দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ

■ নাগরিক নিউজ ডেস্ক ■

ময়মনসিংহে পোশাক শ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসকে হত্যার প্রতিবাদে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ করেছে ‘বিশ্ব হিন্দু পরিষদ'(ভিএইচপি)। বিক্ষোভকারীদের কয়েকজন পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে সংঘর্ষে জড়ায়।

হিন্দুত্ববাদী দলগুলো হাতে লাঠি ও গেরুয়া রঙের পতাকা নিয়ে হাইকমিশন অভিমুখে আসে। তখন তাদের আটকে দেয় পুলিশ ।

দুপুর ২টার দিকে বিক্ষোভকারীদের আটকে দেয় পুলিশ। এ সময় তারা ব্যারিকেড ভেঙে হাই-সিকিউরিটি জোনে থাকা বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের দিকে আসতে চায়। পুলিশ এতে বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। ওই সময় এলাকাটি পরিষ্কার করতে পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ করে।

আজ বিক্ষোভের ডাক দেয় হিন্দুত্ববাদী বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, এবিভিপি, হিন্দু জাগরণ মঞ্চ।

কয়েকশ বিক্ষোভকারীকে বাধা দিতে ব্যারিকেড তৈরি করে পুলিশ। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা এক পর্যায়ে ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে। পরে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়।  

পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেছেন, “বিক্ষোভ মিছিল বেকবাগান এলাকায় পৌঁছায়। কিন্তু উপ-হাইকমিশনের গেইটে পৌঁছানোর আগে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। এটি অত্যন্ত হাই সিকিউরিটি জোন।”

বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের একটি স্মারকলিপি দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাদের আটকে দেয়। ওই সময় সংঘর্ষ শুরু হলে তাদের সরিয়ে দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হন।

এরপর বেশ কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ ভ্যানে তোলা হয়। তাদের ছাড়াতে অনেকে ভ্যানের ওপর ওঠে বসেন।

এমন ঘোলাটে পরিস্থিতির মধ্যে সেখানে আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপির নেতারা। তারা হিন্দুত্ববাদী দলগুলোকে সমর্থন দেওয়ার ঘোষণা দেন।

মঙ্গলবার ভিএইচপি এই কর্মসূচির ডাক দিলে হাইকমিশনের সামনে নিরাপত্তা জোরদার করেছিল দিল্লি পুলিশ। এলাকাটিতে তিন স্তরের ব্যারিকেড বসিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়। 

কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা সত্ত্বেও একাধিক বিক্ষোভকারীকে ব্যারিকেড ভেঙে কূটনৈতিক স্থাপনার দিকে এগোতে দেখা যায়। তারা অন্তত দুই স্তরের ব্যারিকেড ভাঙে। এ সময় অনেককে ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিতে দেখা যায়।

এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন ও শিলিগুড়িতে ভিসা সেন্টারের সামনে বিক্ষোভ করে বেশ কয়েকটি সংগঠন। এর পরিপ্রেক্ষিতে শিলিগুড়ি ও আগরতলায় ভিসা সেন্টার সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একইদিন ভিসা সেবা সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করে দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের ফটকে নোটিশ টানানো হয়।

কলকাতায় সোমবার বিক্ষোভ হয় তিন দফায়। এর একটিতে বিজেপি এবং পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে জড়ো হন ‘হিন্দু সনাতনীরা’। পুলিশ বাধা দিলে তারা ধস্তাধস্তিতে জড়ান। আর শিলিগুড়িতে ভিসা সেন্টারের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশের পতাকা সম্মিলিত ফ্লেক্স টেনে ছিঁড়ে ফেলেন। এরপর সেই ফ্লেক্স ও প্রধান উপদেষ্টার কুশপুত্তলিকায় আগুন দেন। কয়েকজন পুলিশের সঙ্গে ভেতরে গিয়ে ভিসা সেন্টার বন্ধ রাখার হুমকি দেন দায়িত্বরত কর্মীদের।

মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, নয়াদিল্লি, কলকাতাসহ বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ মিশনে উদ্ভূত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রণয় ভার্মাকে তলব করা হয়। নিরাপত্তা নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রতিবাদ জানানো হয় প্রণয় ভার্মার কাছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করার কথা বলা হয়।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *