয়ার পর গোয়েন্দারা জানতে পারেন একটি কমিশনে তার সাক্ষ্য দেওয়ার বিষয় রয়েছে। এ কারণে তাকে এ মহূর্তে বিদেশে যেতে না দিতে বলা হয়। তাদের কথা অনুযায়ীই মঈনুল ইসলামকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহ ও পিলখানায় নৃশংস হত্যাযজ্ঞে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। এর ৪৮ ঘণ্টার মাথায় বাহিনীটির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পান মইনুল ইসলাম।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. মইনুল ইসলাম ২০০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১০ সালের ৯ মে পর্যন্ত তৎকালীন বিডিআর-এর মহাপরিচালক ছিলেন। বিডিআর বিদ্রোহে নিহত মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের পর তিনি দায়িত্ব নেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।
মইনুল ইসলাম ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামের ভাই।
তিনি মহাপরিচালকের দায়িত্ব পাওয়ার পর বাহিনীটির ইউনিফর্ম পরিবর্তন হয় এবং সীমান্ত বাহিনীতে যোগ করা হয় একটি গোয়েন্দা ইউনিট। পরে লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে উন্নীত করা হয় তাকে এবং সেনাবাহিনী সদর দপ্তরে জেনারেল স্টাফ করা হয়।
২০১৫ সালের জুলাইয়ে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার হন মইনুল ইসলাম। পরের বছর ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন। বিজিবির মহাপরিচালক পদে যোগদানের আগে জাতীয় প্রতিরক্ষা কলেজ বাংলাদেশের আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্সের (এএফডব্লিউসি) প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
উল্লেখ্য, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত এবং আসল ঘটনা খুঁজে বের করতে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এতে একজনকে সভাপতি ও ছয়জনকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। সোমবার রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
কমিশনের সভাপতি করা হয়েছে- মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমানকে। আর সদস্য হিসেবে আছেন- মেজর জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. সাইদুর রহমান (বীর প্রতীক), অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব মুন্সী আলাউদ্দিন আল আজাদ, অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি ড. এম. আকবর আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. শরীফুল ইসলাম ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহনেওয়াজ খান চন্দন।