সেনা হেফাজতে যুবদল নেতা হত্যার বিচার দাবি

■ নাগরিক প্রতিবেদক ■

কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর হাতে আটক যুবদল নেতার মৃত্যুর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মানবাধিকার সংগঠন। তারা বলেছে, এ ধরনের ঘটনা মানবাধিকার ও আইনের শাসনের পরিপন্থী। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্তদের চিহ্নিত করে যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

আজ শনিবার গণমাধ্যমে পৃথক বিবৃতি পাঠিয়ে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করা হয়েছে।

এদিকে, কুমিল্লায় সেনা হেফাজতে যুবদল নেতা মো. তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পের কমান্ডারকে প্রত্যাহার করেছে সেনাবাহিনী। আজ শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।

আইএসপিআর বলেছে, গত ৩০ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) দিবাগত রাত ৩টায় ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগের’ ভিত্তিতে যৌথবাহিনীর অভিযানে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলা থেকে মো. তৌহিদুল ইসলাম (৪০) আটক হন। পরদিন দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক’ ঘটনা তদন্তে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সেনা ক্যাম্পের কমান্ডারকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ উদ্‌ঘাটনে উচ্চপদস্থ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সেনা আইন অনুযায়ী যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তৌহিদুল ইসলাম চট্টগ্রাম বন্দরের একটি শিপিং এজেন্টের কর্মী ছিলেন। তিনি কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের পাঁচথুবী গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে এবং ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক। তাঁর স্ত্রী ও চার মেয়ে রেখেছেন।

পারিবারিক সূত্র জানায়, বাবার মৃত্যুর খবর শুনে গত রোববার বাড়ি আসেন তৌহিদুল। গতকাল শুক্রবার তাঁর বাবার কুলখানি হওয়ার কথা ছিল।

তৌহিদুল ইসলামের ভাই আবুল কালাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে সেনাবাহিনীর ৩টি গাড়ি ও একটি লাল রঙের গাড়ি বাড়িতে আসে। তৌহিদুল ইসলামের কাছে অস্ত্র আছে— এমন অভিযোগে তাঁকে ধরে নিয়ে যায় তাঁরা।

আবুল কালাম বলেন, ‘আমার ভাই কখনই অস্ত্র আনতে পারে না। তার সম্পর্কে আমাদের পুরো এলাকা খুব ভালো করে জানে। আমরা বারবার বলার পরেও তাঁরা আমার ভাইকে নিয়ে যায়। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ আমাদের জানায়, তাকে গোমতী পাড়ের গোমতী বিলাশ নামক স্থান থেকে তাঁরা উদ্ধার করেছে। সে নাকি হাসপাতালে আছে। আমরা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তাঁর লাশ দেখি। তার শরীরে বেদম মারের আঘাতের চিহ্ন আছে।’

যুবদল নেতার মৃত্যুতে জড়িত সেনা সদস্যদের বিচার চেয়েছে বিএনপি। ফেসবুকে পৃথক পোস্ট দিয়েছেন বিএনপি ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রাষ্ট্র কর্তৃক আটক ব্যক্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব

আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এক বিবৃতিতে বলেছে, এ ধরনের ঘটনা মানবাধিকার ও আইনের শাসনের পরিপন্থী। রাষ্ট্র কর্তৃক আটক ব্যক্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আসক এ ঘটনার স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও দ্রুত বিচারিক তদন্ত দাবি করছে এবং দায়ীদের যথাযথ আইনানুগ শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছে। একই সঙ্গে নিহত ব্যক্তির পরিবারকে ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) সব ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনায় সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছে।

পৃথক বিবৃতিতে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) বলেছে, নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে আনা নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগের বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত, যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটকের পর নির্যাতনে মৃত্যুর ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জবাবদিহি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের মানবাধিকার ও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। এমএসএফ এ ক্ষেত্রে মো. তৌহিদুল ইসলামের নির্যাতনে মৃত্যুর বিষয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে অনতিবিলম্বে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছে।

এদিকে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে এ ধরনের অমানবিক নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দেশবাসীর জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয় বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ। গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি বলেন, বিগত দিনে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে এ ধরনের গুম, খুন, নির্যাতন, আয়নাঘর, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড জাতি দেখেছে। দেশবাসী আশা করেছিল অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ওই পরিস্থিতির অবসান হয়ে একটা ন্যায় ও বিচারভিত্তিক সমাজ গড়ে উঠবে। অথচ যৌথ বাহিনীর হাতে এই বর্বর নির্যাতন ও মৃত্যুর ঘটনা আমাদের হতবাক করল। বাসদের পক্ষ থেকে অবিলম্বে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করে যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মানুষের জানমাল, বিচার পাওয়ার অধিকার ও জীবনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হলে গণ–অভ্যুত্থানের চেতনাই বিনষ্ট হবে। তাই এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধে জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ নেওয়া এবং সামাজিক নিরাপত্তা ও বিচারের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বিচারবহির্ভূত হত্যা দুর্ভাগ্যজনক

কুমিল্লার যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামকে সাদাপোশাকধারী লোকেরা ‘নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে হত্যা করেছে’ বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই সঙ্গে সরকার ও প্রশাসনে ঘাপটি মারা আওয়ামী দোসররা এ ঘটনা ঘটিয়েছে কি না, সেটার অনসুন্ধান জরুরি বলেও মনে করেন ফখরুল।

