সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান কারাগারে

■ নাগরিক প্রতিবেদন ■

রাজধানীর শাহবাগ থানার সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় গ্রেফতার সাবেক সচিব আবু আলম মোহাম্মদ শহীদ খানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালত এ আদেশ দেন।

এর আগে, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক তৌফিক হাসান আসামিকে আদালতে হাজির কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, আবু আলম মোহাম্মদ শহীদ খান মামলার ঘটনাস্থলে (‘মঞ্চ ৭১’ আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠক) উপস্থিত থেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত আছে বলে জানা গেছে। মামলাটি তদন্তাধীন। এ অবস্থায় মামলাটি সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত এবং নাম-ঠিকানা যাচাই না হওয়ায় পর্যন্ত আসামিকে জেলে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন।

পরে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে, দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর ইস্কাটনের বোরাক টাওয়ার থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এই মামলায় আবু আলম শহীদ খানের নাম আসামি হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে। মামলা দায়ের করার সময় যাদের আসামি করা হয়েছিল তারা হলেন— সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন, মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন, মঞ্জুরুল আলম পান্না, কাজী এটিএম আনিসুর রহমান বুলবুল, গোলাম মোস্তফা, মো. মহিউল ইসলাম বাবু, মো. জাকির হোসেন, মো. তৌছিফুল বারী খাঁন, মো. আমির হোসেন সুমন, মো. আল আমিন, মো. নাজমুল আহসান, সৈয়দ শাহেদ হাসান, মো. শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, দেওয়ান মোহম্মদ আলী ও মো.আব্দুল্লাহীল কাইয়ুম।

১৯৯৬ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকারের শেষ সময়ে সরকারি আমলাদের নিয়ে তৈরি সরকারবিরোধী প্ল্যাটফর্ম ‘জনতার মঞ্চ’-এর অন্যতম সংগঠক ছিলেন আবু আলম শহীদ খান। ওই বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে এবং তিনি ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার উপ-প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে বিএনপি আবার ক্ষমতায় এলে তাকে ওএসডি করা হয়। পরে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে তাকে জ্যেষ্ঠ সচিব করা হয়। ২০১৫ সালে তিনি অবসরে যান।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার ‘গভীর ষড়যন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি’ বন্ধে গত ৫ আগস্ট ‘মঞ্চ ৭১’ নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। ওই সংগঠন গত ২৮ আগস্ট সকাল ১০টায় একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল ১১টায়। এর মধ্যেই এক দল ব্যক্তি হট্টগোল করে স্লোগান দিয়ে সভাস্থলে ঢুকে পড়েন।

একপর্যায়ে তারা অনুষ্ঠানস্থলের দরজা বন্ধ করে দেন। হট্টগোলকারীরা গোলটেবিল আলোচনার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন এবং আলোচনায় অংশ নেওয়াদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। একপর্যায়ে অতিথিদের অনেককেই বের করে দেওয়া হলেও আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এবং অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।

পরে পুলিশ এসে ১৬ জনকে আটক করে। এ ঘটনায় ২৯ আগস্ট রাজধানীর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করেন উপ-পরিদর্শক আমিরুল ইসলাম।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *