■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
ভারতীয় স্থল শুল্ক স্টেশন ব্যবহার করে বন্দর ও বিমানবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির জন্য বাংলাদেশকে দেওয়া দীর্ঘদিনের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বাংলাদেশের এই সুবিধা বাতিল করেছে।
ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার এমন এক সময়ে ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশকে দেওয়া সুবিধা বাতিল করল, যার কয়েক দিন আগে ভারত, বাংলাদেশসহ বিশ্বের কয়েক ডজন দেশ ও অঞ্চলের বিরুদ্ধে উচ্চমাত্রার শুল্ক আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
এর আগে, ভারতের রপ্তানিকারকরা প্রতিবেশী বাংলাদেশকে দেওয়া এই সুবিধা প্রত্যাহারের জন্য নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার (পিটিআই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এই সুবিধার ফলে ভুটান, নেপাল এবং মিয়ানমারের মতো দেশে বাংলাদেশের রপ্তানির জন্য বাণিজ্য প্রবাহ বাধাহীন ছিল। ভারত ২০২০ সালের জুনে বাংলাদেশকে পণ্য রপ্তানির এই সুবিধা দিয়েছিল।
৮ এপ্রিল জারি করা ভারতের কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘‘২০২০ সালের ২৯ জুনের জারি করা সার্কুলার বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংশোধিত এই সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে। তবে আগের সার্কুলারের প্রক্রিয়া অনুযায়ী ইতোমধ্যে ভারতে প্রবেশ করা বাংলাদেশি কার্গোকে ভারতীয় অঞ্চল ত্যাগ করার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।’’
আগের বিজ্ঞপ্তিতে ভারতীয় বন্দর ও বিমানবন্দরগুলোতে যাওয়ার পথে দেশটির স্থল শুল্ক স্টেশন (এলসিএসএস) ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় দেশে রপ্তানি কার্গো ট্রান্সশিপমেন্টের অনুমতি দেওয়া হতো। ভারতীয় বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের সরকারের এই সিদ্ধান্ত পোশাক, পাদুকা, রত্ন এবং গহনার মতো কয়েকটি ভারতীয় রপ্তানি খাতের জন্য সহায়ক হবে।
বিশ্ব বাণিজ্যে পোশাক খাতে ভারতের অন্যতম বড় প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ। ভারতীয় রপ্তানিকারকদের সংগঠন ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনসের (এফআইইও) মহাপরিচালক অজয় সাহাই বলেছেন, ‘‘এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন আমাদের কার্গো পরিব্হনে অতিরিক্ত সক্ষমতা থাকবে। অতীতে রপ্তানিকারকরা বাংলাদেশকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দেওয়ার কারণে বন্দর ও বিমানবন্দরে স্থান কম পাওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করতেন।’’
এর আগে, ভারতের পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন এইপিসি বাংলাদেশকে দেওয়া সুবিধার আদেশ স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছিল। ওই সুবিধার ফলে দিল্লি এয়ার কার্গো ভবনের মাধ্যমে বাংলাদেশের রপ্তানি কার্গো তৃতীয় দেশে ট্রান্স-শিপমেন্টের অনুমতি পেতো।
এপিসির চেয়ারম্যান সুধীর সেখরি বলেছেন, প্রত্যেক দিন গড়ে প্রায় ২০ থেকে ৩০টি পণ্যবাহী ট্রাক দিল্লিতে আসে। যা কার্গোর চলাচল ধীর করে দেয় এবং এয়ারলাইন্সগুলো এই ধীরগতির কারণে অযৌক্তিক সুবিধা নিচ্ছে।
ভারতীয় থিঙ্ক ট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের (জিটিআরআই) প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, এই সুবিধা প্রত্যাহার করায় বাংলাদেশের রপ্তানি ও আমদানি কার্যক্রম ব্যাহত হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, পূর্ববর্তী প্রক্রিয়ায় ট্রানজিটের সময় এবং ব্যয় হ্রাস করার লক্ষ্যে ভারতের ভেতর দিয়ে একটি বাধাহীন রুটের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এখন এই সুবিধা বাতিল হওয়ায় বাংলাদেশি রপ্তানিকারকরা লজিস্টিক বিলম্ব, উচ্চ ব্যয় এবং অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হতে পারেন। এছাড়া নেপাল এবং ভুটান—উভয় দেশই স্থলবেষ্টিত। বাংলাদেশের সুবিধা বাতিল করায় এই দুটি দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারে। বিশেষ করে এই পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হবে।
অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বিধি অনুযায়ী, স্থলবেষ্টিত দেশগুলোর এবং সেসব দেশ থেকে অন্য দেশে পণ্যের অবাধ পরিবহনের অনুমতি দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে সংস্থাটির সকল সদস্যের। এর অর্থ এই জাতীয় ট্রানজিট অবশ্যই বাধাহীন হতে হবে এবং এসব পণ্য অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব ও ট্রানজিট শুল্ক মুক্তও থাকবে।
ভারত এবং বাংলাদেশ উভয়ই জেনেভাভিত্তিক সংস্থাটির সদস্য।