আজ শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, কুমিল্লা সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলামকে সাদাপোশাকধারী লোকেরা বাসা থেকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে হত্যা করেছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থিত অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে এ ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যা দুর্ভাগ্যজনক। বিচারবহির্ভূত এমন হত্যার ঘটনায় দেশবাসী হতবাক হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা জনমনে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। সরকার ও প্রশাসনে আওয়ামী দোসররা ঘাপটি মেরে থেকে রক্তাক্ত ঘটনা ঘটাচ্ছে কি না, সেটি নিয়ে গভীর অনুসন্ধান জরুরি।

মির্জা ফখরুল বলেন, কোনো সরকারি বাহিনীই আইন হাতে তুলে নিতে পারে না। অপরাধ সংঘটনকারী যতই শক্তিশালী হোক, তাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া আইনের শাসনের অন্যতম শর্ত। বিচারবহির্ভূতভাবে নির্যাতন করে হত্যা করার কোনো অধিকার সরকারি বাহিনীগুলোর নেই।

বিবৃতিতে তৌহিদুল ইসলামকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানান মির্জা ফখরুল। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবিও জানান বিএনপির মহাসচিব।

শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, কুমিল্লার যুবদল নেতার এ নির্মমতা আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলকেই মনে করিয়ে দেয়। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম অঙ্গীকার হলো গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যা থেকে জাতিকে মুক্তি দেওয়া, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের ভয়ভীতি থেকে দেশবাসীকে নিরাপদ রাখা। কিন্তু আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের যদি পুনরাবৃত্তি হয়, তাহলে আবারও দেশে নৈরাজ্যের অন্ধকার নেমে আসবে। মানুষ এক অজানা আশঙ্কায় দিনাতিপাত করবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বেআইনি হত্যা করে কখনোই সমাজে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করা যায় না। এতে আইনের শাসনকে চরমভাবে অবজ্ঞা করা হয় এবং দেশকে ঠেলে দেওয়া হয় আদিম অন্ধকারের দিকে।

সেনা হেফাজতে যুবদল নেতা হত্যার বিচার দাবি

যুবদল নেতা তৌহিদুল হত্যার বিচারের দাবি ছাত্র ফ্রন্টের

বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ ও সেনাবাহিনীর হাতে যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলাম হত্যার বিচারের দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ ও সাধারণ সম্পাদক রায়হান উদ্দিনের দেয়া বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যৌথবাহিনীর হাতে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়েছে। অতীতের ধারাবাহিকতায় বর্তমান সময়েও রাষ্ট্রীয় এই বাহিনী বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ দমনপীড়ন বহাল রেখেছে। জুলাইয়ের ছাত্র-শ্রমিক, জনতার অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হলেও রাষ্ট্রীয় বাহিনীর নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধ হয়নি। আমরা দেখছি ন্যায্য দাবিতে শ্রমিক, শিক্ষক, ছাত্ররা আন্দোলনে নামলে পুরোনো কায়দায় সব আন্দোলনে হামলা করছে সরকারি বাহিনী। একইভাবে সেনাবাহিনী বিভিন্ন জায়গায় যথেষ্ট ক্ষমতার ব্যবহার করে জনগণের ওপর দমন পীড়ন নামিয়ে আনছে। তার সর্বশেষ নজির এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর এমন কাজ অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। যা গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে গড়ে ওঠা জনগণের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থি। 

বিবৃতিতে অবিলম্বে মো. তৌহিদুল ইসলামের হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত এবং বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

তৌহিদুল হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে মশাল মিছিল করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন

কুমিল্লায় সেনাবাহিনীর অভিযানে আটক যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে মশাল মিছিল করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। এসময় তারা তৌহিদুল হত্যাসহ সব বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানান। 

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় মশাল মিছিল করেন ছাত্র ফেডারেশনের নেতাকর্মীরা। মিছিলটি রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে টিএসসি সড়কদ্বীপে গিয়ে শেষ হয়। 

সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ বলেন, গুম-খুন-বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে হাসিনা তার ফ্যাসিস্ট শাসন জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষ সেই ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াই করেছেন যার ধারাবাহিকতায় জুলাইয়ে অভ্যুত্থানের মধ্যে হাজারো প্রাণের বিনিময়ে হাসিনার পতন হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ এমন একটা দেশের স্বপ্ন দেখেছে যেখানে ফ্যাসিবাদী শাসনের কোনো চিহ্ন থাকবে না। গুম-খুন-বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থাকবে না। মানুষের মত প্রকাশের, চিন্তার স্বাধীনতা থাকবে। 

তিনি আরও বলেন, কিন্তু বর্তমান সরকারের আমলেও আমরা সেই স্বাধীনতা পাচ্ছি না। বিভিন্নভাবে বিরোধী মতের মানুষের ওপর মব তৈরি করা হচ্ছে। মবের মাধ্যমে কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে কিন্তু বিচার আমরা দেখিনি। মবের মাধ্যমে নারীদের ফুটবল খেলার আয়োজন ও মাজারে হামলা চালানো হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে সরকার যথাযথ অবস্থান না নিয়ে মবকে উস্কো দিচ্ছে।

সব বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জানিয়ে সৈকত আরিফ বলেন, যৌথবাহিনীর অভিযানে আটক যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যু হয়েছে। আমরা অবিলম্বে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি। একইসঙ্গে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে বিচার বহির্ভূত সব হত্যাকাণ্ড ও জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যার তদন্ত ও বিচারে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

মশাল মিছিলে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা রহমান বিথী, সাংগঠনিক সম্পাদক শুভ দেব, প্রচার সম্পাদক মহব্বত হোসেন মিলন, স্কুল বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক আরমানুল হক, ঢাকা নগরের সভাপতি আল-আমিন রহমান প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *