■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিককে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে হঠাৎ পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন তিনি।
সন্ধ্যায় আরেফিন সিদ্দিকের ছোট ভাই শাকরিন সিদ্দিক গণমাধ্যমকে বলেন, তিনি সুস্থই ছিলেন। দুপুর সোয়া ২টার দিকে ব্যাংকের বুথে গিয়ে টাকাও তুলেছেন। এরপর তিনি ঢাকা ক্লাবে (রমনায়) যান এবং সেখানে দাঁড়িয়ে কথা বলার মধ্যেই পড়ে যান। সেটা আনুমানিক ২টা ৪০ মিনিটের মতো হতে পারে।
বর্তমান শারীরিক অবস্থার বিষয়ে তিনি জানান, তাকে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শুরুর পর তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। তাকে ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়েছে। আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সুস্থতা কামনা করে সবার কাছে দোয়া চেয়েছে তার পরিবার।
হাসপাতালে দায়িত্বরত এক চিকিৎসক বলেন, বিকেল তিনটার দিকে তাকে বারডেমে ভর্তি করা হয়। এখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানা যায়, তিনি মাথায় আঘাত পেয়েছেন এবং স্ট্রোক করেছেন। প্রথমে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয় এবং অবস্থার অবনতি হলে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক খান তার ফেসবুকে এক বার্তায় বলেন, আমাদের প্রিয় শিক্ষক অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক স্যার আজ হঠাৎ করে মাটিতে পড়ে গিয়ে ব্রেনে আঘাত পেয়ে এখন ইব্রাহিম কার্ডিয়াকের নিউরোসায়েন্স ইউনিটের আইসিইউতে আছেন। সবাই স্যারের জন্য দোয়া করবেন এবং অন্যদের দোয়া করতে বলবেন যাতে আল্লাহপাক স্যারকে দ্রুত শেফা দান করেন।
২০০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিককে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন। তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। ২০১৭ সালের ৪ সেপ্টেম্বর তিনি উপাচার্যের দায়িত্ব পালন শেষ করে পুনরায় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। ২০২০ সালের জুন মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ২০২০ সালের ১৫ জুলাই তাকে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক ১৯৯৩ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ে তিনি পদাধিকারবলে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপনা পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক, ১৯৯৪ ও ১৯৯৬ সালে সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০৪ ও ২০০৫ সালে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৭ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া স্পেনের রাজার পক্ষ থেকে ২০১১ থেকে ২০১২ সালে নারী উন্নয়ন, নারী শিক্ষা ও সামগ্রিক সামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রমে নেতৃত্বের স্বীকৃতি হিসেবে এই শিক্ষাবিদ ‘অর্ডার অব সিভিল মেরিট’-এ ভূষিত হন।