জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরিত হবে ১৫ অক্টোবর

■ নাগরিক প্রতিবেদক ■

আগামী ১৫ অক্টোবর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরিত হবে। ঐতিহাসিক এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব দেবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) জাতীয় সংসদ ভবনে ঐকমত্য কমিশন কার্যালয়ের সভাকক্ষে কমিশনের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়।

কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা পবন চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন।

পবন চৌধুরী জানান, ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের পাঁচটি বৈঠকে প্রাপ্ত মতামত বিশ্লেষণ করা হয়। বৈঠকে আশা প্রকাশ করা হয় যে, বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে এবং রাজনৈতিক দলগুলো থেকে প্রাপ্ত অভিমত বিশ্লেষণ করে খুব শিগগিরই বাস্তবায়নের উপায় সংক্রান্ত সুপারিশ এবং চূড়ান্তকৃত জুলাই সনদ সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভায় জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের পাঁচটি বৈঠকে প্রাপ্ত মতামত বিশ্লেষণ করা হয়। বৈঠকে আশা প্রকাশ করা হয়, বিশেষজ্ঞরা এবং রাজনৈতিক দলসমূহ থেকে প্রাপ্ত অভিমতসমূহ বিশ্লেষণ করে খুব শিগগিরই বাস্তবায়নের উপায় সংক্রান্ত সুপারিশ এবং চূড়ান্ত করা জুলাই সনদ সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে। 

বৈঠকে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ও ড. মো. আইয়ুব মিয়া উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও সভায় অংশ নেন। 

রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে দুই ধাপে সংলাপ করে। দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি করে। তবে, সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে দলগুলোর মতানৈক্য এখনো দূর হয়নি। যা নিয়ে তৃতীয় ধাপের ৫ দিনের সংলাপেও সমাধান হয়নি। 

গতকাল বুধবার সংলাপের শেষ দিন জানানো হয় রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সরকারকে একটি প্যাকেজ সুপারিশ করবে কমিশন। 

জানা গেছে, প্যাকেজ সুপারিশ চূড়ান্ত করতে আজ বৃহস্পতিবার কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হয়। তবে সেখানে প্যাকেজ সুপারিশের চেয়েও জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের বিষয়ে বেশি আলোচনা হয়। সেখানে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হয় আগামী ১৫ অক্টোবর বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় স্বাক্ষর অনুষ্ঠান করার। প্রথমে চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানটি করার কথা থাকলেও প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শে সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় করার সিদ্ধান্ত হয়। 

সনদ সই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সংলাপে অংশ নেওয়া ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটকে দুজন করে প্রতিনিধির নাম পাঠাতে বলে কমিশন। এরই মধ্যে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল নাম পাঠিয়েছে। এরই মধ্যে স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের বিষয়ে বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) কয়েকটি দলের সঙ্গে কমিশনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়, যাতে দলগুলো ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে বলে কমিশন সূত্র জানিয়েছে। 

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার বলেন, স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার বিষয়ে দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। তারা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। 

জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি ঐতিহাসিক উল্লেখ করে আড়ম্বর আয়োজনে করতে চায় কমিশন। এ ক্ষেত্রে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপির কমপক্ষে ৩০ জন করে নেতাদের আমন্ত্রণ জানাবে। এছাড়া অন্যান্য দলগুলোর ১০ জন করে প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানাতে পারে কমিশন। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের বিষয়ে আগামী শনিবার আবারও বৈঠকে বসবে কমিশন বলে জানান তিনি। 

মনির হায়দার আরও বলেন, স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রতিটি দলের দুজন প্রতিনিধি ছাড়াও যথেষ্ট সংখ্যক নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *