টেকনাফে পাচারের জন্য বন্দী থাকা নারী-শিশুসহ ৬৬ জন উদ্ধার

■ টেকনাফ প্রতিনিধি ■ 

কক্সবাজারের টেকনাফের কচ্ছপিয়া পাহাড়ের চূড়ায় অভিযান চালিয়ে মালয়েশিয়ায় পাচারের জন্য বন্দী করে রাখা নারী ও শিশুসহ ৬৬ জনকে উদ্ধার করেছে যৌথ বাহিনী।

উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে পুরুষ ২২ জন, নারী ২৩ জন ও শিশু ২১ জন। তাদের মধ্যে অনেকেই রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি নাগরিক।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত টেকনাফের কচ্ছপিয়া পাহাড়ের চূড়ায় অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়।

শুক্রবার সকালে কোস্টগার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।

সমুদ্রপথে ট্রলারযোগে মালয়েশিয়ায় পাচারের জন্য নানা প্রলোভনের মাধ্যমে লোকজনকে টেকনাফ নিয়ে আসা হয়। তারপর সংঘবদ্ধ অপহরণকারী ও মানবপাচারকারী চক্র গহীন পাহাড়ে এনে তাদেরকে বন্দী করে রাখে। এছাড়া অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এবং বিদেশে পাঠানোর প্রলোভনে সাধারণ মানুষকে অপহরণ করে মুক্তিপণও দাবি করে থাকে, যার জন্য টেকনাফ এলাকায় গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরই ধারাবাহিকতা টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের কচ্ছপিয়া পাহাড় আস্তানায় বেশ কিছু লোকজনকে বন্দী রাখা হয়েছে এমন সংবাদ পায়। এরপর নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড যৌথভাবে টেকনাফের কচ্ছপিয়া পাহাড়ে অভিযান শুরু করে। অভিযানে গহীন পাহাড়ের চূড়ায় অপহরণকারী ও মানবপাচারকারীদের বেশ কয়েকটি আস্তানার সন্ধান পাওয়া যায়। এসব আস্তানা থেকে বন্দী থাকা অবস্থায় ৬৬ জনকে উদ্ধার করা হয়।

কোস্টগার্ড জানায়, উদ্ধার হওয়া নারী-পুরুষ ও শিশুদের তথ্য সংগ্রহ করার পাশাপাশি চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। উদ্ধারকৃতদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হবে।

কয়েকটি সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্র বিদেশে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখাতো। তারা সুবিধাজনক কর্মসংস্থান ও উন্নত জীবনযাপনের স্বপ্ন দেখিয়ে টেকনাফসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা নাগরিকদের মালয়েশিয়ায় যেতে উদ্বুদ্ধ করতো। অল্প খরচে বিদেশ যাত্রার প্রস্তাব দেয়া হতো। কখনও বলা হতো, বিনা অর্থে পাঠানো হবে এবং পরে কর্মস্থলে কাজের মাধ্যমে খরচ পরিশোধ করা যাবে। এভাবে প্রলোভন দেখিয়ে তাদের টেকনাফের গহিন পাহাড়ে গোপন আস্তানায় জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। পরবর্তীতে পাচারকারীরা তাদের সুবিধাজনক সময়ে মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন উপকূল থেকে বোট যোগে মালয়েশিয়ায় পাচার করার পরিকল্পনা করেছিল। তারা আরও জানায় যে, পাচারকারীরা তাদের আটকে রেখে নির্যাতনের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করছিল।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *