■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
গুম হওয়া ব্যক্তি অন্যূন ৫ বছর ধরে গুম থাকলে এবং জীবিত ফিরে না আসলে ট্রাইব্যুনাল তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ডিসাপিয়ার্ড’ বা ‘গুম’ ঘোষণা করতে পারবে।
বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
সরকার ‘গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইবুনাল’ এর জন্য মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগ দিতে পারবে।
ভুক্তভোগী বা অভিযোগকারীও ব্যক্তিগত উদ্যোগে ট্রাইব্যুনাল আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবেন এবং গুম ব্যক্তির স্ত্রী বা তার ওপর নির্ভরশীল পরিবারের কোনো সদস্য কমিশনের পুর্বানুমতি ছাড়াই গুম ব্যক্তির সম্পত্তি ব্যবহার করতে পারবে বলে অধ্যাদেশে উল্লেখ আছে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ হাওড় ও জলাভূমি সংরক্ষণ অধ্যাদেশ ২০২৫ এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
এ অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাংলাদেশে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব, কর্তৃত্ব ও অধিক্ষেত্র সুস্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হবে।
হাওর ও জলাভূমি এলাকার জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ, প্রতিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণের লক্ষ্যে সুরক্ষা অধ্যাদেশ জারির বিধান রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, হাওর ও জলাভূমি এলাকার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংরক্ষিত হাওর ও জলাভূমি এলাকা ঘোষণা করার বিধানও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এছাড়াও, হাওর ও জলাভূমি এলাকায় নিষিদ্ধ কার্যক্রমের বিবরণ, নিষিদ্ধ কার্যক্রম সংঘটিত হলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা এবং অপরাধের জন্য দণ্ডের বিধান করা হয়েছে।
হাওর ও জলাভূমি এলাকায় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নির্ধারিত ব্যতিক্রম সাপেক্ষে অধিদপ্তরের মতামত নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে অধ্যাদেশে।
পাশাপাশি, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অন্যান্য কর্তৃপক্ষ, দপ্তর বা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়, স্থানীয় অংশীজনদের সম্পৃক্ততা এবং সংরক্ষণ কার্যক্রমে তাদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে বিধি, প্রবিধান ও নির্দেশিকা প্রণয়নের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সুইজারল্যান্ডের রাজধানী বার্নে বাংলাদেশের নতুন একটি দূতাবাস স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকেই সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন রয়েছে।
বার্নে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেরই দূতাবাস থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের দূতাবাস না থাকায় জেনেভার পামার্নেন্ট মিশনেই এতদিন ধরে জাতিসংঘ ও দূতাবাসের কাজ করা হচ্ছিল। এ অবস্থায় বার্নে বাংলাদেশ দূতাবাস স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে দূতাবাসে একজন রাষ্ট্রদূত, ফার্স্ট সেক্রেটারি, কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে কার্যক্রম শুরু হবে।
এ পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের ৮২টি মিশন অফিস আছে।
আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। তার বিষয়ে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান নিয়মিতভাবে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, খোঁজখবর জানাচ্ছেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গতকাল সিঙ্গাপুর পৌঁছেছেন। তিনি সরাসরি হাদির চিকিৎসার দেখাশোনা করছেন।
এছাড়া, এবছর মহান বিজয় দিবস সুন্দর ও সুচারুভাবে উদযাপনের জন্য মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।