■ নাগরিক নিউজ ডেস্ক ■
ভারতীয় অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ বিজয়ের রাজনৈতিক সমাবেশে পদদলিত হয়ে অন্তত ৩৪ জন মারা গেছে। আহত হয়েছে ৪৬ জন।
নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে বলে স্থানীয় হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
নিহত প্রাপ্তবয়স্করা সবাই বিজয়ের রাজনৈতিক দল ‘তামিলাগা ভেট্ট্রি কাজগম’ (TVK)-এর সমর্থক ছিলেন। তারা সকাল থেকেই সমাবেশস্থলে ভিড় জমিয়েছিলেন এবং বিজয়ের জন্য প্রায় ছয় ঘণ্টা অপেক্ষা করেছিলেন। কিন্তু সমাবেশে তার আগমন দেরি হওয়ায় ভিড় ক্রমেই বাড়তে থাকে ও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
ভয়াবহ পরিস্থিতির খবর পাওয়ার পর তামিলনাড়ুর স্বাস্থ্যমন্ত্রী এম সুব্রামানিয়ান দ্রুত করুরে পৌঁছান। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন জেলা প্রশাসক ভি সেথিলবালাজিকে পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘করুর থেকে আসা খবর অত্যন্ত উদ্বেগজনক। পদদলিত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বহু মানুষ। তাদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে যখন একের পর এক মানুষ অজ্ঞান হয়ে পড়তে থাকেন, তখন বিজয় হঠাৎ করেই নিজের বক্তব্য শেষ করে দেন। পরে তাকে বহনকারী বিশেষ প্রচার বাস থেকে তিনি স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে মিলে উপস্থিত ভিড়ের দিকে পানির বোতল ছুড়ে দেন।
এরই মধ্যে কয়েক ডজন মানুষকে অ্যাম্বুলেন্সে করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে অতি ভিড়ের কারণে অ্যাম্বুলেন্সগুলোর ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে ভোগান্তি পোহাতে হয় বলে জানিয়েছে পিটিআই।
করুরের এই ঘটনায় শোক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা তামিলনাড়ুতে। নিহতদের পরিচয় এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত করা যায়নি। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
জনসমাগম ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। এ সময় বিজয় থালাপতির দলের কর্মীরা দুর্ঘটনার আশঙ্কা জানিয়ে শীর্ষ নেতাদের সতর্ক করে দেন। পরে থালাপতি বিজয় আকস্মিকভাবে তার বক্তৃতা শেষ করেন। পরে তার দলের কর্মীরা প্রচারণা বাস থেকে ভিড় লক্ষ্য করে বোতলজাত পানি নিক্ষেপ করেন। অসুস্থ হয়ে পড়া মানুষের সহায়তা পানির বোতল নিক্ষেপ করা হয় বলে দলটির কর্মীরা জানিয়েছেন।
সমাবেশস্থলে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। চেন্নাইয়ের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ডিএমকে বিজয়ের দলের নেতাকর্মীদের অবহেলার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছে।
এর আগে, গত ২০ সেপ্টেম্বর দলের কর্মী-সমর্থকদের জন্য কঠোর নিরাপত্তা ও আচরণবিধি জারি করে টিভিকে। এতে বলা হয়েছিল, বিজয়ের সমর্থকরা যেন তার গাড়ি বা গাড়িবহর অনুসরণ এবং প্রকাশ্যে তাকে বরণের আয়োজন না করেন। পাশাপাশি গর্ভবতী নারী, শিশু, প্রবীণ ব্যক্তি, শারীরিকভাবে অক্ষম এবং অসুস্থদের সমাবেশে না এসে অনলাইনে অনুষ্ঠান দেখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।