:: নাগরিক ক্রীড়া প্রতিবেদক ::
রিয়াল মাদ্রিদের ফরাসি তারকা করিম বেনজেমার জিতলেন এবারের ব্যালন ডি’অর। দুই যুগ পর ব্যালন ডি’অর জিতলেন ফ্রান্সের কোনো ফুটবলার। বেনজেমার আগে সবশেষ ১৯৯৮ সালে জিতেছিলেন জিনেদিন জিদান।
সোমবার রাতে ফ্রান্সের প্যারিসে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বেনজেমার হাতে তুলে দেয়া হয় ফরাসি সাময়িকী ‘ফ্রান্স ফুটবল’ –এর পুরস্কার, ব্যালন ডি’অর ২০২২। ফরাসি ফুটবলার হিসেবে ১৯৯৮ সালে জিনেদিন জিদান পরেছিলেন এই মুকুট। দ্বিতীয় ফরাসি হিসেবে এবার তা পরলেন বেনজেমা।
ব্যক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের বর্ষসেরার এই ট্রফি জেতার প্রতিক্রিয়ায় বেনজেমা মনে করিয়ে দিয়েছেন সেই চড়াই-উতরাই পেরোনো দিনগুলোর কথা, ‘যখন আমি ফ্রান্স দলে ছিলাম না, সে সময়টা কঠিন ছিল। কিন্তু আমি কখনো হাল ছাড়িনি। কঠোর পরিশ্রম করেছি এবং এবং খেলাটা উপভোগ করেছি। আমার পথচলা নিয়ে আমি গর্বিত। আমার ও আমার পরিবারের জন্য পথটা সহজ ছিল না।’
গত মৌসুমে দুর্দান্ত কাটিয়ে যোগ্য দাবিদার হিসেবেই এবারের ব্যালন ডি’অর জিতেছেন তিনি। রিয়ালের রূপকথার সব প্রত্যাবর্তনে ফরাসি এই ফরোয়ার্ডেরই অবদান বেশী। ছন্দময় ফুটবল খেলে লস ব্লাঙ্কোসদের এনে দিয়েছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও লা লিগা শিরোপা।
২০২১-২২ মৌসুমে ৪৬ ম্যাচে ৪৪টি গোল করেন বেনজেমা। যেখানে চ্যাম্পিয়ন্স লিগেই করেছেন ১৫টি গোল। করেছেন দুইটি হ্যাটট্রিকও। প্রথম হ্যাটট্রিক করেন শেষ ষোলোয় পিএসজির বিপক্ষে। এই হ্যাটট্রিকেই রিয়ালকে শেষ আটে তোলেন তিনি। দ্বিতীয়টি করেন স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে চেলসির বিপক্ষে। দলকে জেতান ৩-১ ব্যবধানে। ফিরতি লেগেও ক্লাবটির জালে জড়িয়েছেন এক গোল।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি ফাইনালে গোল করে আলো ছড়ান বেনজেমা। দুই লেগ মিলিয়ে তিন গোল করেন তিনি। ইতিহাদেই করেন দুই গোল। ফিরতি লেগে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে এক গোল করে দলকে তোলে ফাইনালে। জেতান ১৪তম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা।
জাতীয় দলের জার্সিতে সাড়ে পাঁচ বছর পর মাঠে নামেন তিনি। সেখানেও আলো ছড়ান বেনজেমা। উয়েফা নেশন্স লিগে দলকে শিরোপা জেতানোর পেছনে রাখেন বড় অবদান। জায়গা করে নেন দিদিয়ের দেশমের বিশ্বকাপ দলেও। ঝলমলে এই পারফরম্যান্সের দরুণ তিনি জেতেন উয়েফার বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার।
এবার ব্যালন ডি’অরও নিজের করে নেন বেনজেমা। ৩০ জন প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে অবশেষে শ্রেষ্ঠ ফুটবলারের তকমা পান ফরাসি এই তারকা। এখনও ছুটছেন তিনি। খুব শিগগিরই রিয়ালের হয়ে আরও এক বছর চুক্তি নবায়ন করার অফার পাবেন।
৩৪ বছর বয়সে এসে প্রথম ব্যালন ডি’অর জিতেছেন বেনজেমা। ১৯৫৬ সালে স্ট্যানলি ম্যাথিউসের পর বেশি বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে ব্যালন ডি’অর জিতেছেন এই ফরাসি স্ট্রাইকার। ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বয়সে নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করা এই ফুটবলারের কাছে বয়স শুধুই একটা সংখ্যা, ‘বয়স আমার কাছে স্রেফ একটা সংখ্যা। এখন অনেকে পড়ন্ত বয়সেও খেলে যাচ্ছে আর আমার মধ্যে এখনো নিজের সেরাটা দেওয়ার মনোভাব আছে। এই ইচ্ছাশক্তিই আমাকে এগিয়ে নিয়েছে এবং কখনো হাল ছাড়তে দেয়নি।’