বাংলাদেশের পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করার যে সিদ্ধান্ত ভারত নিয়েছে, তা নেপাল বা ভুটানগামী পণ্য চালানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না বলে জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
অর্থাৎ, ভারতের কোনো বন্দর বা বিমানবন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশের পণ্য তৃতীয় দেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা আর দেবে না ভারত।
তবে ভারতের স্থলসীমান্ত ও ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভুটান বা নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের যে বাণিজ্য হয়, তার ওপর ভারতের নতুন সিদ্ধান্তের কোনো প্রভাব পড়বে না বলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য।
বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের সংবাদমাধ্যমে তুমুল আলোচনার মধ্যে বুধবার সন্ধ্যায় বিষয়টি স্পষ্ট করে এই বিবৃতি দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সেখানে বলা হয়, “বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার ফলে দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দরগুলোতে উল্লেখযোগ্য পণ্যজট সৃষ্টি হচ্ছিল। এই কারণে আমাদের নিজস্ব রপ্তানিতে বিলম্ব, খরচ বৃদ্ধি এবং ব্যাকলগ তৈরি হচ্ছিল। ফলে, এই সুবিধা ৮ এপ্রিল ২০২৫ থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
“স্পষ্ট করে বলা যায়, এই সিদ্ধান্ত ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে নেপাল বা ভুটানে পণ্য পরিবহনের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না।”
ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডিরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি) মঙ্গলবার এক সার্কুলারে বাংলাদেশের পণ্যে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্ত জানায়।
ওই সার্কুলারে ২০২০ সালের ২৯ জুনের একটি সার্কুলার ‘অবিলম্বে’ বাতিল করার কথা বলা হয়।
বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি পণ্য কনটেইনার বা কভার্ড ভ্যানের মাধ্যমে তৃতীয় দেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে ভারতের স্থল শুল্ক স্টেশন থেকে দেশটির অন্য কোনো বন্দর বা বিমানবন্দর পর্যন্ত ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল পুরনো ওই সার্কুলারে।
নতুন নির্দেশনায় বলা হয়, বর্তমানে ট্রানজিটে থাকা বাংলাদেশি পণ্য বিদ্যমান প্রক্রিয়ার আওতায় ভারত ছাড়তে পারবে, তবে নতুনভাবে কোনো পণ্যের চালান ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা পাবে না।
ভারতের এই সিদ্ধান্তের ফলে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ অন্যান্য বন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক অন্য দেশে রপ্তানির বিষয়টিও বাধাগ্রস্ত হবে।
ভারতের অ্যাপারেল এক্সপোর্টার্স কাউন্সিল এই সুবিধা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিল, কারণ বাংলাদেশ ও ভারত তৈরি পোশাক খাতে প্রতিযোগিতা করছে।
ওই সার্কুলারের ভিত্তিতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের এই সিদ্ধান্তের ফলে ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারের মত দেশের সঙ্গে স্থলপথে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমও বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
এই প্রেক্ষাপটে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাণধীর জয়সওয়াল নয়া দিল্লিতে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, “আমি কিছু প্রতিবেদন দেখেছি, তাই বিষয়টি স্পষ্ট করছি।”
তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিটিও পড়ে শোনান।
ডব্লিউটিওর নিয়ম
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়ম অনুযায়ী, সদস্য দেশগুলোকে ভূমিবেষ্টিত দেশগুলোর জন্য অবাধ ট্রানজিট সুবিধা নিশ্চিত করতে হয়।
১৯৯৪ সালে সংস্থাটির জারি করা জেনারেল অ্যাগ্রিমেন্ট অন ট্যারিফস অ্যান্ড ট্রেড (জিএটিটি) এর পঞ্চম অনুচ্ছেদ অনুসারে, সব সদস্যকে স্থলবেষ্টিত দেশগুলোতে পণ্য পরিবহনের জন্য ট্রানজিট দিতে হবে এবং এক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট সীমা দেওয়া যাবে না। তাছাড়া এই পণ্য পরিবহনকে শুল্কের আওতায় ফেলা যাবে না।
ফলে ভারত যদি নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করত, তা ডব্লিউটিওর নিয়মের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারত বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
সেভেন সিস্টার্স বিতর্ক
আকস্মিকভাবে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের কোনো কারণ সিবিআইসির সার্কুলারে না থাকায় বিষয়টি নিয়ে নানা ধরনের জল্পনা কল্পনা শুরু হয়ে যায়।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার এক বক্তব্য ঘিরে দুই দেশের সাম্প্রতিক উত্তেজনার সঙ্গে ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা দেখা যায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে।
