■ নাগরিক নিউজ ডেস্ক ■
গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে আটককৃত ১৩৭ জন অধিকারকর্মীকে তুরস্কে পাঠিয়েছে ইসরায়েল।
গত সপ্তাহে গাজামুখী নৌবহর থেকে প্রায় ৫০০ অধিকারকর্মীকে অপহরণ করে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে এবার তাদের একটি অংশকে তুরস্কে ফেরত পাঠানো হলো।
তুরস্কে পাঠানো ১৩৭ জনের মধ্যে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, জর্ডান, কুয়েত, লিবিয়া, আলজেরিয়া, মৌরিতানিয়া, মালয়েশিয়া, বাহরাইন, মরক্কো, সুইজারল্যান্ড, তিউনিশিয়া এবং তুরস্কের নাগরিক রয়েছেন।
তুরস্কের বিমানবন্দরে একটি বিশেষ বিমানে করে ওই অধিকারকর্মীদের পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরে তাদের গ্রহণের প্রস্তুতি চলছিল, সেখান থেকেই তারা নিজ নিজ দেশে ফেরত যাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই ১৩৭ জনের মধ্যে অন্তত ৩৬ জন তুরস্কের নাগরিক। এর আগে গতকাল আরও চারজনকে ফেরত পাঠিয়েছিল ইসরায়েল।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আটক অধিকারকর্মীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান। এসব অধিকারকর্মীর মধ্যে সুইডেনের জলবায়ু অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গও রয়েছেন।
ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানাতে এবং গাজায় ত্রাণ পৌঁছে দিতে বিভিন্ন দেশ থেকে সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীরা মিলে প্রায় ৪৫টি নৌযানে ৫০০ জনের বেশি যাত্রী নিয়ে যাত্রা করেছিলেন। কিন্তু গাজার উপকূলে পৌঁছানোর আগেই ইসরায়েলি বাহিনী নৌবহরে হানা দিয়ে সবাইকে আটক করে।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে বলেছে, এই অধিকারকর্মীরা খুবই অল্প ত্রাণ নিয়ে এসেছিল। কিন্তু এগুলো ইসরায়েলের মাধ্যমে পৌঁছে দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেছেন তারা। তাদের দাবি, অধিকারকর্মীরা ত্রাণ দেওয়ার আড়ালে উস্কানি দিতে এসেছিলেন। আটক সব অধিকারকর্মীকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলেও জানিয়েছে ইসরায়েলি মন্ত্রণালয়।
ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়া ইতালীয় সংসদ সদস্যরা জানান, তারা নৌযানে থাকা অবস্থায় বৈধ কাজ করছিলেন, কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনী তাদের “নিষ্ঠুরভাবে আটক” করেছে। অনেক কর্মীকে পানি, ওষুধ এবং টয়লেট ব্যবহারের সুযোগ না দিয়ে হাত বাঁধা অবস্থায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাঁটু গেড়ে বসিয়ে রাখা হয়েছিল।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সব আটক কর্মী নিরাপদ এবং সুস্থ আছেন এবং দ্রুত তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর কাজ সম্পন্ন করতে চাইছে।
ফ্লোটিলার এই অভিযান আগস্টের শেষের দিকে শুরু হয়। এটি ছিল ইসরায়েলি নৌ অবরোধের বিরুদ্ধে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য কর্মীদের সাম্প্রতিক প্রচেষ্টা। ইসরায়েল ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে হামাসের হামলার পর গাজায় সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা শুরু থেকেই ফ্লোটিলার উদ্দেশ্যকে ‘রাজনৈতিক স্টান্ট’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং বৈধ নৌ অবরোধ লঙ্ঘনের চেষ্টা না করার সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন।
গাজায় ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙার লক্ষ্যে যাত্রা করা ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’–এর আয়োজকেরা শুক্রবার জানিয়েছে, ইসরায়েলি নৌবাহিনী তাদের ৪২টি জাহাজকে অবৈধভাবে আটক করেছে। নৌযানগুলোতে মানবিক সহায়তা ও স্বেচ্ছাসেবকেরা ছিলেন।