■ নাগরিক প্রতিবেদক ■
আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএসএম কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে (বিএনপি) যোগ দিয়েছেন। তিনি দলটির প্রাথমিক সদস্য ফরম পূরণ করেছেন।
ড. রেজা কিবরিয়া ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-১ আসন থেকে বিএনপির ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে নির্বাচন করতে পারেন।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে তিনি একই আসনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
বিএনপিতে যোগ দেয়ার বিষয়ে ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, ’ইতিমধ্যেই আমি বিএনপির প্রাথমিক সদস্য ফরম পূরণ করেছি। কয়েক দিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করব। অবশ্যই আমি ধানের শীষে নির্বাচন করব আমার এলাকায়।’
এদিকে বিএনপি হবিগঞ্জ জেলার চারটি আসনের মধ্যে হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনটিতে এখনও কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। বাকী তিনটি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষিত হয়েছে। তালিকা প্রকাশের পর নবীগঞ্জে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা দেখা দিয়েছে।
এদিকে রেজা কিবরিয়া যে আসন থেকে নির্বাচন করেন সেই আসন এখন পর্যন্ত ফাঁকাও রেখেছে বিএনপি। সোমবার ঘোষিত ২৩৭টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলেও ওই আসনসহ ৬৩ আসন ফাঁকা রেখেছে।
২০১৮ সালের নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের ব্যানার থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন তিনি। পরে সাবেক ডাকসু ভিপি নুরের নেতৃত্বে গণঅধিকার পরিষদে যোগ দিয়ে আহ্বায়কও হন তিনি। কিছুদিন না যেতেই নুরের সঙ্গে তার বিরোধ তৈরি হয়। এ বিরোধের একপর্যায়ে রেজা কিবরিয়া কিছুটা নিজেকে গুটিয়ে নেন রাজনীতি থেকে।
পরবর্তীতে গণঅধিকার পরিষদ দুগ্রুপে ভাগ হয়ে যায়। একটি অংশের নেতৃত্বে নুর, অন্য অংশের নেতৃত্বে রেজা কিবরিয়া। বর্তমানে রেজা কিবরিয়া রাজনীতিতে সক্রিয় নেই। ছেড়ে দিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের পদও। এর বিভক্ত দল আমজনতার দলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
রেজা কিবরিয়া ১৯৫৭ সালের ৬ মার্চ তৎকালীন পাকিস্তানের পূর্ব পাকিস্তানে সিলেট জেলার হবিগঞ্জ মহকুমায় অবস্থিত জালালসাপ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতি, দর্শন ও অর্থনীতিতে স্নাতক, কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর অর্জন করার পর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমফিল ও ডিফিল অর্জন করেন।
এরপর তিনি ১৯৮৪ সালে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে যোগ দেন এবং ১৯৯৩ সালের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক হয়েছিলেন। এরপর ১৯৯৬ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত তিনি পাপুয়া নিউগিনি সরকারের রাজস্ব বিভাগের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন। এরপর ৮ বছরের জন্য তিনি পিডিপি অস্ট্রেলিয়ার প্রধান অর্থনীতিবিদ হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০০৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পূর্ব-আফ্রিকা আঞ্চলিক কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছেন। ২০১৬ সাল থেকে ২ বছরের জন্য তিনি কম্বোডিয়া সরকারের অর্থনীতি ও অর্থসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে ম্যাক্রো ফিসক্যাল উপদেষ্টা ছিলেন। ২০১৫ সাল থেকে তিনি ইন্টিগ্রো হোল্ডিংসের চেয়ারম্যান হিসেবে কর্মরত আছেন।
