১ লাখ ৮২২ জন শিক্ষক নিয়োগে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

■ নাগরিক প্রতিবেদক ■

সারা দেশের এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ১ লাখ ৮২২ জন শিক্ষক নিয়োগের লক্ষ্যে আবেদন আহ্বান করে ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। আগামী ২২ জুন থেকে শুরু হবে হয়ে আবেদন চলবে ১০ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত। আবেদন ফি জমা দেওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ জুলাই পর্যন্ত।

সোমবার (১৬ জুন) এনটিআরসিএ তাদের ওয়েবসাইটে নতুন এই গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এতে বলা হয়েছে, দেশের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মোট ১ লাখ ৮২২টি এমপিওভুক্ত শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে স্কুল ও কলেজে ৪৬ হাজার ২১১টি, মাদ্রাসায় ৫৩ হাজার ৫০১টি, এবং কারিগরি ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানে ১ হাজার ১১০টি পদ রয়েছে।

আবেদনের যোগ্যতা নির্ধারণে বলা হয়েছে, প্রার্থীর বয়সসীমা ৪ জুন ২০২৫ তারিখে সর্বোচ্চ ৩৫ বছর হতে হবে, যেদিন ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হয়েছে। পাশাপাশি, নিবন্ধন সনদের মেয়াদ ফল প্রকাশের তারিখ থেকে তিন বছরের মধ্যে থাকতে হবে। বয়স ও সনদের মেয়াদের শর্ত পূরণ না করলে প্রার্থী আবেদন করতে পারবেন না।

আবেদনকারীরা এনটিআরসিএ এবং টেলিটকের নির্ধারিত ওয়েবসাইট থেকে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার টাকা। ফি জমা না দিলে আবেদন বাতিল বলে গণ্য হবে। প্রতিটি প্রার্থী সর্বোচ্চ ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পছন্দক্রম অনুযায়ী বেছে নিতে পারবেন। তবে পছন্দক্রমের বাইরে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে যোগদানের আগ্রহ থাকলে সেই অপশনও রাখা হয়েছে।

গণবিজ্ঞপ্তিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, আবেদনপত্রে মিথ্যা তথ্য প্রদান করলে কিংবা সে ভিত্তিতে নিয়োগ সুপারিশপ্রাপ্ত হলে তা বাতিল করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীকে নিয়োগপত্র না দেয়, তবে জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী সেই প্রতিষ্ঠানের প্রধানের এমপিও স্থগিত বা বাতিল করা হবে। প্রয়োজনে ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডিও বাতিল করা হতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের দাখিল করা শূন্যপদসংক্রান্ত চাহিদা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও জেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে সংগৃহীত হয়েছে। তাই চাহিদাজনিত কোনো ভুলের কারণে নিয়োগপ্রক্রিয়ায় জটিলতা দেখা দিলে এনটিআরসিএ কোনোভাবেই দায়ী থাকবে না।

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) দেশের বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা অর্জন করতে হয় নিবন্ধন সনদ অর্জনের মাধ্যমে। এ পর্যন্ত ১৮টি শিক্ষক নিবন্ধনের মাধ্যমে অসংখ্য প্রার্থীকে সনদ দিয়ে এনটিআরসিএ।

শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বেসরকারি স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগে সুপারিশ করে এনটিআরসিএ। 

২০১৪ সালের পর্যন্ত এনটিআরসিএ শুধু সনদ দিত। সনদের ভিত্তিতে নিয়োগ দিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটি।  

২০০৫ সাল থেকে এনটিআরসিএ শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিচ্ছে। তবে শুরুর ১০ বছর শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা ছিল সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির হাতে। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর সরকার এনটিআরসিএকে সনদ দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশের ক্ষমতাও দেয়। এরপর চারটি গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১ লাখ ১৩ হাজার ৩১২ জন শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করেছে এনটিআরসিএ।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *