■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
চার মাস পর বাংলাদেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। সোমবার (৫ মে) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে কাতারের আমিরের দেওয়া বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দেশের পথে যাত্রা শুরু করেন তিনি।
খালেদা জিয়ার সঙ্গী রয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী জোবাইদা রহমান ও ছোট ছেলে আরাফাত রহমানের স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি।
মঙ্গলবার (৬ মে) বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পোঁছানোর কথা রয়েছে খালেদা জিয়ার। দুই পুত্রবধূ ও মেডিকেল বোর্ডের সদস্যসহ ৯ জন রয়েছেন তার সঙ্গে।
সোমবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে লন্ডনে তারেক রহমানের বাসা থেকে রওনা করে ৭টা ৪০ মিনিটে হিথরো বিমানবন্দরে পৌঁছান খালেদা জিয়া। ছেলে তারেক রহমান নিজে গাড়ি চালিয়ে মাকে নিয়ে আসেন বিমানবন্দরে।
গত ৮ জানুয়ারি কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির পাঠানো রাজকীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। সেই বাহনেই দেশে ফিরছেন তিনি।
সোমবার লন্ডনের সময় দুপুর ২টা ১০ মিনিটে খালেদা জিয়া দেশে ফেরার উদ্দেশে ছেলে তারেক রহমানের বাসা থেকে বের হন। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া ঢাকার উদ্দেশে লন্ডনের বাসা থেকে বের হয়েছেন। তার ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজে গাড়ি চালিয়ে মাকে বিমানবন্দর নিয়ে যাচ্ছেন।’ তিনি বলেন, ‘গাড়িতে সামনের আসনে আছেন খালেদা জিয়া। আর পেছনে আছেন দুই পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান সিঁথি।’
মঙ্গলবার (৬ মে) বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পোঁছানোর কথা রয়েছে খালেদা জিয়ার। দুই পুত্রবধূ ও মেডিকেল বোর্ডের সদস্যসহ ৯ জন রয়েছেন তার সঙ্গে।
লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ নানা রোগের উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৮ জানুয়ারি কাতারের আমিরের পাঠানো রয়্যাল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনে যান বিএনপি চেয়ারপারসন। লন্ডন ক্লিনিকে টানা ১৭ দিন ছিলেন তিনি। ২৫ জানুয়ারি ফেরেন ছেলে তারেক রহমানের বাসায়। খালেদা জিয়া লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে ছিলেন।
এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সব ঠিক থাকলে আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে তাঁর। বিএনপি চেয়ারপারসন সময়মতোই দেশে ফিরে আসবেন বলে প্রত্যাশা করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার গণমাধ্যমের কাছে এ প্রত্যাশার কথা জানিয়ে দলের চেয়ারপারসনকে সুশৃঙ্খলভাবে অভ্যর্থনা জানাতে নেতা-কর্মীদের অনুরোধ করেছেন তিনি। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘মঙ্গলবার এসএসসি পরীক্ষা আছে। ঢাকার বিমানবন্দর থেকে কাকলী পথ দিয়ে ম্যাডাম গুলশানের বাসায় যাবেন। আমরা সবাই মিলে যথাসাধ্য চেষ্টা করব, যাতে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে যেতে কোনো অসুবিধা না হয়। আমি সবাইকে অনুরোধ করতে চাই, রাস্তার ওপরে যেন কেউ না দাঁড়ায়। যাঁরা অভ্যর্থনা জানাবেন, তাঁরা যেন ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ম্যাডামকে অভ্যর্থনা জানান।’
এ সময় রাস্তায় যাতে কেউ দাঁড়াতে না পারে, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব।
এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে গুলশানের ৮০ নম্বর সড়কের ১ নম্বর বাড়িটি। ‘ফিরোজা’ নামের বাড়িটি ঘিরে পালাক্রমে পাহারা দিচ্ছে পুলিশ ও চেয়ারপারসনের সিকিউরিটি ফোর্সের (সিএসএফ) সদস্যরা। বাসার ভেতরের সব কক্ষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজও শেষ হয়েছে। ফুল গাছের টব দিয়ে সাজানো হয়েছে সামনের সবুজ আঙিনা।
গত ৮ জানুয়ারি লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর থেকে নিজে গাড়ি চালিয়ে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁর বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেখানে কিছু দিন চিকিৎসা নিয়ে ২৫ জানুয়ারি হাসপাতাল থেকেও নিজের গাড়ি চালিয়ে মাকে বাড়িতে নিয়ে যান। এবারও যথারীতি তারেক রহমান নিজে গাড়ি চালিয়ে মাকে বিমানবন্দরে নিয়ে আসবেন বলে জানান জাহিদ হোসেন।