:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
ভারতকে ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। ফুটবলীয় কার্যক্রমে তৃতীয় পক্ষের প্রভাব খাটানোর অভিযোগে ভারতীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন (এআইএফএফ) এই শাস্তির কবলে পড়ে।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করে ফিফা।
ভারতে ১১ অক্টোবরে শুরু হওয়ার কথা ছিল মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল বিশ্বকাপ। কিন্তু ফিফার গঠনতন্ত্র অনুসরণ না করায় সেই আয়োজন হুমকির মুখে পড়েছে। দেশটির সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে নিষিদ্ধ করেছে বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। ফলে সব ধরনের আন্তর্জাতিক ফুটবল কার্যক্রমে আপাতত অংশ নেওয়ার যোগ্যতা হারিয়েছে দেশটি।
মূলত ভারতের ফুটবল ফেডারশনে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের কারণেই ফিফা কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। আর সেই তৃতীয় পক্ষটি হলো- কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স। ফিফা বিবৃতিতেও সেই বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে, ‘দ্য ব্যুরো অব ফিফা কাউন্সিল সর্বসম্মত ভাবে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে, অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ থাকায় তাদের অবিলম্বে নিষিদ্ধ করা হলো। যা আসলে ফিফার গঠনতন্ত্র বিরোধী।’
ফিফা আরও জানিয়েছে, নির্বাচনের মাধ্যমে তৈরি হওয়া কমিটি যখন ফেডারেশনের দৈনন্দিন কাজকর্ম দেখতে শুরু করবে। তখন থেকে এই নিষেধাজ্ঞার শাস্তি উঠে যাবে।
সেখানে আসন্ন অনূর্ধ্ব-১৭ মেয়েদের ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়েও কথা বলেছে ফিফা, ‘এই নিষেধাজ্ঞার মানে হলো আপাতত সেখানে টুর্নামেন্টটি আয়োজন করা যাচ্ছে না।’
ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, চলতি মাসের শুরুর দিকে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট অবিলম্বে নির্বাচন অনুষ্ঠানের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এবং বলেছিল যে নির্বাচিত কমিটি তিন মাসের জন্য একটি অন্তর্বর্তী সংস্থা হবে। ফুটবল ফেডারেশনের ওপর আদালতের এই খরবদারি ভালোভাবে নেয়নি ফিফা। বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ আদালতের খবরদারিকে তাদের সনদের পরিস্কার লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য করে।
ফিফার আইন অনুযায়ী, সদস্য ফেডারেশনগুলোকে তাদের নিজ নিজ দেশে আইনি ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত থাকতে হবে।
খেলাটির সব ধরনের কার্যক্রম থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনকে (এআইএফএফ) নিষিদ্ধি করেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রণ সংস্থ ফিফা। তৃতীয় পক্ষের অনাকাক্সিক্ষত হস্তক্ষেপের কারনে তাৎক্ষণিকভাবে ভারতীয় ফুটবলের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে ফিফা বিবৃতি দিয়েছে।
এ সম্পর্কে ফিফার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ ধরনের হস্তক্ষেপ ‘ফিফার আইন মারাত্মকভাবে লঙ্ঘন করে’। বিবৃতিতে বলা হয়, এআইএফএফ নিজেদের প্রাত্যহিক কাজে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি প্রফুল প্যাটেলের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হওয়া এবং এর পরের নির্বাচন নিয়েই যত ঝামেলা তৈরী হয়েছে। মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরও নতুন নির্বাচন না দিয়ে তিনি অফিস চালিয়ে যাচ্ছেন, যা আইনের পরিপন্থী হিসেবে রায় দিয়েছেন আদালত। দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই বছরের মে মাসে ফেডারেশনের কার্যকরী কমিটিকে ভেঙে দিয়ে ভারতীয় ফুটবলের দায়িত্ব তিন সদস্যের কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে দেয়। একই সঙ্গে বলা হয়, যত দ্রুত সম্ভব ফেডারেশনের নির্বাচন করতে হবে। কিন্তু সেটি এখনও না হওয়াতেই ফিফার এই নিষেধাজ্ঞা।
এ নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন ভারতের কোনো ঘরোয়া টুর্নামেন্টকে স্বীকৃতি দেবে না এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি) ও ফিফা। জাতীয় দল কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচও খেলার সুযোগ পাবে না।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, আগামী ১১-৩০ অক্টোবর ভারতে যে ফিফা অনুর্ধ্ব-১৭ নারী বিশ্বকাপের আসর অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল সেটা আপাতত সেখানে হচ্ছেনা। টুর্নামেন্ট সম্পর্কে পরবর্তী পদক্ষেপ দ্রুতই নেয়া হবে এবং বিষয়টি ফিফার ব্যুরো অফ কাউন্সিলের উপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে ফিফা লিখেছে, ভারতের কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের সঙ্গে তারা যোগাযোগ রাখছে। এখনো বিষয়টির ইতিবাচক সমাধান সম্ভব বলে ফিফা আশাবাদী।