■ নাগরিক প্রতিবেদক ■
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী মো. কবিরকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। তিনি ঘটনার কয়েক দিন আগে ফয়সালের সঙ্গে বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী সোমবার রাতে গণমাধ্যমে বলেন, আগের দিন রাতে নারায়গঞ্জ থেকে কবিরকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার তাকে পল্টন থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হচ্ছে।
র্যাবের দেওয়া তথ্য মতে, কবিরের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার সদর থানার বড় বিঘাই গ্রামে। ফয়সাল করিমের গ্রামের বাড়িও পটুয়াখালীতে।
র্যাব কর্মকর্তা ইন্তেখাব চৌধুরী গণমাধ্যমে বলেছেন, কবির গত ৫ ডিসেম্বর ফয়সাল করিমের সঙ্গে বাংলামোটরে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার গিয়েছিলেন। প্রথমে তিনি স্বীকার করেননি। কিন্তু সিসি ক্যামেরার ফুটেজে তাকে দেখা গেছে। ওই ফুটেজ দেখানোর পর কবির স্বীকার করেছেন ফয়সাল করিম ও তিনি সেদিন ওই প্রতিষ্ঠান দেখে আসতে সেখানে গিয়েছিলেন।
হাদিকে গুলির ঘটনায় এ পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেফতারের তথ্য দিয়েছে পুলিশ; যাদের মধ্যে চারজনকে রিমান্ডে পেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
এর হাদিকে গুলির সময় যে মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়েছিল সেটির মালিক আব্দুল হান্নানকে প্রথম আটক করে র্যাব। পরে তাকে পুলিশে হস্তান্তরের পর ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
পরে হত্যাচেষ্টার মামলায় সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ শিপু ও ঘনিষ্ঠ বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমাকে গ্রেফতার করে র্যাব।
হাদিকে গুলির ঘটনায় সীমান্ত এলাকা থেকে মানুষ পারাপারকারী ফিলিপ স্নালের দুই সহযোগীকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শেরপুরের নালিতাবাড়ী সীমান্ত এলাকা থেকে তাঁদের আটক করা হয়।
সোমবার সন্ধ্যায় বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
শরীফুল ইসলাম বলেন, ওসমান হাদির ওপর গুলির ঘটনায় সীমান্তে সতর্ক বিজিবি। এর ধারাবাহিকতায় আজ বিকেলে বিজিবির ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়নের (৩৯ বিজিবি) বারোমারি বিওপির টহল দল দায়িত্বপূর্ণ এলাকা থেকে অবৈধভাবে মানুষ পারাপারে সহায়তাকারী ফিলিপের মামাশ্বশুর বেঞ্জামিন চিড়ান (৪৫) ও ফিলিপের ঘনিষ্ঠ বন্ধু সীশলকে (২৮) আটক করতে সক্ষম হয়।
এর আগে ফিলিপের স্ত্রী ডেলটা চিড়ান, শ্বশুর ইয়ারসন রংডি ও আরেক সহযোগী লুইস লেংমিঞ্জাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে বিজিবি।
গত ১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) জুমার নামাজের পর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোড এলাকায় হামলার শিকার হন শরীফ ওসমান হাদি। মোটরসাইকেলে করে আসা দুই আততায়ীর একজন চলন্ত রিকশায় থাকা হাদির মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সর্বশেষ আজ তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়া হচ্ছে।
চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, তার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে বেশ সংকটাপন্ন।