২৮ মার্চ বাংলাদেশের বিনিয়োগের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরতে গিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস বেইজিংয়ে চীনা ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, “ভারতের সাত রাজ্য, ভারতের পূর্বাঞ্চলে, যেগুলোকে সেভেন সিস্টার্স বলা হয়ে থাকে… ভারতের ভূবেষ্টিত অঞ্চল। সমুদ্রে যাওয়ার কোনো উপায় তাদের নেই। এই অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক আমরা।
“ফলে, এটা বিপুল সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেয়। এটা চীনের অর্থনৈতিক বর্ধিতাংশ হতে পারে। বিভিন্ন জিনিস নির্মাণ, উৎপাদন করুন, বাজারজাত করুন; জিনিসপত্র চীন নিয়ে আসুন কিংবা সারাবিশ্বে পাঠিয়ে দিন।”
তার ওই বক্তব্য ঘিরে রীতিমত হৈ চৈ শুরু হয় ভারতে। বাংলাদেশ-চীনের আলোচনায় ‘সেভেন সিস্টার্স’ রাজ্যগুলোকে টেনে আনায় ইউনূসের সমালোচনামুখর হন ভারতের রাজনীতিক, সাবেক কূটনীতিক ও বিশ্লেষকরা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়, ইউনূসের ওই বক্তব্যকে ‘সেভেন সিস্টার্স’ রাজ্যগুলোর ক্ষেত্রে ‘কৌশলগতভাবে বাংলাদেশের সুবিধাজনক অবস্থান’ তুলে ধরার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হয়েছে। নয়াদিল্লির সঙ্গে ঢাকার সম্পর্কের অবস্থা যখন নাজুক, তখন চীনকে ‘নতুন কৌশলগত অংশীদার; হিসেবে চিত্রিত করাও ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে আরো জটিল করে তুলেছে।
গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের (জিটিআরআই) সহ-প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ভারত গত দুই দশক ধরে বাংলাদেশকে ‘একতরফাভাবে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার’ দিয়ে সহায়তা করে এসেছে। তবে বাংলাদেশের লালমনিরহাটে একটি বিমানঘাঁটি চীনের সহায়তায় সচল করার উদ্যোগ ভারতের শিলিগুঁড়ি করিডোরের কাছাকাছি হওয়ায় ভারত এ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকতে পারে।
লালমনিরহাটের বিমানঘাঁটিটি ভারতের শিলিগুঁড়ি করিডোর বা ‘চিকেনস নেক’-এর খুব কাছে, যা ভারতের পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর মধ্যে সংযোগের একমাত্র পথ। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশ এই অঞ্চলে ‘কৌশলগত সহযোগিতা’ বৃদ্ধির চেষ্টা করছে এমন প্রতিবেদনে নয়াদিল্লির উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
পরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিয়ে সাংবাদিকরা জানতে চান, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের কারণেই ভারত এমন সিদ্ধান্ত নিল কি না।
এক সাংবাদিক বলেন, থাইল্যান্ডে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে নরেন্দ্র মোদী ও মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকের পর সম্পর্ক ‘ইতিবাচক’ দিকে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হলেও এখন মনে হচ্ছে ‘উল্টোদিকে’ যাচ্ছে।
জবাবে রাণধীর জয়সওয়াল বলেন, “ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহারের কারণ আসলে কী, তা ইতোমধ্যে বলা হয়েছে। এটা প্রত্যাহার করা হয়েছে, কারণ ভারতেরই পণ্যজট এবং ধীরগতি সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে ২০২০ সালে দেওয়া নির্দিষ্ট এই সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়েছে।”
নেপাল ও ভুটানে পণ্য যাওয়ার সুযোগ ‘বন্ধ করার’ প্রসঙ্গ ধরে আরেক সাংবাদিক বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মত অংশীদারের কাছ থেকে ভারতের ব্যবসা-বাণিজ্য যখন চাপের মুখে পড়েছে, তখন বাংলাদেশি ট্রাক বন্ধ না করে বাংলাদেশ-নেপালের মত দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য জোরদারের করারইতো কথা ছিল।
উত্তরে মুখপাত্র বলেন, “আমি আবারও বলছি, নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশের রপ্তানির ক্ষেত্রে এর কোনো প্রভাব পড়বে না। পণ্যজট মোকাবেলার কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নিজেদের রপ্তানির জন্য আমাদের বাড়তি জায়গার দরকার ছিল।”
ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধের খবরে বাংলাদেশেও প্রতিক্রিয়া হয়।চলমান বিনিয়োগ সম্মেলনের ফাঁকে এক ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা।
উত্তরে তিনি বলেন, “গত এক সপ্তাহ ধরে ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। এখন বাণিজ্য জগতে অনেকেই দ্রুত অনেক ধরনের সিদ্ধান্ত… এগুলো আবার পরিবর্তন (ওভারটার্ন) হবে বলে আমার ধারণা। যেহেতু বিষয়টি আমি বিস্তারিত জানি না, তাই মন্তব্য করতে পারছি না।”