চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৪ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

■ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ■

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকের ওপর হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৮৪ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণে আয়োজিত স্মরণসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ৭৩ জনকে বহিষ্কারের কথা জানান উপ-উপাচার্য। পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মোট ৮৪ জনের বহিষ্কারাদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের হামলা ও আহত করা এবং শাটল ট্রেনে আটকে রাখার অভিযোগে ৭৩ জনকে এবং সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগে ১১ জনকে প্রাথমিক বহিষ্কার আদেশ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক সমিতির অভিযোগের ভিত্তিতে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি এই ৮৪ জনের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে। তাদের বিভাগ ও স্থায়ী ঠিকানায় চিঠি পাঠানো হবে।’
 
অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আরও বলেন, ‘অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যাখ্যা করার জন্য তাদের ১৫ দিন সময় দেওয়া হবে। কেউ নির্দোষ প্রমাণিত হলে বহিষ্কারাদেশ বাতিল করা হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে কাদের বহিষ্কার করা হয়েছে, এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য জানায়নি কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, বহিষ্কারের কোনো চিঠি এখন পর্যন্ত ইস্যু হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনের সদস্যসচিব অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, বহিষ্কারের বিষয়ে আজ তিনি কিছু জানাবেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে আছেন। আগামীকাল বহিষ্কারের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরবেন।

এর আগে গত ১৪ জুলাই রাতে আর ১৫ জুলাই দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হামলার অভিযোগ উঠেছিল। একই দিন কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফিকে শাটল ট্রেন থেকে তুলে নিয়ে মারধরের ঘটনা ঘটে। পাশাপাশি আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের মুঠোফোন তল্লাশি চালিয়ে মারধরের অভিযোগও উঠেছিল। এ ছাড়া ৩১ জুলাই এক শিক্ষকের বাসায় বোমা হামলা ও ক্যাম্পাসে কর্মরত দৈনিক পূর্বদেশ-এর সাংবাদিক শাহ রিয়াজকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।

এর আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হলগুলোর প্রভোস্ট, বিভিন্ন পর্ষদের পরিচালক ও প্রশাসকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। 

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *