তিন দফা দাবিতে সচিবালয়ের সামনে অনশনে জবি শিক্ষার্থীরা

■ নাগরিক প্রতিবেদক ■

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে সচিবালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অনশন কর্মসূচি শুরু করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে গণ পদযাত্রা শুরু করে সচিবালয়ের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তায় বিছানা চাদর বিছিয়ে অনশন শুরু করে শিক্ষার্থীরা।

১ ঘণ্টার আল্টিমেটামের মধ্যে সংশোধিত নতুন চিঠি না আসায় তাঁরা এ আন্দোলনে নেমেছেন। সচিবালয়ের সামনে প্রায় ৫০০-৭০০ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ দেখা গেছে। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘এক দুই তিন চার, ক্যাম্পাস আমার অধিকার’, ‘আমার ভাই অনশনে, প্রশাসন কি করে’, ‘বিপ্লবে বলীয়ান, নির্ভীক জবিয়ান’সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন।

অনশনরত ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘আল্টিমেটাম অনুযায়ী নবায়ন করা চিঠি না আসায় আমরা সচিবালয়ের সামনে এসেছি। এখানে আমরা আমাদের অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’

অনশনরত শিক্ষার্থী রায়হান রাব্বি  বলেন, আমরা আমাদের দাবির কথা জানিয়েছি। আমাদের দাবি না মেনে নিলে আমরা রাজপথ ছাড়ছি না। আমাদের দাবি মেনে নিবে আগামী বুধবারের মিটিংয়ে -এ মর্মে লিখিত অঙ্গিকার দিতে হবে। পরে আমরা অনশন ভাঙব। স্বাক্ষর হওয়া আগ পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

শাহবাগ জোন ট্রাফিকের সহকারী কমিশনার মেহেদি হাসান শাকিল বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আজ বিকাল ৫টার দিকে সচিবালয়ের সামনে রাস্তা অবরোধ করে। এখন (সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিট) পর্যন্ত ওই রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।’

দুপুর দুইটায় সেনাবাহিনীকে দ্বিতীয় ক্যম্পাসের কাজ হস্তান্তর নিয়ে সচিবালয় থেকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন বলেন, ‘আগামী বুধবার শিক্ষা মন্ত্রনালয়, ইউজিসি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ও দাবি পূরণের রুপরেখা আসবে বলে জানিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।’

এর আগে গতকাল রোববার তিন দফা আন্দোলনে অনশন শুরু করে শিক্ষার্থীরা।

তাদের দাবি- দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তর করা; শিক্ষার্থীদের অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা; অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত অন্তত ৭০ ভাগ শিক্ষার্থীক আবাসন ভাতা দিতে হবে। 

রোববার সারাদিন ও সারারাত অনশন করে ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর আজ সোমবার সকাল থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ করে শাটডাউন কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি

১) সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে স্বাক্ষর করতে হবে। প্রয়োজনে স্পেশাল মিটিং এর মাধ্যমে তা সম্পূর্ণ করতে হবে এবং ভিজ্যুয়াল ভাবে সকলের সামনে তা উপস্থাপন করতে হবে। শিক্ষার্থীরা অনশনে থাকাবস্থায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার নিয়ে তা প্রকাশ করতে হবে। কয়েক মাস সময় নেওয়ার নাম করে কোনো প্রকার দীর্ঘসূত্রতার বন্দোবস্ত করা চলবে না।

২) পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে।

৩) যত দিন অবধি আবাসন ব্যবস্থা না হয় তত দিন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *