২২ বছর পর ফুটবলে ভারতকে হারাল বাংলাদেশ

■ নাগরিক প্রতিবেদক ■

শেখ মোরসালিনের গোলে ২২ বছর পর ফুটবলে ভারতকে হারাল বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে প্রায় ২৪ হাজার দর্শকের সামনে ১-০ গোলের জয়ে মাঠ ছাড়ে হামজারা।

২০০৩ সালে এই স্টেডিয়ামে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে মতিউর মুন্নার গোল্ডেন গোলে বাংলাদেশ ২-১ গোলে ভারতকে পরাজিত করেছিল। দুই দল এ পর্যন্ত ৩০ বার মুখোমুখি হয়েছে। বাংলাদেশ আজকের জয় দিয়ে ৪বার শেষ হাঁসি হেসেছে। ১৩টি করে ম্যাচে সমতা ও পরাজয় দেখেছে। এবারের এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের প্রথম লেগে শিলং থেকে হামজার অভিষেক ম্যাচে দাপট দেখিয়ে গোল শূন্য সমতা করেছিল বাংলাদেশ।

২০২৭ এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে পাঁচ ম্যাচে এটাই বাংলাদেশের প্রথম জয়। পাঁচ ম্যাচে ২ ড্র ও ১ জয়ে সংগ্রহ ৫ পয়েন্ট। গ্রুপে তৃতীয় স্থানের লড়াইয়ে এগিয়েও গেল দল। অন্যদিকে ৫ ম্যাচে ২ ড্র নিয়ে সবার নিচে ভারত। ভারতকে হারানো মানে শুধু ৩ পয়েন্ট নয়, মানসিক দিক থেকেও বড় এক জয়।

গত ২৫ মার্চ শিলংয়ে প্রথম লেগ গোলশূন্য ড্র হয়েছিল। সেদিনই বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হয় হামজা চৌধুরীর। গোলের সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশ সেদিনই জিতে ফিরতে পারত। হয়নি।

২২ বছর পর এবার বাংলাদেশ জিতল শেখ মোরসালিনের গোলে। বাংলাদেশ ম্যাচের ১২ মিনিটে লিড নেয়। এরপর ৮০ মিনিটের বেশি সময় বাংলাদেশ সেই লিড বজায় রাখে।

ইংলিশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে খেলা ফুটবলার হামজা চৌধুরী অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে বাংলাদেশের রক্ষণ সামলেছেন। বিশেষ করে ৩২ মিনিটে ভারতের নিশ্চিত গোল তিনি হেড দিয়ে সেভ করেন। দ্বিতীয়ার্ধেও তিনি অনেকগুলো আক্রমণ প্রতিহত করেছেন।

ভারতের কোচ খালিদ জামিল দ্বিতীয়ার্ধে অনেক কৌশল পরিবর্তন ও খেলোয়াড় পরিবর্তন করেছেন। এরপরও ম্যাচে গোল করে সমতা আনতে পারেনি। বাংলাদেশের কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা দ্বিতীয়ার্ধে গোলদাতা মোরসালিনের পরিবর্তে শাহরিয়ার ইমনকে নামান। শাহরিয়ার ইমন গতি দিয়ে ভারতের রক্ষণে কাপন ধরালেও গোল পাননি।

এর আগে প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। ম্যাচের ১২ মিনিটে উত্তাল জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারি। কাউন্টার অ্যাটাকে শেখ মোরসালিন-রাকিব বল দেয়া নেয়া করে ভারতের বক্সে এগুতে থাকেন। রাকিব মোরসালিনের উদ্দেশ্যে বল বাড়ান। ভারতের গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিং পোস্ট থেকে বেরিয়ে আসেন। মোরসালিন বুদ্ধিদীপ্তভাবে প্লেসিং করেন গোলরক্ষকের পায়ের ফাঁক দিয়ে। বল জালে জড়ানোর সাথে সাথেই বাংলাদেশের ডাগ আউটের উল্লাস।

বাংলাদেশ গোল দেয়ার পর কয়েক মিনিট উজ্জীবিত ফুটবল খেলে। পরবর্তীতে নিজেদের ভুল পাসে ভারতের পায়ে বল তুলে দিয়ে অযথাই চাপে পড়ে। বিশেষ করে ৩১ মিনিটে গোলরক্ষক মিতুল বল ক্লিয়ার করতে পারেননি ঠিক মতো। ভারতের চাংতে গোলপোস্ট অরক্ষিত পান। তার নেয়া শট বাংলাদেশের পোস্টের দিকেই ছিল। কয়েক গজ দূর থেকে হামজা চৌধুরি লাফিয়ে হেড করে নিশ্চিত গোল সেভ করেন।

৪৪ মিনিটে বক্সের সামনে থেকে হামজা খুব দ্রুত বা পায়ে শট নেন। যা অল্পের জন্য পোস্টের পাশ দিয়ে যায়। অস্বস্তি বোধ করায় ডিফেন্ডার তারিক কাজীর পরিবর্তে শাকিল আহাদ তপুকে নামান কোচ ক্যাবরেরা।

৩৫ মিনিটের দিকে বল দখলের লড়াইয়ে বাংলাদেশের ডিফেন্ডার তপু ও ভারতের মিডফিল্ডার বিক্রমের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। এতে অন্য ফুটবলাররা উত্তেজিত হয়ে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে ফিলিপাইনের রেফারি দুই জনকে হলুদ কার্ড দেখান। দ্বিতীয়ার্ধেও দুই দলের ফুটবলারদের মধ্যে উত্তেজনা ছিল। রেফারি একাধিক কার্ড দেখিয়েছেন।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *