■ সিলেট প্রতিনিধি ■
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার উত্তর রণিখাই ইউনিয়নের দমদমা সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- উপজেলার দমদমা সীমান্তের পূর্ব তুরুং গ্রামের মো. বোরহানের ছেলে আশিকুর (২২) ও একই গ্রামের বরমসিদ্ধিপুর গ্রামের মো. আজমান আলীর ছেলে মো. ইয়াকুব উদ্দিন (৩০)।
সিলেট ব্যাটালিয়ন (৪৮ বিজিবি) সূত্রে জানা যায়, দমদমা এলাকার সীমান্ত পিলার নম্বর ১২৬০/৪-এস-সংলগ্ন দিয়ে সুপারি সংগ্রহের উদ্দেশে সীমান্তে যান আশিকুরসহ কয়েকজন। এ সময় ভারতীয় খাসিয়ারা গুলি চালালে আশিকুর গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে তার সঙ্গে থাকা ব্যক্তিরা মরদেহটি বাংলাদেশে এনে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান।
একই সময়ে ভারতের দমদমা সীমান্ত-সংলগ্ন রাদনে এলাকায় খাসিয়ার গুলিতে ইয়াকুব গুরুতর আহত হন। তার সঙ্গীরা তাকে উদ্ধার করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আশিকুর রহমানসহ কয়েকজন দমদমিয়া সীমান্ত পিলার ১২৬০/৪–এস এলাকা দিয়ে ভারত সীমান্তে প্রবেশ করেন। দুপুর ১২টার দিকে ভারতের ভেতরে রাজন টিলা এলাকায় পৌঁছালে ভারতের খাসিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই আশিকুর রহমান নিহত হন। পরে তাঁর লাশ উদ্ধার করে স্বজনেরা বাংলাদেশের ভেতরে বাড়িতে নিয়ে আসেন। একই সময় ইয়াকুব উদ্দিন বরম সিদ্ধিপুর সীমান্ত পিলার ১২৫৫ এলাকা দিয়ে ভারতে ঢুকলে খাসিয়াদের হামলায় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে বাংলাদেশে এনে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বিকেলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পক্ষ থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোম্পানীগঞ্জের দমদমিয়া এলাকার সীমান্ত পিলার নম্বর ১২৬০/৪–এসের কাছ দিয়ে কয়েকজন বাংলাদেশি ভারতের অভ্যন্তরে রাজন টিলা এলাকায় প্রবেশ করেন। এ সময় সেখানে অবস্থানরত স্থানীয় ভারতীয় বাগানমালিক (খাসিয়া) তাঁদের লক্ষ্য করে ছররা গুলি ছুড়লে গুলিবিদ্ধ হয়ে আশিকুর রহমান ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে তাঁর সঙ্গে থাকা অন্য ব্যক্তিরা লাশ বাংলাদেশে নিজ বাড়ি নিয়ে আসেন।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম খান বলেন, নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
এর আগে গত ২২ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্তে ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে জামাল উদ্দিন (৪৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হন। উপজেলার লোভাছড়া সীমান্ত এলাকা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। অন্যদিকে গত ২৬ অক্টোবর কানাইঘাটের দনা সীমান্তে শাকিল আহমদ (২৩) নামের আরেক তরুণ নিহত হন। পরে তাঁর লাশ হস্তান্তর করে বিএসএফ। এর আগে চলতি বছরের ২৫ মার্চ কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর খাসিয়াদের হামলায় শাহেদ মিয়া (২৫) নামের আরেক বাংলাদেশি তরুণ নিহত হন। এ ছাড়া ২০ মার্চ গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দি সীমান্তে খাসিয়াদের গুলিতে দুই বাংলাদেশি আহত হয়েছিলেন।
