■ নাগরিক প্রতিবেদক ■
সারাদেশে ভারী বৃষ্টির প্রভাবে সাত জেলায় নিম্নাঞ্চলে বন্যার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া ১০ জেলার ওপর দিয়ে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের গোমতী, মুহুরী, সেলোনিয়া ও ফেনী নদীর পানি সমতল বেড়েছে। আগামী দুই দিনে এসব নদীর পানি আরও বাড়তে পারে। এর ফলে ফেনী জেলায় মুহুরী, সেলোনিয়া ও ফেনী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ সময় চট্টগ্রামে ফেনী নদীর পানি সতর্কসীমায় পৌঁছাতে পারে, ফলে নদীসংলগ্ন এলাকা সাময়িকভাবে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তৃতীয় দিনে পানি সমতল কিছুটা কমতে পারে।
রংপুর বিভাগের তিস্তা নদীর পানি বেড়েছে, আর ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি কিছুটা কমেছে। আগামী তিন দিনে তিস্তার পানি আবারও বাড়তে পারে, এতে লালমনিরহাট ও নীলফামারীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।
এ ছাড়া ময়মনসিংহ বিভাগের কংস নদীর পানি কমলেও সোমেশ্বরী ও ভুগাই নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে। আগামী তিন দিনে এসব নদীর পানি বাড়তে পারে, এতে শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনার নিম্নাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হবে।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় নদীগুলোতে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি জোয়ার হচ্ছে, যা অন্তত দুদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
অন্যদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর পুনঃসতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
ঢাকায় বুধবার ভোর ৬টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২০৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত ১৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়, যা এই সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আগামী চার দিন এমন ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে নগর জলাবদ্ধতা নিয়ে সতর্ক থাকতে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানানো হয়েছে।