চট্টগ্রাম ইপিজেডে অ্যাডামস ক্যাপস কারখানায় ভয়াবহ আগুন

■ চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ■

চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানায় ভয়াবহ আগুন লেগেছে। ওই কারখানার বহুতল ভবনে পাঁচ শতাধিক শ্রমিক রয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় বড় ধরনের হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বেলা ২টার দিকে দক্ষিণ হালিশহরে অবস্থিত ৯ তলা ভবনটিতে আগুন লাগে। সেটি আস্তে আস্তে নিচের দিকে ছড়িয়ে পড়ছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রাথমিকভাবে ফায়ার সার্ভিসের ১৬টি ইউনিট কাজ করছে। পরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পাঁচটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয়।

পাশাপাশি উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করছে বিজিবি ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা।

আইএসপিআর জানিয়েছে, চট্টগ্রাম ইপিজেডের আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পাঁচটি ইউনিট।

এক বিবৃতিতে ফায়ার সার্ভিস জানায়, আজ বেলা ২টা ১০ মিনিটে চট্টগ্রাম সিইপিজেডের লিংকরোডে একটি তোয়ালে কারখানায় আগুন লাগার খবর পায় তারা। খবর পেয়ে ২টা ১২ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিস। সাততলা একটি ভবনের পাঁচ, ছয় ও সাততলায় আগুন লেগেছে।

ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক জসীম উদ্দিন বলেন, ভবনের সাততলা ও ছয়তলা পুরোপুরি পুড়ে গেছে। ভেতরে প্রচুর পোশাকের মজুদ থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ভবনে কর্মরত শ্রমিকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় সিইপিজেড এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে নিখোঁজ শ্রমিকদের খোঁজে কারখানার সামনে ভিড় করেছেন। আগুনের তীব্রতায় আশপাশের ভবনগুলোও ঝুঁকির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। উৎসুক লোকজন ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।

ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, আগুন ভবনের বিভিন্ন তলায় ছড়িয়ে পড়ায় নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগছে। এছাড়া কারখানায় ভবনটিতে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে। শ্রমিকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং কেউ হতাহত হয়েছেন কি না তা এখনো নিশ্চিত করা যায়নি

অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফিরোজ আলী ফখরী বলেন, পুরো ভবনের সবকটি ফ্লোর তাঁদের। ওপরের দিকের ফ্লোরে লাগা আগুন নিচের দিকেও ছড়িয়ে পড়ছে। তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত জানাতে পারেননি তিনি।

ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামির হোসেন বলেন, ইপিজেডের ভেতরে একটি কারখানায় আগুন লেগেছে। সেখানে মেডিকেল অ্যাকসেসরিজ তৈরি হতো। বিস্তারিত পরে জানানো যাবে।

সিইপিজেড সূত্র জানায়, ভবনটিতে মোট ৭০০ শ্রমিক কাজ করেন। তবে তাঁদের কেউ আহত হননি বলে জানান চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) নির্বাহী পরিচালক আবদুস সুবাহান।

জানতে চাইলে আবদুস সুবাহান বলেন, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাই এ ঘটনায় কারও হতাহত হওয়ার আশঙ্কা নেই।

জি হং মেডিকেল কোম্পানির শ্রমিক মোছাম্মত শিপা বলেন, যে জায়গা থেকে আগুনের সূত্রপাত, সেখানে সাধারণত নারীদের যাওয়া নিষেধ। তিনি পাঁচতালায় কাজ করতেন। দুপুরে খাওয়ার পর তিনি ‘আগুন, আগুন’ বলে চিৎকার করে ওপর থেকে অনেককে নামতে দেখেন। এ চিৎকার শুনে তিনিসহ সবাই দৌড়ে নিচে নেমে আসেন।

জি হং মেডিকেল কোম্পানির সুপারভাইজার ফাহিমুল মাহমুদ ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি চারতলায় ছিলাম। দুপুরের দিকে তিনি হঠাৎ জরুরি অ্যালার্ম বাজতে শুনি। এরপর জানতে পারি, আগুন লেগেছে। শুরুতে আগুন কম ছিল। এখন বেড়েছে।’

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *