■ রাজশাহী প্রতিনিধি ■
রাজশাহী নগরের কাদিরগঞ্জে ‘ডক্টর ইংলিশ’ কোচিং সেন্টার ঘিরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে অস্ত্র ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম। অভিযানটি শনিবার সকালে শুরু হয়। এ সময় আটক হন মুনতাসির আলম অনিন্দ্য নামের এক তরুণ। তিনি একজন ইংরেজির শিক্ষক এবং ডক্টর ইংলিশ নামের কোচিং সেন্টারের মালিক। এ ছাড়া মো. রবিন ও মো. ফয়সাল নামের আরও দুজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়।
অভিযানে সেনাবাহিনী ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিটের সদস্যরা আছেন। এছাড়া রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) অংশগ্রহণ রয়েছে বলে ইমেইল বার্তায় জানানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, অভিযানের ওই বাড়ির সামনের সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে ‘ডক্টর ইংলিশ’ কোচিং সেন্টার। বাড়িটির মালিক শফিউল আলম লাট্টু, যিনি রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি। তার ছেলে মুনতাসির আলম অনিন্দ্য এই কোচিং সেন্টার পরিচালনা করেন। এটি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের পৈত্রিক বাড়ি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী অনিন্দ্য সাবেক মেয়রের আপন চাচাতো ভাই।
পুলিশ জানিয়েছে, অনিন্দ্য হলি আর্টিজান হত্যাকাণ্ডের পর জঙ্গি সন্দেহে এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন। পরে ওই মামলা থেকে তিনি অব্যাহতি পান।
অভিযানে সেনাসদস্যরা মুনতাসির আলম অনিন্দ্যকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির ভেতরে তল্লাশি চালাচ্ছেন।

সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অভিযান শেষ করে বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করার পর সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানানো হবে। দুপুর পর্যন্ত কাদিরগঞ্জের ওই সড়ক বন্ধ রয়েছে এবং অভিযান অব্যাহত আছে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গাজীউর রহমান একই ইমেইল বার্তায় জানিয়েছেন, অভিযান শেষ হলে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হবে।
অসমর্থিত একটি সূত্রে জানা গেছে, অভিযানে দুটি বিদেশি এয়ার গান, একটি রিভলবার, দেশীয় অস্ত্র ছয়টি, জিপিএস একটি, ওয়াকিটকি চারটি, বাইনোকুলার একটি, বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জামসহ বেশ কিছু জিনিসপত্র জব্দ করা হয়েছে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গাজিউর রহমান বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযান সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি কোনো তথ্য জানেন না।
সেনাবাহিনী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযানকালে ইতোমধ্যে কোচিং সেন্টারটি থেকে দুটি বিদেশি এয়ার গান, একটি রিভলবার, কার্টুজ, তিন বাক্স শিশা, একটি ম্যাগনেট, ছয়টি দেশীয় অস্ত্র, একটি জিপিএস, চারটি ওয়াকিটকি, একটি ট্রেজারগান, ১০টি সিমকার্ড, একটি বাইনোক্যুলার, বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জাম, পাসপোর্ট, এনআইডি কার্ড, ছয়টি মনিটর, তিনটি কম্পিউটার, তিনটি স্ক্যানার ও ৩৫ বোতল মদ জব্দ করেছে।
এগুলো তাজা অবস্থায় থাকায় পরে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট তা নিষ্ক্রিয় করে। পাশের একটি পুকুরে অস্ত্র ফেলে দেওয়া হতে পারে, এ সন্দেহে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে নামানো হয়েছিল। তবে তল্লাশিতে কিছু পাওয়া যায়নি।