:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
নেপালের পোখারা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৭২ আরোহী নিয়ে রোববার সকালে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত উড়োজাহাজের ৬৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গত ৩০ বছরে উড়োজাহাজ বিপর্যয়ে হিমালয়ের দেশটিতে এখন পর্যন্ত কয়েক শ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।
নেপালে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, এখাতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাব, নিরাপত্তার ঘাটতি এবং দেশটিতে বড় বড় পাহাড়। এছাড়াও দেশটিতে বিশ্বের সবচেয়ে জটিল রানওয়ে রয়েছে, বিশেষ করে রানওয়ে উঁচু উঁচু পাহাড় ঘেঁষে হওয়ায় দক্ষ পাইলটদেরও নিরাপদে অবতরণকে চ্যালেঞ্জ করে তোলে। যার ফলে প্রায়ই এমন দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয় দেশটি।
গত ৩০ বছরে নেপালে ২৭ বিমান দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি
২০২২ সালের ২৯ মে নেপালের তারা এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ দেশটির পোখারা থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ওই দুর্ঘটনায় ২২ জন আরোহী মারা যায়। ২২ আরোহীর মধ্যে ১৬ জন নেপালের, ৪ জন ভারতের ও ২ জন জার্মানির নাগরিক ছিলেন।
২০১৯ সালের ১৪ এপ্রিল একটি ছোট উড়োজাহাজ মাউন্ট এভারেস্টের কাছে উড্ডয়নের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে যায়, দুটি হেলিকপ্টারকে আঘাত করে এবং তিনজন নিহত হয়। এছাড়া আহত হয়েছেন তিনজন।
২০১৮ সালের ১২ মার্চে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ৫১ জন আরোহী নিহত হন। যা দেশটির এক যুগের মধ্যে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা বলে বিবেচনা করা হয়।
২০১৬ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি নেপালের তারা কোম্পানির উড়োজাহাজ ২৩ জন আরোহী নিয়ে অবতরণের সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে সকল আরোহীর মৃত্যু হয়।
২০১৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি নেপালের আরঘাখাঞ্চি জেলায় নেপাল এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট বিধ্বস্ত হলে ১৮ জন নিহত হয়, উদ্ধারকারীরা পাহাড়ি গ্রামাঞ্চলে নিহতদের দেহের অংশ এবং উড়োজাহাজের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায়।
২০১২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বরে সীতা নামের একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়। ওই বিমানটিতে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি ভিত্তিতে অবতরণ করতে গেলে বিধ্বস্তের ঘটনা ঘটে। এতে ১৯ জন যাত্রী নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে সাতজন ব্রিটিশ এবং পাঁচজন চীনা নাগরিক ছিলেন।
একই বছর ২০১২ সালের ১৪ মার্চ পোখারা থেকে জমসন বিমানবন্দরে যাওয়ার সময় জমসন বিমানবন্দরে অগ্নি নামে একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়। এতে ১৫ জন যাত্রী নিহত হয়। তবে ওই ঘটনায় ভাগ্যক্রমে ৬ জন বেঁচে যান।
২০১১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মাউন্ট এভারেস্ট পরিদর্শনে যাওয়ার সময় পর্যটকবাহী একটি ছোট উড়োজাহাজ কাঠমান্ডুর কাছে পাহাড়ে বিধ্বস্ত হয়, এতে ১৯ জনের সবাই মারা যায়।
২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর ভুটানের তীর্থযাত্রী নিয়ে পূর্ব নেপালে একটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়। এতে ক্রু সহ ২২ জন আরোহী নিহত হয়। নিহতদের বেশিরভাগই ভুটানের তীর্থযাত্রী, নিহতদের মধ্যে একজন মার্কিন নাগরিকও ছিলেন।
২০১০ সালের ২৪ আগস্ট বৈরি আবহাওয়ার কারণে কাঠমান্ডুর কাছে অগ্নি এয়ারের একটি ছোট উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়।উড়োজাহাজটিতে মোট ১৪ জন আরোহী ছিলেন। ওই দুর্ঘটনায় প্রত্যেকে নিহত হন। আরোহীদের মধ্যে ৪ মার্কিন নাগরিকসহ, একজন জাপানি এবং একজন ব্রিটিশ নাগরিক ছিলেন।
১৯৯২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর কাঠমান্ডুতে যাওয়ার সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হলে ১৬৭ আরোহীর সবাই নিহত হন। ১৯৯২ সালের এই দুর্ঘটনাকে সবচেয়ে ভয়াবহ বলে মনে করা হয়।