■ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ■
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। ফলে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হলেও তা করা সম্ভব হয়নি।
শুক্রবার (৭ মার্চ) ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, তাঁর ব্রেইনের অবস্থা গতদিনের তুলনায় কিছুটা অবনতি হয়েছে। যার ফলে অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয়নি। কিছুটা উন্নতি হলে তাকে অপারেশনের জন্য নেওয়া হবে।
অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে নিউরোসার্জন অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ডা. নজরুল বলেন, ‘ব্লাড প্রেসার ঠিক আছে। রক্ত দেওয়ার পর প্ল্যাটিলেট কাউন্ট এক লাখের বেশি। ইউরিন আউটপুট স্বাভাবিক; হার্টের অবস্থা ঠিক আছে। কিন্তু ব্রেইনের অবস্থা গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতের চেয়ে কিছুটা অবনতি হয়েছে। প্রায় কোনো রেসপন্স পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে অপারেশনের প্রস্তুতি নেওয়া যাচ্ছে না। ব্রেইনের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে অপারেশনের প্রক্রিয়া করা যাবে।’
দুপুরে সাবেক এই উপাচার্যকে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান দেখতে যান। এ সময় তিনি সাবেক উপাচার্যের শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসার খোঁজখবর নেন এবং দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন। উপাচার্যের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ ও পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক মাটিতে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান। পরে তাকে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। পরে তাৎক্ষণিক তাকে বারডেমে আনা হয়। এখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানা যায়, তিনি মাথায় আঘাত পেয়েছেন এবং স্ট্রোক করেছেন।
২০০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিককে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন। তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। ২০১৭ সালের ৪ সেপ্টেম্বর তিনি উপাচার্যের দায়িত্ব পালন শেষ করে পুনরায় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। ২০২০ সালের জুন মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ২০২০ সালের ১৫ জুলাই তাকে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক ১৯৯৩ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ে তিনি পদাধিকারবলে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপনা পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক, ১৯৯৪ ও ১৯৯৬ সালে সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০৪ ও ২০০৫ সালে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৭ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া স্পেনের রাজার পক্ষ থেকে ২০১১ থেকে ২০১২ সালে নারী উন্নয়ন, নারী শিক্ষা ও সামগ্রিক সামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রমে নেতৃত্বের স্বীকৃতি হিসেবে এই শিক্ষাবিদ ‘অর্ডার অব সিভিল মেরিট’-এ ভূষিত হন।